অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স মোকাবিলায় বিএমইউতে বিশ্ব সচেতনতা সপ্তাহের কার্যক্রম শুরু
‘এখনই পদক্ষেপ নিন, আমাদের বর্তমানকে রক্ষা করুন, আমাদের ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত করুন’ এই স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ (১৮-২৪ নভেম্বর) ২০২৫ এর উদ্বোধন হয়েছে।
অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স-এর ক্রমবর্ধমান হুমকি সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা, এ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহারের কুফল সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করা, দায়িত্বশীলভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার, সংক্রমণ প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম এবং স্বাস্থ্যসেবার ভবিষ্যৎ রক্ষায় কমিউনিটির সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে সাতজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৭
বিএমইউর মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগের উদ্যোগে এবং পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগ, শিশু বিভাগ, ফার্মাকোলজি বিভাগ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহযোগিতায় র্যালি, সংক্ষিপ্ত সমাবেশ, ডাক্তার ও রোগীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ এবং সচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএমইউর মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম।
রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবু নাসের ইবনে সাত্তার। বক্তব্য রাখেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলাদার, শিশু বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. মোঃ আতিয়ার রহমান, ডিন অধ্যাপক ডা. এম আবু হেনা চৌধুরী এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডা. মুরাদ সুলতান।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ১ মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ৬৩৩
প্রধান অতিথি অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম র্যালি এবং সমাবেশ শেষে সি ব্লকে ডাক্তারদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেন এবং চর্মরোগ বিদ্যা বিভাগের ক্লাসরুমে চিকিৎসক ও ছাত্রদের সঙ্গে সচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি বলেন, “মানবদেহে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের সমস্যা ছড়িয়ে পড়েছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের কারণে মৃত্যুর ঝুঁকিতে পড়বে। চিকিৎসক ও রোগী উভয়কেই সচেতন হতে হবে। ফার্মিসি থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই এন্টিবায়োটিক বিক্রি করা যাবে না।”
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, “এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের কারণে পূর্বের ন্যায় এন্টিবায়োটিক কার্যকর হচ্ছে না। পোল্ট্রি ও গবাদিপশুর মধ্যেও মানুষ এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের শিকার হচ্ছে। সঠিক মাত্রা এবং নির্ধারিত সময়ে ব্যবহারের নিয়ম মানা হচ্ছে না। সাধারণ জ্বর হলেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যায় না।”
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, “অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহারের কারণে চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রোগীর ফুসফুস, কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি হচ্ছে। এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সের কারণে আইসিইউতে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটছে।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডা. মুরাদ সুলতান বলেন, “সংক্রমণ প্রতিরোধে হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার এবং সচেতনভাবে এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।”
উক্ত অনুষ্ঠানে সহযোগিতায় ছিলেন মাইক্রোবায়োলজি ও ইমিউনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সানজিদা সেতু, পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. ফারজানা ইসলাম রুপা, শিশু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জেসমিন মোর্সেদ এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ডা. মুরাদ সুলতান।





