ঢাকায় নতুন ওএমএস ডিলার নিয়োগ ব্যাহত করতে ফ্যাসিবাদী সময়ের সুবিধাভোগিদের অপতৎপরতা

ঢাকা মহানগরীতে নতুন ওএমএস (ওপেন মার্কেট সেল) ডিলার নিয়োগ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের নেওয়া স্বচ্ছ ও উন্মুক্ত লটারিভিত্তিক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বাতিল করার চেষ্টা করছে পূর্বের ফ্যাসিবাদ সময়ের সুবিধাভোগী ডিলারদের একটি অংশ।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক বিবেচনায় ও নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সারা দেশে ওএমএস ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। গত ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ওই নিয়োগ বাতিল করে নতুনভাবে ডিলার নিয়োগের উদ্যোগ নেয়।
আরও পড়ুন: ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা
বাতিল হওয়া ডিলারদের একটি অংশ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। আদালত ছয় মাসের জন্য নিয়োগ বাতিলের আদেশ স্থগিত রাখে। ওই স্থগিতাদেশের মেয়াদ ৩০ জুন শেষ হলে খাদ্য বিভাগ নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে যোগ্য আবেদনকারীদের উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে ডিলার নির্বাচন করা হয়। কিন্তু অনুষ্ঠানে বাতিল হওয়া ও অযোগ্য ডিলারদের একটি অংশ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নতুন আবেদনকারীদের প্রতিরোধে শেষ পর্যন্ত স্বচ্ছ ও উন্মুক্তভাবে লটারি সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুন: বিচারকদেরও জবাবদিহিতা থাকা উচিত: ট্রাইব্যুনালের অভিমত
তবে পরবর্তীতে সেই একই গোষ্ঠী নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে পুনরায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং নিয়োগ কমিটির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে নতুনভাবে নির্বাচিত আবেদনকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
ওএমএস কর্মসূচি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ জনকল্যাণমূলক উদ্যোগ, যার মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষ ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য কিনতে পারেন। নিয়োগ প্রক্রিয়া ব্যাহত হলে এ কর্মসূচি স্থবির হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নতুন নির্বাচিত একাধিক আবেদনকারী বলেন, “আমরা বৈধভাবে আবেদন করেছি, লটারিতে নির্বাচিত হয়েছি। এখন পুরোনো ডিলারদের মামলা ও চাপের কারণে নিয়োগ বিলম্বিত হলে সাধারণ মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
তারা আশা প্রকাশ করেন, সরকার দ্রুত লটারিতে নির্বাচিতদের নিয়োগ চূড়ান্ত করবে এবং ফ্যাসিবাদ সময়ের ডিলারদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে ঢাকায় ওএমএস কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখবে, যাতে খেটে খাওয়া মানুষ ন্যায্যমূল্যে খাদ্যপণ্য পেতে পারেন।