দৈনন্দিন সাত অভ্যাসে নীরবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কিডনি

কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা নীরবে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে। এটি শরীর থেকে বর্জ্য ফিল্টার করে, তরল ও লবণের ভারসাম্য বজায় রাখে, হরমোন তৈরি করে এবং শরীরের রাসায়নিক ভারসাম্য রক্ষা করে। তবে এই অঙ্গটি এতটাই নীরবে কাজ করে যে এর ক্ষতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেরিতে ধরা পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কিডনি রোগকে বলা হয় "নীরব ঘাতক"। এটি বিশ্বের অন্যতম অবহেলিত স্বাস্থ্য সমস্যা। আন্তর্জাতিক নেফ্রোলজি সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮৫০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ কিডনি রোগে ভুগছেন। এর মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ (CKD) এবং তীব্র কিডনি আঘাত (AKI) উভয়ই অন্তর্ভুক্ত। স্পষ্ট লক্ষণ প্রকাশের আগেই কিডনি কার্যকারিতার ৯০% পর্যন্ত নষ্ট হতে পারে।
আরও পড়ুন: শাহরুখ খানের ফিটনেসের রহস্য জানালেন বিশেষজ্ঞ
দৈনন্দিন কিছু সাধারণ অভ্যাস অজান্তেই কিডনির ক্ষতি ত্বরান্বিত করে। নিচে এমন সাতটি অভ্যাস তুলে ধরা হলো, যা থেকে সাবধান থাকা জরুরি—
দীর্ঘস্থায়ী ডিহাইড্রেশন:
আরও পড়ুন: আজ বিশ্ব ডাক দিবস
পর্যাপ্ত পানি না খেলে কিডনিকে প্রস্রাব ঘনীভূত করতে বেশি পরিশ্রম করতে হয়, যা ধীরে ধীরে ক্ষতির কারণ হয়।
অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ:
অতিরিক্ত সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়ায়, যা কিডনির রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ফিল্টারিং ক্ষমতা কমায়।
অতিরিক্ত চিনি ও সোডা পানীয়:
সোডা বা মিষ্টিজাত পানীয় ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি করে এবং কিডনির ওপর চাপ সৃষ্টি করে।
অতিরিক্ত প্রোটিন ও ফসফরাসযুক্ত খাবার:
অতিরিক্ত প্রাণিজ প্রোটিন ও প্রক্রিয়াজাত খাবার কিডনিকে অতিরিক্ত বর্জ্য ফিল্টার করতে বাধ্য করে।
ব্যথানাশক ওষুধের ঘন ব্যবহার:
আইবুপ্রোফেন, অ্যাসপিরিনের মতো ওষুধ দীর্ঘদিন ব্যবহারে কিডনির রক্তপ্রবাহ কমিয়ে ক্ষতি ঘটাতে পারে।
ঘুমের অভাব ও মানসিক চাপ:
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, উচ্চ রক্তচাপ ও প্রদাহ বাড়ে, যা কিডনির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন:
এগুলো কিডনির রক্তনালী সংকুচিত করে, শরীরের পানিশূন্যতা ও রক্তচাপের সমস্যা বাড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, পর্যাপ্ত পানি পান, সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম ও ঘুমের অভ্যাস বজায় রাখলে কিডনি দীর্ঘদিন সুস্থ রাখা সম্ভব।