হাসিনা–আসাদের রায়কে অস্বচ্ছ ও অন্যায্য বলল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, ১৮ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই রায় না সুষ্ঠু, না ন্যায়সংগত—বরং এটি ন্যায়বিচারের মানদণ্ডকে আরও দুর্বল করে।

আন্তর্জাতিক সংগঠনটির মহাসচিব অ্যাগনেস কালামার্ড এক বিবৃতিতে জানান, ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টে ছাত্রনেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের সময় যেসব গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ উঠেছিল, সেগুলোর জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া জরুরি। কিন্তু বর্তমান রায় সেই প্রত্যাশা পূরণ করেনি। তার মতে, বিচার প্রক্রিয়া যেমন হওয়া উচিত ছিল, তা হয়নি, আর মৃত্যুদণ্ড মূলত মানবাধিকার লঙ্ঘনকে আরও গভীর করে—এটি বিশ্বের সবচেয়ে নিষ্ঠুর ও অমানবিক শাস্তির একটি।

আরও পড়ুন: দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ আগামী সপ্তাহে

অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জুলাই-আগস্ট দুই মাসে ১,৪০০-র বেশি মানুষ নিহত হন এবং হাজারো মানুষ আহত হন। নিহতদের পরিবারের ন্যায়বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা প্রয়োজন। অথচ যেই ট্রাইব্যুনালে বিচারটি হয়েছে, সেই আদালত নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতার অভাব ও প্রক্রিয়াগত ত্রুটির অভিযোগ রয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, আসামিদের অনুপস্থিতিতে বিচার দ্রুতগতিতে শেষ করা এবং সময়স্বল্পতার মধ্যে সরকারি আইনজীবীর প্রতিনিধিত্ব—সব মিলিয়ে এই মামলার স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এমনকি যেসব প্রমাণকে ‘বিরোধপূর্ণ’ বলা হয়েছিল, সেগুলো ক্রস-এক্সামিনেশনের সুযোগও দেওয়া হয়নি বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিশ্বনেতাদের উত্থান, পতন ও পরিণতি

অ্যামনেস্টি মন্তব্য করে, এই মামলার মতো উচ্চমাত্রার অভিযোগে এমন বিচার গ্রহণযোগ্য নয়। ভুক্তভোগীরা আরও নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য বিচার পাওয়ার অধিকার রাখে। তাদের মতে, মৃত্যুদণ্ড ছাড়া একটি ন্যায়সংগত প্রক্রিয়াই পারে সত্য উদঘাটন, জবাবদিহি এবং ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে।

বিবৃতির শেষাংশে সংস্থাটি পুনরায় জানায়—অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কোনো পরিস্থিতিতেই মৃত্যুদণ্ড সমর্থন করে না। অপরাধের ধরন বা শাস্তি প্রদানের পদ্ধতি যাই হোক, এই নীতির ক্ষেত্রে তারা কোনো ব্যতিক্রম মানে না।