এলজিইডিতে লাগেনি সংস্কারের ছোঁয়া
বহাল তবিয়তে বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রকৌশলীরা

গত ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলেও তার দোসররা দেশের বিভিন্ন দপ্তর এবং অধিদপ্তরে এখনও ব্যাপক সক্রিয়। ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। রাঘব বোয়ালরা কেউ কেউ গ্রেফতার হয়েছেন। অনেকেই গ্রেফতার হওয়ার আশঙ্কায় পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এখনও রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। বাংলাদেশের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে রাস্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কিন্তু এর রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। ভয়াবহ দুর্নীতির কারণে এলজিইডি তার অতীত গৌরব ইতোমধ্যে হারিয়েছে। গত ১৬/১৭ বছর আওয়ামী মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ নামধারী ক্যাডার প্রকৌশলীরা বদলী ও কমিশন বাণিজ্যের মাধ্যমে শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। হাসিনা সরকারের পতনের পর তারা এখন রয়েছেন মারাত্মক বিপাকে। বৈষম্যবিরোধী কর্মকর্তা, কর্মচারী ও প্রকৌশলীরা এখন মারমুখী। কিন্তু আওয়ামী পন্থীদের আস্ফালন এখনও কমেনি। এলজিইডিতে এখনও লাগেনি সংস্কারের ছোঁয়া। বহাল তবিয়তে আছেন বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রকৌশলীরা। বিগত সময়ের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রকৌশলীরা ছাত্র জনতার বিজয়কে নস্যাৎ করতে বৈষম্যের নামে কর্মচারীদের লেলিয়ে দিচ্ছে অন্যকে ঘায়েল করতে। এতে অশান্ত হয়ে উঠেছে এলজিইডি। সূত্র জানায়, কয়েক দিন আগে আওয়ামীপন্থী প্রকৌশলীরা সম্প্রতি একটি গোপন বৈঠক করেছেন। সেখানে তারা মোটা অঙ্কের একটি ফাণ্ড সংগ্রহ করেছেন। এর নেতৃত্ব দিয়েছেন ছাত্রলীগ ক্যাডার বর্তমান বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী ফিরোজ আলম তালুকদার। তিনি ঢাকা জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে রয়েছেন। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনে তার অবাধ যাতায়াত ছিল। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্তা ব্যক্তিরাও ফিরোজ আলম তালুকদারকে সমীহ করে চলতেন। চাকরি জীবনে তিনি সাবেক দুর্নীতিবাজ প্রধান প্রকৌশলী ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা ওয়াহিদুর রহমানের স্টাফ অফিসার ছিলেন। এছাড়াও তিনি যতদিন ধরে চাকরি করছেন ক্ষমতার দাপটে তিনি ঢাকায় থেকে পুরোটা সময় চাকরি করে যাচ্ছেন। তার দাপটে স্বয়ং বর্তমান প্রধান প্রকৌশলীসহ প্রকৌশলীরা তটস্থ। বেপরোয়া আচরণ, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতামূলক কর্মকাণ্ডে অধীনস্থরা ক্ষুব্ধ হলেও ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতেন না। এখন সবাই মুখ খুলছেন। প্রতিবাদ করছেন। ফিরোজ আলম তালুকদারের নানা অনৈতিক কার্যকলাপের নালিশ জানাতে অনেকেই সরব হয়েছেন। কেউ কেউ গণমাধ্যমের দ্বারস্থও হচ্ছেন। তাকে অপসারণের দাবিতে ইতিমধ্যে কর্মচারীরা মানববন্ধনও করেছেন। অপর একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি এই চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী ফিরোজ আলম তালুকদারের নেতৃত্বে যে গোপন বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়, সেখানে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশল পরিষদ এলজিইডি শাখার অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ লাখ টাকার একটি ফাণ্ডও তারা সংগ্রহ করেন। উপস্থিত প্রকৌশলীগণের মধ্যে আমিনুর রশীদ চৌধুরী, প্রকল্প পরিচালক ফজলে হাবিব, প্রকল্প পরিচালক মামুনুর রশীদ, সহকারী প্রকৌশলী শরীফ শেখ, সহকারী প্রকৌশলী আতাউর রহমান প্রমুখ।