লুটপাটের প্রধান কারিগর এমডি শিরিন এখনও বহাল
সাহাবুদ্দিনকে আর্থিক সুবিধা দিতে ডাচ-বাংলার নিত্যনতুন কত কৌশল
ছবিঃ সংগৃহীত
- অবৈধ সুবিধার অর্থে সরকারবিরোধী নাশকতায় ইন্ধনের অভিযোগ
- অবৈধ টাকায় স্ত্রীর নামে জমি কিনে, ব্যাংকের টাকায় বিল্ডিং, অতঃপর মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া নির্ধারণ/দুদক মামলা করলেও এখনো এমডিসহ কাউকে আটক করেনি, আমানতদার শেয়ার হোল্ডাররা আতঙ্কিত
আর্থিক খাতে দেশের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান ডাচ-বাংলা ব্যাংক বিতর্কিত সাহাবুদ্দিন পরিবারের খপ্পরে এখনও জিম্মি। গণ-অভ্যুত্থানের ১৪ মাস পার হলেও ব্যাংকটি এখনও ফ্যাসিস্ট দোসরমুক্ত না হওয়ায় উদ্বিগ্ন আমানতদার ও শেয়ারহোন্ডাররা। পলাতক সাহাবু্িদ্দন ও সহযোগীরা বৃহত্তর ফরিদপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলে সরকারবিরোধী নাশকতায় উসকানি এবং আর্থিক যোগান দেয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। অথচ জুলাই গণ-আন্দোলন দমনে কারাগারে আটক সাবেক আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের বাসায় সার্বক্ষণিকভাবে সহায়তা করছিল। সাহাবুদ্দিন পালিয়ে গেলেও তার ছেলে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান। বর্তমান এমডি আবুল কাশেম মো. শিরিন ব্যাংকিং বিধি লঙ্ঘন করে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় ব্যাংকটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের একমাত্র কাজই হল আইনের ফাঁকফোকরে সাহাবুদ্দিনকে আর্থিক সুবিধা দেয়। নিত্যনতুন কত যে কলাকৌশল করে হাজার হাজারা কোটি টাকা ব্যাংক থেকে পাচার করেছে তার শেষ নেই। বর্তমান এমডির সহায়তায় ব্যাংকটি লুটেপুটে খাচ্ছে সাহাবুদ্দিন পরিবার। ব্যাংক থেকে সাহাবুদ্দি পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিতে নানা ছলেবলে কৌশলে আইনি ফাঁকফোকরে সকাল সহায়তা করছে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার আসামি ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিরিন। এমডি সহ ঊর্ধ্বতনদের বিরুদ্ধে মামলা করলেও এখনও তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছেনা। সম্প্রতি শেখ হাসিনার মানবতা বিরোধী অপরাধের রায়ের সময়ে পদ্মা সেতু এক্সপ্রেস ওয়ে ও মাদারীপুর অঞ্চলে নাশকতায়ও সাহাবুদ্দিনের ইন্ধন রয়েছে এমন অভিযোগ করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ অডিট ও দুর্নীতি দমন কমিশনে পাওয়া একের পর এক অভিযোগগুলো যাচাই করে দেখা যায়, কীভাবে টানবাজারের সামান্য একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ডাচ-বাংলা থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। জানা যায়, ২০১৯ সালের মে মাসের এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলে শাপলা চত্তরের সামনে আশপাশের সবাইকে বলা হচ্ছে, নির্মাণাধীন ভবনটি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের। কিন্তু ভবনটি আসলে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদের মা এবং সাবেক চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আহমেদের স্ত্রী আছমা আহমেদের নামে। ব্যাংক মালিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট এই ভবনে প্রধান কার্যালয় প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে, তিন বছরের অগ্রিম ভাড়া বাবদ ৯৭ কোটি টাকা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদনও করেছে ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই ভবন ভাড়া নিয়ে প্রধান কার্যালয় করার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের। ওই ভবনের ভাড়া বাবদ যে টাকা দেওয়া হবে, তা দিয়ে নিজেরাই কেন এমন ভবন নির্মাণ বা কিনে প্রধান কার্যালয় প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি, সে বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করা হয়। ভবনটি ভাড়া না নিয়ে ফ্লোরস্পেস কিনে নেওয়ারও পরামর্শও দেওয়া হয়। তা ছাড়া ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের তুলনায় স্থাবর সম্পদের পরিমাণও নির্ধারিত সীমার অনেক কম থাকায় আরও কিছুটা সম্পদ কেনার সুযোগ ছিল বেসরকারি এই ব্যাংকটির। এসব বিষয়ে ব্যাংকটির ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়। ব্যাখ্যা লিখিত দেবেন বলেও জানিয়েছেন ব্যাংকটির এমডি মো. শিরিন।
ব্যাংকের পরিচালনা বেদখল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সকল নীতিমালা ভঙ্গ:
চাঞ্চল্যকর এবং অবাক করা ঘটনা হচ্ছে যে, ব্যাংক ব্যবসায় সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ নিজের মেয়ে সাদিয়া রাইয়ান আহমেদ কে ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে সাহাবুদ্দিন আহমেদ ডাচ-বাংলা ব্যাংকে থাকা তার মোট শেয়ারের ১ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার মেয়ে সাদিয়া রাইয়ান আহমেদকে উপহার হিসেবে দেন। এরপরই ২০২২ সালের জুনে সাদিয়া ব্যাংকের পরিচালক পর্ষদে যোগ দেন। ব্যাংকটি অবৈধ দখল বলবৎ রাখতে নীতিহীন সাহাবুদ্দিন ২০২২ সালের জুন মাসের দিকে নিজের মেয়ে সাদিয়া রাইয়ান আহমেদ কে ঢাকার মতিঝিলে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ২৬৭তম সভায় অনুমোদন দিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার সময় তার বয়স ৩০ এর নিচে ছিল। আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে, ২০২৩ সালে ৩০ জুনভিত্তিক হিসাব নিরীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকটি অনুমোদিত মূলধন ১৫,০০ কোটি টাকা, পরিশোধিত মূলধন ৮,৭৮.৮১ কোটি টাকা, মোট আমানতের পরিমাণ ৪৭,২৫৯.০১ কোটি টাকা, বিতরণকৃত মোট ঋণ ও অগ্রিমের পরিমাণ ৪১,২০৭.৩০ কোটি টাকা যা থেকে নিট আয় হয় ৮০১.৭৪ কোটি টাকা। ব্যাংকটি মোট আউটস্ট্যান্ডিং শেয়ার সংখ্যা ৮৭৮,৮১৯,২১৮ টি।
ব্যাংকটির ওয়েবসাইট এর তথ্য মোতাবেক পরিচালনা পর্ষদ পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থা। সেখানে ব্যাংক ব্যবসায় সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ (০১) সাদিয়া রাইয়ান আহমেদ সাহাবুদ্দিনের মেয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান, (০২) সায়েম আহমেদ সাহাবুদ্দিনের বড় ছেলে ও ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান, অপর দিকে (০৩) আবেদুর রশিদ খান যিনি হরাইজন অ্যাসোসিয়েট লি. অভন্তি ইন্টারন্যাশনাল লি. - সোয়েটার ব্যাবসা ও রপ্তানিকারক এর নমিনি/মনোনীত পরিচালক, এটা স্পষ্ট যে এই তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত মালিক সাহাবুদ্দিন আহমেদ। (০৪) সাহাবুদ্দিনের মালিকানাধীন ইকোট্রিন হংকং