অবিস্মরণীয় প্রত্যাবর্তন

Rashedul Hoque
রাশেদুল হক
প্রকাশিত: ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, ০৭ মে ২০২৫ | আপডেট: ২:০১ অপরাহ্ন, ০৮ মে ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে চার মাস চিকিৎসা শেষে গতকাল দেশে ফিরেছেন। অনেকটা সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় এয়ার অ্যম্বুলেন্সে করে লন্ডনে গেলেও গতকাল দেশে ফিরে বাসার ভিতরে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে নিজের রুমে প্রবেশ করেন তিনি। বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে লাখ লাখ নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার পথজুড়ে অবস্থান নেয়। কেউ হাতে ফুল, কেউ ব্যানার-প্ল্যাকার্ড, কেউ-বা খালেদা জিয়ার ছবিসংবলিত টি-শার্ট পরে ছিলেন। ‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘খালেদা, জিয়া’, ‘তারেক, রহমান’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ নানা স্লোগান দেন তারা। স্বাগত জানাতে আসা নেতা-কর্মীদের হাতে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ও বিএনপির দলীয় পতাকাও ছিলো। বিএনপির নেতারা বলছেন, বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে যেভাবে নেতা-কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাস্তায় নেমেছেন, তা দলের প্রতি তাদের আস্থার প্রমাণ। গতকাল সকালে বিমানবন্দরে নামার পর নেতাকর্মীদের প্রচণ্ড ভিড় ঠেলে শুভেচ্ছায় সিক্ত হতে হতে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজায়’ পৌঁছাতে বেগম খালেদা জিয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা লেগে যায়। বেগম খালেদা জিয়ার এমন অবিস্মরণীয় প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন মোড় নিবে বলে অনেকে মনে করেন।

এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসনকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর সোয়া ১১টায় বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়ে গুলশানের বাসায় পৌঁছান দুপুর ১টা ২৬ মিনিটে।বিমানবন্দরের ভিআইপি টার্মিনালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু,সেলিমা রহমান ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যডভোকেট রুহুল কবির রিজভীসহ সিনিয়র নেতারা। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে এসেছেন তাঁর দুই পুত্রবধূ—তারেক রহমানের স্ত্রী ডা.জুবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান।

আরও পড়ুন: বেগম খালেদা জিয়ার ৮১ তম জন্মদিন আজ

আরও এসেছেন বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান শাহাবুদ্দিন তালুকদার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা.এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেকসহ ১৪ জন। লন্ডনের স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে খালেদা জিয়াকে নিয়ে হিথ্রো বিমানবন্দর ত্যাগ করে কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। পথে দোহায় যাত্রা বিরতি দিয়ে উড়োজাহাজটি ঢাকায় পৌঁছায় সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে। চিকিৎসার জন্য গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে গিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। লন্ডন ক্লিনিক আর বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় তাঁর কেটেছে চার মাস।

এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বেশ ভালোভাবেই ঠাঁই পেয়েছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে। আল জাজিরা, স্ট্রেইট টাইমস, টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে এসেছে বেগম খালেদা জিয়ার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের খবর।

আরও পড়ুন: আল বদর বাহিনী ধর্মকে বিক্রি করছে, বিএনপি বিশৃঙ্খলাকে প্রশ্রয় দেয় না: আমিনুল হক

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা শিরোনাম করেছে ‘গণতন্ত্রের সংকটপূর্ণ সময়ে দেশে ফিরলেন সাবেক নেতা খালেদা জিয়া’। সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনে চার মাস চিকিৎসার পর ঢাকায় ফিরেছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তার এই প্রত্যাবর্তনে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার চাপ বেড়েছে।’

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ ‘বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রত্যাবর্তন নির্বাচনের চাপ বাড়াচ্ছে’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া শিরোনাম করেছে, ‘যুক্তরাজ্যে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরলেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।’ 

অপরদিকে বেগম খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে সকাল থেকেই বিমানবন্দর এলাকায় নেতাকর্মীদের ঢল নামে। বেগম জিয়া কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফেরায় স্বস্তি প্রকাশ করছেন তারা। দেশে ফিরে আবারও বিএনপির নেতৃত্ব ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ভূমিকা রাখবেন এমনটাই প্রত্যাশা করেন নেতাকর্মীরা।

