বিদ্যুতের দাম বাড়ল ৫ শতাংশ, আজ থেকে কার্যকর

নির্বাহী আদেশে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার জারি করা প্রজ্ঞাপনে গ্রাহক পর্যায়ে ৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তা কার্যকর হচ্ছে আজ বুধবার থেকে।
গ্রাহক পর্যায়ে আবারও বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর আগে সবশেষ ২৯ জানুয়ারি ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। এবারও একই পরিমাণ দাম বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এর ফলে ইউনিট প্রতি গড়ে ৩৯ পয়সা করে বাড়ল বিদ্যুতের দাম। ফেব্রুয়ারি মাসের বিদ্যুতের বিল গ্রাহকদের মার্চ মাসে এই বাড়তি দামে পরিশোধ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সেনানিবাসের বাড়ি সাবজেল ঘোষণা প্রসঙ্গে ঢিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম
মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। বিদ্যুতের বাড়তি এই দাম আজ বুধবার থেকেই কার্যকর হচ্ছে।
এ নিয়ে গত ১২ বছরে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ১২ বার। এতে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ১১৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। গত জানুয়ারিতে দু’দফায় গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ে। প্রথম দফায় ১২ জানুয়ারি ও দ্বিতীয় দফায় ২৯ জানুয়ারি দাম বাড়ানো হয়।
আরও পড়ুন: সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে আহত বিজিবি সদস্যকে ঢাকা সিএমএইচে স্থানান্তর
সরকারের নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের এই দাম বাড়ানো হয়েছে। আগে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর গণশুনানি শেষে দাম বাড়ানোর আদেশ দিত। ১২ জানুয়ারি থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম বাড়ছে।
মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর গত বছরের ১ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২২’ জারি হয়। এ অধ্যাদেশ অনুযায়ী বিশেষ ক্ষেত্রে বিইআরসির পাশাপাশি ভোক্তা পর্যায়ে জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ ও সমন্বয় করতে পারবে সরকার।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুতের দাম সব পর্যায়ে বাড়ানো হয়। তখন পাইকারিতে দাম ৮ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধির পাশাপাশি সাধারণ গ্রাহক পর্যায়ে (খুচরা) বাড়ানো হয় ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। তাতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বেড়ে দাঁড়ায় গড়ে ৩৬ পয়সা বেড়ে ৭ টাকা ১৩ পয়সা।
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ মঙ্গলবার রাতে বলেন, ‘দেশের সব পাইকারি বিদ্যুৎ কেনে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। সেটি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোর কাছে কম দামে সরবরাহ করা হয়। এতে ৪০ হাজার কোটি টাকা লোকসানের মুখে রয়েছে পিডিবি। সরকার বড় আকারে ভর্তুকি দিচ্ছে। পিডিবি যতটা লোকসান দিচ্ছে সে তুলনায় গ্রাহক পর্যায়ে সামান্যই দাম বেড়েছে।’
খাতওয়ারি দাম বৃদ্ধি
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শূন্য থেকে ৫০ ইউনিট ব্যবহারকারী লাইফলাইন গ্রাহকদের বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৪ টাকা ১৪ পয়সা বেড়ে ৪ দশমিক ৩৫ টাকা, শূন্য থেকে ৭৫ ইউনিট ব্যবহারকারীর বিদ্যুতের ৪ টাকা ৬২ পয়সা থেকে বেড়ে ৪ দশমিক ৮৫ টাকা এবং ৭৬ থেকে ২০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের বিদ্যুতের দাম ৬ টাকা ৩১ পয়সা থেকে ৬ দশমিক ৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
সে সঙ্গে ২০১ থেকে ৩০০ ইউনিট ব্যবহারকারীদের ৬ টাকা ৬২ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৯৫ টাকা, ৩০১ থেকে ৪০০ ইউনিটের জন্য ৬ টাকা ৯৯ পয়সা বেড়ে ৭ দশমিক ৩৪ টাকা, ৪০১ থেকে ৬০০ ইউনিটের জন্য ১০ টাকা ৯৬ পয়সা থেকে বেড়ে ১১ দশমিক ৫১ টাকা এবং ৬০০ ইউনিটের উপরে বিদ্যুৎ ব্যবহারকারী আবাসিক গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল ১২ টাকা ৬৩ পয়সা থেকে বেড়ে ১৩ দশমিক ২৬ টাকা করা হয়েছে।
আবাসিক গ্রাহক ছাড়াও বেড়েছে সব ধরনের বিদ্যুতের দাম। এর মধ্যে কৃষি, ধর্মীয়, দাতব্য, হাসপাতাল, রাস্তার বাতি, পানির পাম্প, ক্ষুদ্র শিল্প, শিল্প, বাণিজ্য, ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন রয়েছে।