লিমিটেডের নমিনি পরিচালক মিস তাং ইয়েন হা এ্যাডাও পর্ষদে আছেন। তাহলে প্রশ্ন হল সাহাবুদ্দিন, তার মালিকানাধীন চার কোম্পানি, এবং তার বড় ছেলে সায়েম আহমেদ ও ছোট মেয়ে সাদিয়া রাইয়ান আহমেদ মানে শুধু মাত্র সাহাবুদ্দিন আহমেদ পরিবার কি ৯,২১৩,২৬৮ আমানত হিসাবধারীর মোট ৪৭ হাজার কোটি টাকা আমানতের সম্পূর্ণ একটি ব্যাংকের মালিক! এটা কি ব্যাংক ব্যবস্থার জন্য নিরাপদ? ব্যাংক বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন এক ব্যক্তি বা পরিবারের নিকট যদি থাকে তবে আমানতকারীদের অর্থের নিয়ন্ত্রক কি এক ব্যক্তির হাতে থাকবে? পর্ষদ ভেঙে দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন অভিজ্ঞ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিকট মালিকানা হস্তান্তর করতে হবে জরুরি ভিত্তিতে।
২০১৯ সালের মে মাসের এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে, দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র মতিঝিলে শাপলা চত্তরের সামনে আশপাশের সবাইকে বলা হচ্ছে, নির্মাণাধীন ভবনটি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের। কিন্তু ভবনটি আসলে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদের মা এবং সাবেক চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আহমেদের স্ত্রী আছমা আহমেদের নামে। ব্যাংক মালিকের স্বার্থসংশ্লিষ্ট এই ভবনে প্রধান কার্যালয় প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে তিন বছরের অগ্রিম ভাড়া বাবদ ৯৭ কোটি টাকা প্রদানের জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আবেদনও করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই ভবন ভাড়া নিয়ে প্রধান কার্যালয় করার বিষয়ে আপত্তি রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের।
জানা গেছে, বৈঠকে ওই ভবনের ভাড়া বাবদ যে টাকা দেওয়া হবে তা দিয়ে নিজেরাই কেন এমন ভবন নির্মাণ বা কিনে প্রধান কার্যালয় প্রতিস্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি সে বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করা হয়। ভবনটি ভাড়া না নিয়ে ফ্লোরস্পেস কিনে নেওয়ারও পরামর্শ দেওয়া হয়। তাছাড়া ডাচ-বাংলা ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের তুলনায় স্থাবর সম্পদের পরিমাণও নির্ধারিত সীমার অনেক কম থাকায় আরও কিছুটা সম্পদ কেনার সুযোগ ছিল বেসরকারি এই ব্যাংকটির। এসব বিষয়ে ব্যাংকটির ব্যাখ্যাও চাওয়া হয়। ব্যাখ্যা লিখিত দেবেন বলেও জানিয়েছেন ব্যাংকটির এমডি মো. শিরিন।
টালি খাতায় লিখে টোকেন দিয়ে ঋণ অনুমোদন:
আবুল হাসেম শিরিণ কে প্রথমে ডিএমডি ও পরে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ করে নিজের আজ্ঞাবহ পরিচালনা পর্ষদ নিয়ন্ত্রণের মত গর্হিত কাজটিও করেছেন সাহাবুদ্দিন। মোট ঋণের পরিমাণ যেখানে ৪১,২০৭.৩০ কোটি টাকা সেখানে, কোন ক্রেডিট অ্যান্ড কম্প্লায়েন্স বিভাগ, ক্রেডিট কমিটি এবং ঋণ অনুমোদন কমিটি কোন কিছুর কোন তোয়াক্কা না করে উত্তম কুমার সাহা নামের অত্যন্ত আজ্ঞাবহ ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর কে দিয়ে শুধু মাত্র কাগজের টোকেন পাঠিয়ে ঋণ অনুমোদন এর সংস্কৃতি শুধু মাত্র এই ডাচ-বাংলা ব্যাংকেই আছে। সাহাবুদ্দিনের আদেশ – নির্দেশ ছাড়া এই ব্যাংকে কোনো ঋণ বিতরণ হয় না।
বন্ডেড ওয়্যার হাউজের বিনা শুল্কের তুলা ও সুতা বিক্রি এবং এলসি নগদায়ন ব্যাবসা :
এই সাহাবুদ্দিন আহমেদ বিভিন্ন অসৎ গার্মেন্টস মালিকদের নিকট হতে সুতা বিক্রির ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি নিয়ে বিজিএমইএ এর ইটিলাইজেশন ডিক্লারেশন সার্টিফিকেট নিয়ে সুতা ডেলিভারি না দিয়া নগদ টাকা প্রদানের মত অর্থনীতি ধ্বংসকারী ব্যাবসার সাথে জড়িত। আবার যেহেতু তিনি বিটিএমইএ সার্টিফিকেট ও বিজিএমইএ এর ইটিলাইজেশন ডিক্লারেশন সার্টিফিকেট এর মাধ্যমে প্রমাণ পত্র জোগাড় করেন যে তিনি সুতা বিক্রি করেছেন সেহেতু বন্ডের আওতায় আমদানি করা বিনা শুল্কের তুলা বিদেশ হতে আমদানি করে তা আবার খোলা বাজারে বিক্রি করে থাকেন অবিরত। এছাড়াও, ঐ একই পরিমাণ তুলা হতে সুতা তৈরি করে নারায়নগঞ্জের টান বাজার এলাকার সুতার দাম ওঠা-নামার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণও তিনিই করেন। প্রথম জীবনের তার পরিচিতি ছিল সুতার পাইকার হিসেবে। মাদারিপুরে তার পৈতৃক নিবাস হলেও তিনি এলাকায় যান না, কারণ একবার ত্রান বিতরণের সময় তাকে মানুষ ঝোলার ছেলে বলে গালি দিয়েছিল।
করফাঁকি ও বিদেশে অর্থ পাচারে অভিনব কারিগর:
নামে বেনামে অর্জিত সম্পদের আয়-মুনাফা গুলো লুকিয়ে রাখার জন্য সাবেক চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন কাদের সিনথেটিক মিল, এ এ সিনথেটিক ইয়ার্ন মিল, এমএস স্পিনিং, এমএসএ স্পিনিং, এ এ নিট স্পিন লি. প্রতিষ্ঠান গুলোতে বন্ডের ঘোষণা বহির্ভূত কাঁচামাল স্টোর করে রাখেন। সাহাবুদ্দিন একাধারে বাংলাদেশ, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, সাইপ্রাস,ও আমেরিকার পাসপোর্টধারী। নিজ নামে, স্ত্রী আছমা আহমেদ, মেয়ে সাদিয়া রাইয়ান আহমেদ, বড় ছেলে সামেয় আহমেদ, ছোট ছেলে লোকমান আহমেদ এবং আজ্ঞাবহ এমডি আবুল হাসেম শিরিন এর নামে উল্লিখিত দেশ সমূহে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচার করে বিশাল সম্পদ গড়েছেন। কথিত আছে সাহাবুদ্দিন নাকি কানাডার অন্টারিও প্রদেশের অন্যতম ধনীদের তালিকায় প্রাধান্য পেয়েছেন। কারাগারেও আটক সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এর সাথে অবৈধ আর্থিক সম্পর্কের সূত্রে তিনি বাংলাদেশের সকল এয়ারপোর্ট, মেট্রোরেল স্টেশন গুলোতে এটিএম বুথ স্থাপন করার অনুমতি পেয়ে যান। এছাড়াও প্রতিটি ব্রিজের অটোমেটেড টোল আদায় সিস্টেম স্থাপন করার ব্যবসায় তিনি একাই বাগিয়ে নেন।
২০২০ সালের ১৫ ডিসেম্বর সদ্য সাবেক আইনমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এর মা জাহানারা হকের নামে শিডিউল ব্যাংক হিসেবে সিটিজেন ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু করে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। আইনমন্ত্রীর মা জাহানারা হক মৃত্যুর কারণে স্ত্রী-সন্তানবিহীন আনিসুল হকের আস্থাভাজন ও ক্যাশিয়ার হিসেবে পরিচিত তৌফিকা করিম। তাকে করা হয় আনিসুল হকের মালিকানাধীন সিটিজেন চার্টার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও একটি বেসরকারি টিভির নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান; সাবেক এই মন্ত্রী ও তার বান্ধবী ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি ও লুটপাট করে দেশ-বিদেশে গড়েছেন হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ। ক্ষমতার পটপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই তৌফিকা করিম চলে গেছেন আত্মগোপনে। কানাডায় তার ছেলের কাছে পালিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। সেখানেই রয়েছে তার বিপুল সম্পদ।