২০১৮ সালে মিথ্যা মামলায় কারাগারে যাওয়ার পর গত সাত বছরে কোনো জনসমাবেশে সশরীরে অংশ নেননি বিএনপি চেয়ারপারসন। এবার তার দেশে ফেরা ঘিরে কার্যত বড় আকারের জমায়েত ঘটাল বিএনপি, যারা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।

বিএনপি নেত্রী ঢাকায় পৌঁছানোর আগে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিমানবন্দরের সামনে বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে সহজ করবে। আজ দেশের জন্য ও জনগণের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য দিন।

এসময় সড়কের পাশে অবস্থান নেওয়া লাখ লাখ নেতাকর্মী, নারী-পুরুষসহ সর্বস্তরের মানুষ জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানায়। বিএনপি নেত্রী গাড়ি থেকে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন।

বেগম খালেদা জিয়া ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে থেকে গুলশানের বাসায় পৌঁছান সাদা রঙের এসইউভিতে করে। সাধারণত তিনি গাড়ির সামনের আসনে বসেন না, কিন্তু এদিন ব্যতিক্রম দেখা গেল। পেছনের আসনে ছিলেন তার দুই পুত্রবধূ। বেগম খালেদা জিয়ার জন্য গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে ‘ফিরোজা’ আগেই পুরোপুরি প্রস্তুত করার কথা বিএনপির তরফে জানানো হয়েছিল।

ফিরোজায় খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান তার মেজ বোন সেলিমা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার, শামীমের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, ডা.জুবাইদা রহমানের বড় বোন শাহীনা জামান বিন্দু এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া বিএনপি নেত্রীর মেডিকেল বোর্ডের সদস্য এফ এম সিদ্দিক, বিএনপি নেতা লুৎফুজ্জামান বাবর, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ছিলেন সেখানে।


পথে পথে উচ্ছ্বাস

নেত্রীকে বরণ করে নিতে এদিন ভোরের আলো ফোটার পর থেকেই থেকেই ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিমানবন্দর সড়কে জড়ো হতে শুরু করেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী তারা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের খিলক্ষেত, কুর্মিটোলা, বনানী, কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউ, গুলশানে অবস্থান নেন।

তারা পিকআপ কিংবা বাসে করে গান বাজাতে-বাজাতে দলের পতাকা, দেশের পতাকা নিয়ে উপস্থিত হন সড়কে। কেউ-কেউ মাথায় দলের পতাকা লাগিয়ে আসেন। কারো হাতে শোভা পায় দলীয় ব্যানার, ফেস্টুন। কোনো কোনো গ্রুপ আসেন ব্যান্ডপার্টি নিয়ে। বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা উপলক্ষে নেতাকর্মীদের ভিড় সামলাতে ঢাকা মহানগর পুলিশও বিমানবন্দর সড়কে যানচলাচল নিয়ন্ত্রণ করার কথা জানায়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচলের সুযোগ রাখা হয়। ঢাকা সেনানিবাসের রাস্তায় হালকা যানবাহন চলাচলের সুযোগও থাকে।

জনসাধারণকে এদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গুলশান-বনানী থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়ক যথাসম্ভব পরিহার করে বিকল্প রাস্তায় চলাচলের অনুরোধ করা হয়।

বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের অবস্থানের ফলে কোনো পূর্ব নির্দেশনা না থাকলেও ‘বাধ্য হয়ে’ বনানী থেকে গুলশানগামী সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়।

ট্রাফিক গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জিয়াউর রহমান জানান, বনানী থেকে গুলশান দুই নম্বর সড়কের মুখে ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেন তারা। গুলশানের দিকে যেতে চাওয়া যানবাহনকে সামনে এগিয়ে বনানী ১১ নম্বর সড়ক ব্যবহার করতে বলেন ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা।

নেতাকর্মীদের অবস্থান ঘিরে সড়কে ও বিমানবন্দর এলাকায় বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য, পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন ও আনসার সদস্যকে অবস্থান নিতে দেখা যায়।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরা ঘিরে ঢাকার সড়কে যানজট হতে পারে–এমন শঙ্কায় বিদেশগামী যাত্রীদের বিমানবন্দরে যেতে হাতে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বের হওয়ার অনুরোধ করে এয়ারলাইন্সগুলো। বিমানবন্দর এলাকায় নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা।

