‘স্কাই বিজ’-এর বিনিয়োগ সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা
প্রথমবার বাংলাদেশে তৈরি হবে রপ্তানীমুখী ড্রোন, জমি নিতে বেপজার সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন

এবার বাংলাদেশের একটি কারখানাতেই তৈরি হবে মনুষ্যবিহীন আকাশযান (ইউএভি) বা ড্রোন । ‘স্কাই বিজ লিমিটেড’ নামে বাংলাদেশি একটি কোম্পানি রপ্তানিমুখী এই হাইটেক ড্রোন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। আর এ ড্রোন কারখানার জমির জন্য বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) চুক্তি সম্পন্ন করছে প্রতিষ্ঠানটি।
ড্রোন তৈরির জন্য চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরের বেপজা ইনডাস্ট্রিয়াল এস্টেটের ভেতরে কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছে ‘স্কাই বিজ’। প্রায় দুই একর জায়গায় এ কারখানা স্থাপন ও ড্রোন উৎপাদন শুরু করতে স্কাই বিজ বিনিয়োগ করবে প্রায় ৪ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে যা হচ্ছে
স্কাই বিজের কর্মকর্তারা জানান, তারা মোট ১০টি মডেলের ইউএভি তৈরি করবেন। এর মধ্যে আগামী জানুয়ারি মাসেই দুটি মডেলের উৎপাদন শুরু হবে বলে প্রত্যাশা করছেন তারা। কারখানাটি পুরোপুরি চালু হলে এখান থেকে বছরে ১৬ কোটি ৯০ লাখ বা ১৬৯ মিলিয়ন ডলারের ড্রোন রপ্তানি হবে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এটি প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকার সমান।
বাংলাদেশে ড্রোন তৈরির এই উদ্যোগের পেছনে আছেন জসীম আহমেদ। ঢাকা ও ঈশ্বরদী ইপিজেডে তাদের বস্ত্র ও পোশাক উপকরণ তৈরির কারখানা রয়েছে। পাশাপাশি তৈরি পোশাকশিল্পেও বিনিয়োগ করেছেন তিনি। এ ছাড়া ইপিজেডভিত্তিক শিল্পকারখানা গ্লোবাল লেভেলস বাংলাদেশ লিমিটেড (স্পেন-বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়োগ) এবং জিংকি গ্লোবাল টেক্সটাইল বাংলাদেশ লিমিটেডের (চায়না-বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়োগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।
আরও পড়ুন: কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মৃৎশিল্প
জসীম আহমেদ জানান, তিনি এখন ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আধুনিক প্রযুক্তির ইউএভি তৈরিতে বিনিয়োগ করছেন। তার মতে, অনেক স্বপ্নদ্রষ্টা এবং আত্মবিশ্বাসী তরুণের প্রতিনিধিত্ব করছে এই উদ্যোগ। ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অনেক দেশেই এ ধরনের ড্রোনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে কোম্পানিটি অগ্নিনির্বাপণের জন্য উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন রোটারি উইং ইউএভি তৈরি করবে। একই সঙ্গে সিনেমাটোগ্রাফি, ম্যাপিং ও সার্ভিলেন্স উপযোগী ভার্টিক্যাল টেক-অফ ও ল্যান্ডিং ড্রোন বানানো হবে।
জসীম আহমেদ জানান, তাদের ড্রোন মূলত বেসামরিক কাজে যেমন কীটনাশক স্প্রে, অগ্নিনির্বাপণ, ডেলিভারি সার্ভিস, এবং ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যবহার করা যাবে। বেপজাকে দেওয়া প্রস্তাবে বছরে ৭ হাজার ৩১৪টি ড্রোন তৈরি ও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা দেখিয়েছেন বলে জানান জসীম আহমেদ।
বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এএসএম আনোয়ার পারভেজ গণমাধ্যমকে বলেন, তারা কারখানা স্থাপনের জন্য জমি ইজারা দিতে স্কাই বিজের সঙ্গে চুক্তি করতে যাচ্ছেন।