স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে নতুন রাজনীতির ডাক জামায়াত আমিরের
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নতুন ধারার রাজনীতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, অতীতের ব্যর্থ ও ‘বস্তাপচা’ রাজনীতিকে পেছনে ফেলে সময়ের দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নতুন রাজনীতির সূচনা করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত যুব র্যালি ম্যারাথন ‘রাজপথে বিজয়ে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ২৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশের পতাকা হাতে ঢাকায় ফিরবেন তারেক রহমান: মির্জা ফখরুল
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যে রাজনীতি দেশ ও জাতির স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের বিপক্ষে, সেই রাজনীতি বাংলাদেশে আর চলবে না। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, মামলাবাজি ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোই হবে নতুন রাজনীতির মূল লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারির নির্বাচন কোনো দলের নয়, এটি ১৮ কোটি মানুষের বিজয়ের দ্বার খুলে দেবে। অতীতের রাজনীতি বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেয়নি, বরং পেছনে টেনেছে। আমরা সেই রাজনীতির সমাপ্তি টানতে চাই।’
আরও পড়ুন: কেবল জামায়াতে ইসলামীই অর্থপূর্ণ স্বাধীনতায় বিশ্বাসী: অধ্যাপক জেহাদ খান
আওয়ামী লীগের শাসনামলের সমালোচনা করে জামায়াত আমির বলেন, স্বাধীন দেশের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা একটি পরিবার ও গোষ্ঠীর স্বার্থে পরিচালিত হয়েছে। ‘সোনার বাংলা’ গড়ার নামে দেশকে সন্ত্রাস ও লাশের রাজনীতিতে পরিণত করা হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, স্বাধীনতার পর একটি দল মুক্তিযুদ্ধকে নিজেদের সম্পত্তিতে পরিণত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে এবং মৌলিক মানবাধিকার হরণ করেছে। রক্ষী বাহিনীর নামে জল্লাদ বাহিনী গড়ে তুলে দেশে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয় বলেও দাবি করেন তিনি।
১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের প্রসঙ্গ টেনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বিদেশি ত্রাণ লুটপাটের কারণে লাখো মানুষ প্রাণ হারায়, যা তথাকথিত উন্নয়নের বাস্তব চিত্র।
আওয়ামী লীগের একাধিক শাসনামলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, বারবার ক্ষমতায় এসে দলটি দেশকে দিয়েছে ‘ছোপ ছোপ রক্ত আর কাড়ি কাড়ি লাশ’। বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরের ঘটনা ও লগি-বৈঠার রাজনীতি এর উদাহরণ।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদীরা পালিয়ে গিয়েও ষড়যন্ত্র থামায়নি। ওসমান হাদির ওপর হামলা তার প্রমাণ।’ তিনি আহত ওসমান হাদির দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
আগামী নির্বাচন প্রসঙ্গে জামায়াত আমির বলেন, তারা কোনো দলীয় বিজয় নয়, জনগণের বিজয় চান। নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হলে জনগণই তা প্রতিহত করবে।
নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কাউকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হলে তা কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা হবে। কালো টাকার প্রভাব ও ভোট কেনার রাজনীতির দিন শেষ হয়ে এসেছে।
শেষে তিনি বলেন, যুবসমাজই নতুন বাংলাদেশের চালিকাশক্তি। এই বিজয় দিবস শুধু স্মরণের নয়, পুরোনো রাজনীতির কবর রচনা করে নতুন পথচলার শপথ নেওয়ার দিন।