সিটিজেন ব্যাংকের পরিশোধিত মূলধনের জোগানদাতা ও নিয়ন্ত্রণকারী- সাহাবুদ্দিন-
১৬ নভেম্বর ২০২০ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান সিটিজেন ব্যাংকের প্রথম ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সাইদুল হাসান । তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। যা বিডি নিউজ ২৪ এ নভেম্বর ১৬, ২০২০ প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া সাইদুল হাসানের মৃত্যুতে লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স টু হেল্পলেস প্রিজনার্স অ্যান্ড পারসনসের (এলএএইচপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তৌফিকা আফতাব গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তৌফিকা আফতাবই পরবর্তীতে সিটিজেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন।
মূল ঘটনা হল সিটিজেন ব্যাংকে যোগদানের আগে তিনি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন এবং সাহাবুদ্দিনের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে বিশেষ পরিচিত ছিলেন। আইনমন্ত্রী হবার আগে আনিসুল হকের নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ৬ লাখ, আর সিটিজেন ব্যাংক করার সময় তার নগদ টাকার পরিমাণ দেখান ৪০ কোটি টাকা। কিন্তু সিটিজেন ব্যাংক গঠনের শর্তানুযায়ী ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন ৫০০ কোটি টাকা পূরণ করার জন্য এই টাকা উদ্যোক্তা পরিচালকদেরকে আরজেএসসি ফরম ১১৭ (মালিকানা পরিবর্তনের ফরম) এবং শেয়ার হস্তান্তর সংক্রান্ত অপ্রত্যাহারযোগ্য আমমোক্তারনামাতে সই নিয়ে সমূদয় অর্থ পরিশোধ করেন কথিত ব্যাংকিং মাফিয়া ঝোলা সাহাবুদ্দিন। তার মালিকানাধীন কাদের সিনথেটিক মিল, এ এ সিনথেটিক ইয়ার্ন মিল, এমএস স্পিনিং, এমএসএ স্পিনিং, এএ নিট স্পিন লিঃ হতে ওভার ইনভয়েন্স এর মাধ্যমে টাকা সরিয়ে সিটিজেন ব্যাংকে টাকার জোগান দেন সাহাবুদ্দিন৷ তিনি যেহেতু ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সর্বময় ক্ষমতার একক নিয়ন্ত্রণকারী, সেহেতু বেনামে তুলনামূলক কম সুদের লোন নিয়ে তা আবার সিটিজেন ব্যাংকে বেশী সুদে বিনিয়োগ করেছেন। এই পরিশোধিত মূলধনের টাকা এবং বেনামে লোনের টাকার বিনিয়োগ সুরক্ষা দিতে নিজের একান্ত বিশ্বস্ত সাইদুল হাসান কে ডাচ-বাংলার ডিএমডির পদ থেকে নিয়ে সিটিজেন ব্যাংকের এমডি পদে নিয়োগ দেন। মোদ্দাকথা হলো সাহাবুদ্দিনই সিটিজেন ব্যাংকের নিয়ন্ত্রক। আর তা হল আনিসুল হক ও ডাচ-বাংলার অবৈধ উপার্জিত অর্থের প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত।
সাহাবুদ্দিন পরিবারকে অবৈধভাবে আর্থিক সুবিধা দেওয়া অবৈধ অর্থ উপার্জন পাচার সহ সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ড ইন্ধন দেয়ার সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিনের দুটি নাম্বারে কয়েকদিন ধরে ফোন করা হলেও রিসিভ করেনি। খুদে বার্তা দেওয়া হলেও উত্তর পাওয়া যায়নি। সর্বশেষ ডাচ-বাংলা গণসংযোগ কর্মকর্তা মো.সাগিরের সাথে একাধিকবার অনুরোধ করা হলেও তাদের কোনো বক্তব্যই পাওয়া যায়নি।





