পলাতক সন্ত্রাসীদেরপরিকল্পিত হত্যা কিনা তদন্ত চলছে

সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে দুইজন নিহতের ঘটনা রহস্যজনক, জামাত নিহত দুজনকে কর্মী দাবি করছে

Any Akter
চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশিত: ১:০৫ অপরাহ্ন, ০৪ মার্চ ২০২৫ | আপডেট: ৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, ০৪ মার্চ ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ডাকাতের আক্রমণ মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীদের প্রতিরোধে গন পিটুনিতে দুইজন নিহত ও চারজন গুলিবিদ্ধের ঘটনা রহস্যজনক। পুলিশ ও স্থানীয়রা ঘটনাটি বিভিন্নভাবে বর্ণনা করছে। নিহতের পরিবার বলছে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। সোমবার (৩ মার্চ) রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। জামাত নেতারাও বলছে পলাতক আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীরা ফাঁদে ফেলে তাদের দুই কর্মীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে। নিহত দুইজনকে জামাত তাদের কর্মী দাবি করছে। এদিকে পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন রাতেই ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছি। এই ধরনের হত্যাকান্ড এড়াতে ব্যবস্থা নিচ্ছে। স্থানীয় জনগণের সহায়তা ও তাদের সাথে কথা বলে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য আমাদের কর্মকর্তারা কাজ করছে। প্রকৃত ঘটনা উদ্ধারের পরেই সাংবাদিকদের জানানো হবে। এদিকে সাতকানিয়া গ্রামে গ্রামে জামাত ও আওয়ামী লীগ সমর্থক নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

গণপিটুনিতে নিহত দুজনের পরিচয় মিলেছে। তারা হলেন উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মাহমুদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ছালেক (৩৫)। গতকাল সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গণপিটুনিতে দুজন নিহত হন।

আরও পড়ুন: বিজিবির হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হলো আহত হাতির চিকিৎসায় গিয়ে গুরুতর আহত ২ চিকিৎসকসহ ৩ জনকে

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ৪ থেকে ৫টি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নেজামসহ একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় যান। সেখানে তাঁদের দেখে মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণা শুনে এলাকাবাসী তাঁদের আটকের উদ্দেশ্যে জড়ো হন। এ সময় এলাকাবাসীকে উদ্দেশ্য করে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে গণপিটুনিতে নেজাম ও ছালেক নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন স্থানীয় তিন বাসিন্দা ও এক দোকানি। আহত ব্যক্তিরা হলেন ওবায়দুল হক (২২), নাসির উদ্দিন (৩৮), আব্বাস উদ্দিন (৩৮) ও মো. মামুনুর রশিদ (৪৫।

সম্প্রতি স্থানীয় এওচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য নজরুল ইসলামের মাছের খামার ও ইটভাটায় লুটের ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে নেজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। জামায়াতের কিছু স্থানীয় নেতা-কর্মী দাবি করেছেন, এলাকায় বিরোধ মীমাংসার জন্য একটি সালিস বৈঠকের কথা বলে নেজাম ও তার সঙ্গীদের এওচিয়ায় ডেকে নিয়ে মাইকে ডাকাত পড়েছে ঘোষণা করা হয়। এরপর নেজাম ও তার সঙ্গীদের পিটুনি দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: ভোলাগঞ্জে শত কোটি টাকার পাথর লুট: পাঁচজন আটক

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলসহ সাতকানিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম গণমাধ্যকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে পুলিশ। নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গতকাল রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।