অস্ট্রেলিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইউটিউবের সতর্কবার্তা, শিশুদের ঝুঁকি বাড়বে

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৬:০৪ অপরাহ্ন, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার নতুন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে দেশটির শিশু–কিশোরেরা বরং আরও বেশি অনলাইন ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে দাবি করেছে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ১৬ বছরের নিচে কেউই ইউটিউবে অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না—সরকারের এমন সিদ্ধান্তকেই ঝুঁকির মূল কারণ হিসেবে দেখছে প্রতিষ্ঠানটি।

ইউটিউবের মতে, অ্যাকাউন্ট না থাকায় শিশুরা যদিও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করা বন্ধ করবে না, কিন্তু অভিভাবকদের পক্ষে সন্তানের দেখা কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ করা, ফিল্টার সেটিং ব্যবহার করা কিংবা ক্ষতিকর চ্যানেল ব্লক করা আর সম্ভব হবে না। এতে শিশুরা “নিয়ন্ত্রণহীনভাবে” অনলাইন কনটেন্টের মুখোমুখি হতে পারে।

আরও পড়ুন: ঢাবিতে এআই ও আধুনিক শিক্ষণ কৌশল নিয়ে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

গুগল ও ইউটিউব অস্ট্রেলিয়ার জননীতি ব্যবস্থাপক রাচেল লর্ড বলেন, “এ আইন আমাদের দশ বছরের তৈরি নিরাপদ ইকোসিস্টেমকে দুর্বল করবে। বরং অস্ট্রেলিয়ার শিশুদের আরও ঝুঁকিতে ফেলবে।”

ইউটিউবের মন্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেন দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী আনিকা ওয়েলস। তিনি বলেন, “যদি ইউটিউব মনে করে তাদের প্ল্যাটফর্ম শিশুদের জন্য নিরাপদ নয়, তবে সেটি ইউটিউবেরই সমাধান করতে হবে। সরকারের সিদ্ধান্তকে দোষারোপ করা অদ্ভুত।”

আরও পড়ুন: মঙ্গল গ্রহে প্রথমবার বজ্রপাতের মতো শব্দ ধারণ করল নাসার রোভার

তিনি আরও বলেন, জেনারেশন আলফার শিশুরা স্মার্টফোন হাতে পাওয়ার পর থেকেই অ্যালগরিদম–নির্ভর ‘ডোপামিন ড্রিপ’-এর মধ্যে ডুবে থাকে। নতুন আইন তাদের সেই “অ্যালগরিদমিক কারাগার” থেকে বের করে আনার প্রথম পদক্ষেপ।

নতুন আইন যা বলছে

১৬ বছরের নিচে কেউ ইউটিউব অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে না

১০ ডিসেম্বরের পর বর্তমান সব নাবালক অ্যাকাউন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে

ইউটিউব কিডসে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না

বয়স গোপন বা জালিয়াতি করে অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে না

আইন লঙ্ঘন করলে প্ল্যাটফর্মকে সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৯৫ লাখ অস্ট্রেলিয়ান ডলার জরিমানা

সরকার প্রথমে ইউটিউবকে আইনটির আওতায় আনেনি। তবে জরিপে দেখা যায়, ১০ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে ক্ষতিকর কনটেন্ট দেখার তিন–চতুর্থাংশ ঘটনা ইউটিউবের মাধ্যমে ঘটে। এরপরই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়।

অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে অনলাইন শিশু–নিরাপত্তা সুরক্ষায় এটিই সবচেয়ে বড় আইনগত পরিবর্তন। তবে এটি আদতে শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে নাকি নতুন জটিলতা তৈরি করবে—তা জানা যাবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পর।