আমরা কি জুলাই আন্দোলনে ললিপপ খাচ্ছিলাম: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ভয়ংকর রক্তপিপাসু শেখ হাসিনার আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিতাড়িত করার অবদান তারেক রহমানের। তিনি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের পটভূমি রচনার প্রধান নায়ক। আমরা কি জুলাই আন্দোলনে ললিপপ খাচ্ছিলাম? এতে সর্বস্তরের মানুষের অবদান বা সহযোগিতা রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার খুনি হাসিনার আওয়ামী লীগ ভারতপন্থি। বিএনপি বাংলাদেশপন্থি রাজনৈতিক দল। আমাদেরকে ভারতপন্থি ট্যাগ দেবেন না। একটি গোষ্ঠী নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ট্যাগিং, সাইবার বুলিং করা হচ্ছে। দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক রয়েছে। নতুন করে যতই চক্রান্ত হোক, ব্যর্থ হবেই। জনগণের শক্তির কাছে কোনও ষড়যন্ত্রই টিকবে না।’
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ফের জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ
শুক্রবার বিকালে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বগুড়া শহরের শহীদ টিটু মিলনায়তনে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে দুপুরে তিনি জেলা মৎস্যজীবী দলের আয়োজনে শহরের ডিসি পার্ক করতোয়া নদীতে মাছের পোনা অবমুক্ত কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
রিজভী বলেন, ‘’গণতন্ত্র বিরোধীরা জাতীয়তাবাদী শক্তিকেই টার্গেট করছে। বিএনপি কোনও প্রভু দেশের তাঁবেদারির রাজনীতি করে না। একটি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করে নির্বাচন বন্ধের পাঁয়তারা করছে।’
আরও পড়ুন: 'জনগণের কাছে ক্ষমা চান'—জামায়াতকে ফারুক
ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল হলো আন্দোলন, সংগ্রাম ও নীতি-আদর্শের দল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা যদি অবাধভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, তাহলে ছাত্রদলের প্যানেলই জয়ী হবে।’
নারীর অধিকার ইস্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের নীরবতা প্রশ্নবিদ্ধ বলে মন্তব্য করেছেন রিজভী। তিনি বলেছেন, ভিসি নারীর অধিকার ও উন্নয়ন বিষয়ে নিস্পৃহ থাকায় তাকে আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রপন্থী মনে হয় না। তিনি একপক্ষের দিকে হেলে আছেন, সেটি সবার জানা।
ডাকসু নির্বাচনের প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ছাত্রশিবিরের প্যানেলের জিএস পদে মনোনয়ন প্রার্থী আগে ছাত্রলীগের পদধারী ছিলেন। ভিপি পদপ্রার্থীও ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে ফাহমিদা জানিয়েছিলেন। এজন্য ফাহমিদাকে সাইবার বুলিং ও হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগ করে যারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হামলা চালিয়েছে, হাত-পা কেটেছে, তারাই আজ ভিন্ন পরিচয়ে ছাত্রশিবিরের নেতা সেজেছে।
তিনি আরও বলেন, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের পাশাপাশি অনেক দলের প্যানেল রয়েছে। ১৯৭১ সালের রাজনৈতিক ভুলের দায়ে কাউকে রাজাকার বলা হলে সেটিকে কেন্দ্র করে সাইবার বুলিং ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রমাণ হয়, এসব সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বাস করে না। অথচ তারাই এখন ইসলাম ও ধর্মের কথা বলে।
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ কে এম মাহবুবুর রহমান ও হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী আজগর তালুকদার হেনা, জয়নাল আবেদীন চাঁন, সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির মাহফুজ ইসলাম, মাহমুদুর রহমান সুমন, ডা. নূর হাবীব ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচিতে জেলা বিএনপি নেতা ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল, এম আর ইসলাম স্বাধীন, হামিদুল হক চৌধুরী হিরু, মাফতুন আহমেদ খান রুবেল, সহিদ উন নবী সালাম, কেএম খায়রুল বাশার, শেখ তাহা উদ্দিন নাহিন, জাহিদুল ইসলাম হেলাল, একেএম তৌহিদুল আলম মামুন, জেলা যুবদলের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি সরকার মুকুল, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম শুভ, জেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক ময়নুল হক বকুল, সদস্য সচিব খলিলুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদল সভাপতি হাবিবুর রশিদ সন্ধান, সাধারণ সম্পাদক এম আর হাসান পলাশ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।