বোরো আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপর্যস্ত কুড়িগ্রাম

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২৪ পূর্বাহ্ন, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১০:২৪ পূর্বাহ্ন, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

কুড়িগ্রামে কয়েক দিন ধরে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের প্রকোপ অব্যাহত রয়েছে। দিনের বেলাতেও হিমেল বাতাসে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। কনকনে ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও দিনমজুররা। শীত নিবারণের জন্য অনেককে কাজের ফাঁকে শুকনো খড় জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় কুড়িগ্রাম জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল শতভাগ, যা শীতের অনুভূতি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুন: ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে কথিত জুলাইযোদ্ধা তাহরিমা গ্রেপ্তার

চিলমারী উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের কৃষক বাদশা মিয়া বলেন, ঘন কুয়াশা ও তীব্র ঠান্ডার কারণে মাঠে নিয়মিত কাজ করা যাচ্ছে না। বোরো আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। এভাবে শীত চলতে থাকলে ফলনের ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক আনিছুর রহমান জানান, বোরো চাষের জন্য বীজতলার চারা রোপণের উপযোগী হলেও অতিরিক্ত ঠান্ডা ও কুয়াশার কারণে জমিতে নামতে পারছেন না। এতে বীজতলা নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। বাধ্য হয়ে প্লাস্টিক দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: নরসিংদী থেকে ঢাকামুখী নেতাকর্মীদের ঢল

জেলা চর উন্নয়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। চরবাসীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। জরুরি ভিত্তিতে শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ প্রয়োজন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর জানান, ইউনিয়নের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ ব্রহ্মপুত্র নদের চরাঞ্চলে বসবাস করেন। প্রায় ১৬ হাজার মানুষ তীব্র শীতের মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এখন পর্যন্ত মাত্র ১০০টি কম্বল পাওয়া গেছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত অপ্রতুল।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুড়িগ্রামের উপ-পরিচালক আবদুল্লা আল মামুন বলেন, বর্তমানে বড় ধরনের ফসল ক্ষতির আশঙ্কা নেই। তবে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে গেলে বোরো বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, আগামী দুই থেকে তিন দিন এই তাপমাত্রা অব্যাহত থাকতে পারে। মাসের শেষের দিকে একটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।