৮ টি মামলা তার বিরুদ্ধে
সিলেটে সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রীর অন্যতম সহযোগী মিসবাহ কয়েস গ্রেফতার

সিলেটে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড: এ কে আবদুল মোমেন ও তাঁর স্ত্রী সেলিনা মোমেনের অন্যতম সহযোগী, বহুল আলোচিত ভূমি জালিয়াত অ্যাডভোকেট মিসবাউল ইসলাম কয়েসকে গ্রেপ্তার করেছে সিলেট কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
শনিবার (১২ এপ্রিল) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টায় জল্লারপাড় রোডস্থ জিন্দাবাজার থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেফতারকৃত কয়েসের বিরুদ্ধে হত্যা, প্রতারণা, ভূমি জালিয়াতসহ ৮টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ জিয়াউল হক। তিনি রাত সাড়ে ১২ টায় দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকাকে জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মন্ত্রী মোমেনের নাম ব্যবহার করে সিলেটে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে কয়েসের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে ৮টি রয়েছে।
জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী ভূমি দস্যু হেলেন আহমদ ছিলেন দোর্দণ্ড প্রতাপশালী। সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেনের স্ত্রী সেলিনা মোমেনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন ছিলেন হেলেন আহমদ। আর হেলেন আহমদের ব্যক্তিগত চাকর থেকে একসময় ব্যবসায়ীক পার্টনার হওয়া ভূমি দস্যু মিসবাউল ইসলাম কয়েসও সেই দাপটকে কাজে লাগান। আওয়ামী আমলে রাতারাতি কয়েকশো কোটি টাকার মালিক বনে যান হেলেন-মিসবাহ। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যম একাধিক সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।
আইনজীবী মিসবাউল ইসলামের এক সময় নুন আনতে পানতা ফুরানোর মতো অবস্থা থাকলেও আজ তার রয়েছে একাধিক বাড়ি, গাড়ি এমনকি নারীও। ধর্ষণ মামলায়ও গণমাধ্যমে নাম প্রকাশ পায় মিসবাউল ইসলামের। অবশ্য ক্ষমতার দাপটে সেই সময় মিসবাউল ইসলামকে কিচ্ছু করার ক্ষমতা ছিল না। হেলেন আহমদের দাপটের কাছে প্রশাসন জিম্মি থাকায় সুযোগ বোঝে দুজনেই প্রবাসীদের ভূমি দখল করে যাচ্ছিলেন। সিলেটে প্রেসক্লাবে হেলেন-মিসবাহ প্রতারণার শিকার হওয়া প্রবাসীরা সংবাদ সম্মেলনও করেছেন। তবুও দমানো যায়নি এই দুষ্টচক্রকে।
এদিকে ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর রাতারাতি রূপ পাল্টে ফেলেন ভূমি প্রতারক ওই আইনজীবী। তিনি ২০২৫-২৬ সেশনের জন্য নির্বাচিত হওয়া সিলেট জেলা ও মহানগর জামায়াত আমিরের ছবি পোস্ট করে শুভ কামনা জানান। জামায়াতের নেতাকর্মীরা এ বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করায় তার নতুন রাজনৈতিক খায়েস মুখ থুবড়ে পড়ে।
এর আগে তিনি নিয়মিত সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেনের সকল অনুষ্ঠানের ছবি সংগ্রহ করে ফেসবুকে পোস্ট করতেন।
সম্প্রতি প্রতারক মিসবাউল ইসলাম জেলা ও মহানগর বিএনপির দায়িত্বশীল পদে থাকা অনেকের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচেষ্টাও অব্যাহত রেখেছিলেন। তবে জামায়াতে ইসলামী বা বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে তিনি কখনো পাত্তা পাননি।