বিচারপতির ভাগ্নে পরিচয়ে আদালতে তদবির, আনসার সদস্য আটক
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট আমলি আদালতে এক ব্যক্তি নিজেকে বিচারপতির ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে আসামি রাকিব বেপারীর জামিন করানোর চেষ্টা করেছেন। এ ঘটনায় তার পরিচয় যাচাই করা হলে ভুয়া প্রমাণিত হয় এবং তাকে পুলিশ আটক করেছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ২টার সময় বিজ্ঞ আমলী আদালত গোসাইরহাট থানার এজলাস কক্ষে মিজানুর রহমান নামে একজন ব্যক্তি মাননীয় বিচারপতির ভাগ্নে পরিচয়ে বিজ্ঞ আমলী আদালত গোসাইরহাট থানার দায়িত্বরত বিজ্ঞ বিচারকের সাথে সাক্ষাত করতে চান। অত্র আদালতের অফিস সহায়ক আসাদুল্লাহ জুনায়েদ বিজ্ঞ বিচারকের অনুমতি নিয়ে উক্ত ব্যক্তিকে বিচারকের খাস কামরায় প্রবেশ করতে বলেন।
আরও পড়ুন: শিবপুর প্রেসক্লাবের আসাদ সভাপতি, মাহবুব খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত
বিজ্ঞ বিচারকের নিকট উক্ত ব্যক্তি পুনরায় মাননীয় বিচারপতির ভাগ্নে পরিচয়ে সি.আর-৫২৪/২৫ (গোসাইরহাট) নং মামলার ১নং আসামী রাকিব বেপারীকে জামিন দিতে হবে বলে বিজ্ঞ বিচারককে জানান এবং নিয়মবহির্ভূতভাবে মামলার কাগজপত্র ও বিজ্ঞ আইনজীবি আব্দুস সালামের স্বাক্ষরিত ৩ ফর্দ বিশিষ্ট জামিনের দরখাস্ত দেন।
বিজ্ঞ বিচারক বিচারপতির ফোন নম্বর জানতে চেয়ে ফোন করলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। উক্ত ব্যক্তি নিজেও বিচারপতি মহোদয়ের নাম্বারে ফোন করেন, সেখানে ও নম্বরটি বন্ধ ছিল। সন্দেহ হলে সদর কোর্ট পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া–পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
কোর্ট পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তার বাড়ি পিরোজপুর মঠবাড়িয়া উপজেলায়। তিনি মহাখালী স্বাস্থ্য বিভাগে আনসারে চাকুরি করেন বলে জানান এবং ১নং আসামী রাকিব বেপারীর বড় ভাই ফারুক বেপারী তার বন্ধু। বন্ধুর ভাইকে জামিন করানোর জন্য তিনি বিচারপতি মহোদয়ের ভুয়া ভাগ্নে পরিচয়ে আদালতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।
শরীয়তপুর জেলা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামাল হোসাইন বলেন, “আজ ২টার দিকে মিজানুর রহমান নামে এক ব্যক্তি নিজেকে বিচারপতির ভাগ্নে পরিচয় দিয়ে গোসাইরহাট আমলি আদালতে হাজির হন। তিনি ১নং আসামী রাকিব বেপারীর জামিন করানোর জন্য আদালতকে চাপ দিতে চেষ্টা করেন। তবে মামলার দায়িত্বে থাকা বিচারক তার পরিচয়ের সত্যতা যাচাই করলে ভুয়া প্রমাণিত হয়। বর্তমানে তিনি পালং থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।”
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম জানান, আদালত থেকে এখনো কোনো এজাহার হাতে আসেনি। তবে ব্যক্তি বর্তমানে থানায় হেফাজতে রয়েছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আনসার সদস্য হিসেবে ঢাকায় কর্মরত এবং বাড়ি পিরোজপুরে। আদালতের নির্দেশনায় বিষয়টি রেকর্ডভুক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।





