বরিশালে মেয়েকে হত্যার পর বাবার আত্মহত্যা

বরিশাল নগরীর কাউনিয়ায় পাঁচ বছর বয়সী শিশু কন্যাকে জবাই করে হত্যায় পর বাবা আত্মহত্যা করেছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ। আজ সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানালেন পুলিশ কর্মকর্তা।
সরেজমিনে বুধবার (১২ জুন) সকালে কাউনিয়া পানির ট্যাংকের পূর্ব পাশে স্বপ্ন বিলাস ভবনের সামনে গিয়ে প্রচুর উৎসাহী মানুষ ও পুলিশের ভিড় চোখে পড়ে। এই ভবনের চারতলার একটি কক্ষ নং ৬ এর সামনে তখন সব সাংবাদিকদের ভিড়। ভিতরে মহিলাদের কান্নার রোল চলছে। পুলিশের তিনজন কর্মকর্তা ঘটনার তদন্ত করছিলেম। পরবর্তীতে তাদের একজন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে বিস্তারিত জানান।
আরও পড়ুন: ৪০ কেজি গাঁজাসহ বরখাস্ত পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার
হত্যার শিকার শিশু কন্যা রাবেয়া বশরী রোজার গলাকাটা দেহ তখনও মেঝেতে পরে আছে। লাশ আঁকড়ে ধরে কান্নারত রোজার দাদী জানালেন, মেয়েকে হত্যার পর তার ছেলে নাঈম হাওলাদার (৩৫) নিজের গলায় ধারালো অস্ত্র (বটি) দিয়ে আঘাত করে আত্মহত্যা করেছে। বলেই মা আবারও কান্নায় ভেঙে পরেন। ভিতরের ঘরে তখন বাবা নাঈম হাওলাদারের গলাকাটা দেহ পরে আছে। ছেলে ও নাতির শোকে জ্ঞান হারিয়ে পরে আছেন পরিবারের কর্তা বাবা ও দাদা শাজাহান হাওলাদার। এ এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য।
জানা গেল, নাঈম হাওলাদার উজিরপুর উপজেলার বরাকোঠা এলাকার শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে। সে ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অপসোনিনের গাড়ি চালক ছিলো এবং মাত্র দুমাস আগে এই ভবনে ফ্লাট ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। বাড়িওয়ালা পলাশ জানালেন, সাড়ে সাতটার দিকে এই ঘটনা জানতে পেরে পুলিশকে খবর দেই। তিনি বলেন, গত দুদিন আগে আশেপাশের মহিলারা বলাবলি করছিলেন এই লোকটি হয় গলায় দড়ি দেবে, নয়তো কোনো অঘটন ঘটাবে। আজ তা-ই হয়েছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে যৌথ টহল, নিরাপত্তা জোরদারে পুলিশ ও সেনাবাহিনী একসাথে মাঠে
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী উপ পুলিশ কমিশনার সরোয়ার হোসেন বলেন, চারমাস পূর্বে স্ত্রীর সাথে বিচ্ছেদ ঘটেছে। সেই থেকে মানসিক ভারসাম্য ঠিক নেই বলে মনে হচ্ছে। অনেকগুলো মামলাও চলমান রয়েছে নিহত নাঈমের বিরুদ্ধে। পরিবারের লোকদের সাথে কথা বলে এটাই মনে হচ্ছে। তারউপর গত রাতে তার স্ত্রী ফোনে জানিয়েছে সকালে এসে মেয়ে রোজাকে নিয়ে যাবে। তাই বটি দিয়ে কন্যাকে জবাই করে। পরে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যা করেছে নাঈম হাওলাদার । সামনের রুমে বোন থাকলেও তারা টের পায়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। এরপর বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।