লন্ডনের চার মাস

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় বহরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান।

সেখানে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। টানা ১৭ দিন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ২৫ জানুয়ারি থেকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন। লন্ডনে ছেলের কাছে থাকার মানসিক প্রশান্তিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগের চেয়ে সুস্থবোধ করছেন বলে জানিয়েছিলেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, “ম্যাডাম মোটামুটি আগের চেয়ে অনেকটা সুস্থ বোধ করছেন। মানসিক প্রশান্তি উনার শারীরিক সুস্থতার পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে।”

চিকিৎসা নিয়ে দেশে ফেরার জন্য গত সোমবার দুপুরে বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হন। তার বড় ছেলে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজেই গাড়ি চালিয়ে মাকে বিমানবন্দরে নিয়ে যান। তারেকের মেয়ে জায়মা রহমানও গাড়িতে ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনকে বিদায় জানাতে দলটির প্রবাসী নেতাকর্মীরাও হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিড় করেন। বিদায় বেলায় টার্মিনালে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। হুইল চেয়ারে বসা বেগম খালেদা জিয়াকে জড়িয়ে ধরেন ছেলে তারেক ও নাতনি জায়মা। ছেলেকে দেখিয়ে বিমানবন্দরে উপস্থিত বিএনপিকর্মীদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, “ভাইয়াকে দেখে রেখো।”

১৭ বছর পর দেশের মাটিতে ডা. জুবাইদা

২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জরুরি অবস্থার সময়ে দেশ ছাড়ার পর থেকে স্বামী তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনেই ছিলেন ডা. জুবাইদা রহমান। ১৭ বছর পর শাশুড়ির সঙ্গে তিনি দেশে ফিরলেন। আপাতত তিনি ধানমণ্ডির ৫ নম্বর সড়কের বাবার বাড়ি ‘মাহবুব ভবন’ এ থাকবেন। সাবেক নৌবাহিনী প্রধান রিয়াল অ্যাডমিরাল মাহবুব আলী খানের বাসভবন এটি। ওই বাড়িতে থাকেন মাহবুব আলী খানের স্ত্রী সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু এবং বড় মেয়ে শাহীনা জামান ও তার পরিবারের সদস্যরা। সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু অবশ্য কয়েকদিন আগে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। গতকালই ডা.জুবাইদা শাশুড়ির বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে মাকে দেখতে যান।  

বেগম খালেদা জিয়া অনেকটা সুস্থ, মানসিকভাবেও শক্ত’

‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া লন্ডনে চিকিৎসা নেওয়ার পর তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। উনি অনেকটা সুস্থ আছেন এবং মানসিকভাবেও উনি স্ট্যাবল (শক্ত) আছেন। আপনারা ওনার জন্য দোয়া করবেন।’গতকাল গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের বাসভবন ‘ফিরোজা’র সামনে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন। 

দীর্ঘ চার মাসের চিকিৎসা শেষে যুক্তরাজ্য থেকে আজ সকালে ঢাকা পৌঁছান খালেদা জিয়া। বিমানবন্দর থেকে সড়কপথে তিনি নিজ বাসভবনে ফেরেন।

বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, তিনি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন। যদিও দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টার ভ্রমণের কারণে তিনি কিছুটা অবসন্ন। আমরা তার জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।’

বিএনপির চেয়ারপারসন সবাইকে শুভেচ্ছা, সালাম ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন বলে জানান তার এই ব্যক্তিগত চিকিৎসক। খালেদা জিয়ার জন্য কাতারের পক্ষ থেকে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দেওয়ায় দেশটির সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, কাতার সরকার সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এটি দিয়েছে। এ সহায়তার মধ্য দিয়ে জিয়া পরিবারের সঙ্গে তাদের যে সম্পর্ক, তার প্রকাশ ঘটিয়েছেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, জোবাইদা রহমান ফিরেছেন, তারেক রহমানও ফিরবেন। সেদিন খুব বেশি দূরে নয়। কিছুদিন পর জোবাইদা রহমান আবারো লন্ডনে যাবেন এবং খুব দ্রুতই তারেক রহমানসহ দেশে ফিরে আসবেন।’