শীতে যে সবজি খাওয়ার যে উপকার

বাংলাবাজার পত্রিকা ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:২০ অপরাহ্ন, ২৩ জানুয়ারী ২০২৪ | আপডেট: ৭:২০ পূর্বাহ্ন, ২৩ জানুয়ারী ২০২৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

শীতকালে প্রচুর মৌসুমী সবজি পাওয়া যায় বাজারে। শীতের সবজির উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। শীতকালীন সবজি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই ঋতুতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন রঙের শাক–সবজি খেতে পারেন। যা শরীরে বেশি ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের জোগান দেবে।

শীতের কয়েকটি সবজির উপকারিতার কথা জেনে নেওয়া যাক—

আরও পড়ুন: যে ৩টি খাবার খেলে পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে

টমেটো

টমেটোতে রয়েছে অ্যামিনো অ্যাসিড যা মেদ কমাতে সাহায্য করে। টমেটোতে থাকা ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও এটি খুবই উপকারী। টমেটোতে লাইকোপিন নামের একটি উপাদান পাওয়া যায়। এছাড়া এতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যা কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি রোধ করে ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয় প্রতিদিন টমেটো খেলে। এতে থাকা ফাইবার হজমে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম ও উপকারী কিছু ভিটামিন মেলে টমেটোতে। এসব উপাদান হাড়ের ক্ষয় রোধ করে হাড়কে মজবুত রাখে।

আরও পড়ুন: জেনে নিন দাম্পত্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার সঠিক সময় ও উপায়

ফুলকপি

শীতকালের সবজির মধ্যে ফুলকপি অন্যতম। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস ফুলকপি। ফুলকপি ওজন কমাতে সহায়তা করে। ফুলকপির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যানসারের বিরুদ্ধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এতে কোলাইন আছে, যা স্মৃতিশক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ফুলকপিতে থাকা উপাদান কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ এবং পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখতে সহায়তা করে। ফুলকপিতে থাকা ফাইবার রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত যে কেউ ফুলকপি খেতে পারেন। কারণ ফুলকপিতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম থাকে।

বাঁধাকপি 

বাঁধাকপি ভিটামিন সি, ফাইবার এবং ভিটামিন কে সমৃদ্ধ সবজি। বাঁধাকপিতে থাকা ফাইবার হজমে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি খারাপ কোলেস্টেরল কমায় এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে। টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায় বাঁধাকপি। বাঁধাকপিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের প্রদাহ দূর করে। যারা ওজন কমাতে চান, তাঁরা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় বাঁধাকপি রাখতে পারেন। বাঁধাকপি ক্যানসার প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাঁধাকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যআঁশ, যা ওজন কমাতে সহায়তা করে। 

শিম

শিমে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ফাইবার ও ভিটামিন ডি আছে। শিমে পাচক আঁশ থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া কোলন ক্যানসার প্রতিরোধ করে শিম। শিমে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি এই দুটি উপাদান আছে। এই দুটি উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। প্রচুর আঁশ থাকায় শিম কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। যারা ওজন কমাতে বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাঁদের জন্য কম ক্যালরিযুক্ত পুষ্টিকর খাবার হিসেবে শিম হতে পারে আদর্শ। এ ছাড়া ফুসফুস ভালো রাখে শিম।

মুলা

ওজন কমাতে খাদ্যতালিকায় মুলা রাখতে পারেন। মুলায় প্রচুর ফাইবার আছে। এতে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয়। এ ছাড়া শরীরে পানি ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে মুলা। মুলায় আছে পটাশিয়াম, যা শরীরে পটাশিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রক্তপ্রবাহ ঠিক রাখে। মুলা খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এতে আছে অ্যান্থোসায়ানিন, যা হৃদ্‌যন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। এ ছাড়া মুলা শ্বাসতন্ত্রকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে। মুলায় পটাশিয়াম, ফোলেট এবং ফাইবার রয়েছে। তাই পেটের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়তা করে মুলা। 

গাজর 

গাজরে থাকা পুষ্টি উপাদান ক্যানসার প্রতিরোধে এবং ক্যানসারের কোষ তৈরিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। চোখে ভালো রাখে গাজর। বার্ধক্যজনিত দৃষ্টিশক্তির ঝুঁকি কমাতে গাজর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে গাজর। গাজরে থাকা ফাইবারও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গাজর চুল পড়া কমায়, চুলকে শক্ত ও মজবুত করে। গাজরের ভিটামিন সি ও বিটা ক্যারোটিন  সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে ত্বকের কোষ রক্ষা করে। গাজর কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। গাজরের আলফা ক্যারোটিন উপাদান হার্টের সুরক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখে।