ঢাকার রিকশা এখন ইউনেস্কোর তালিকায়

Babul khandakar
বাংলাবাজার পত্রিকা রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৭:৪৭ অপরাহ্ন, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩ | আপডেট: ৫:১০ অপরাহ্ন, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রিকশার নগরী হিসেবে পরিচিত রাজধানী ঢাকা। সেই ‘রিকশা ও রিকশাচিত্র’ জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা- ইউনেস্কোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার কাসান শহরে ইউনেস্কোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যর আন্তঃসরকারি কমিটির ১৮তম অধিবেশনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। সংস্থাটি বিকেলে তার এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক পোস্টের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতির কথা জানিয়েছে। গত সোমবার থেকে শুরু হয় ইউনেস্কোর আন্তঃসরকারি কমিটির এই অধিবেশন। আজ বুধবার প্রায় তিন ঘণ্টার অধিবেশনে উপস্থাপন করা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিমূর্ত ঐতিহ্য। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতিনিধিদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পর উপস্থাপন করা হয় তাঁদের নিজ নিজ দেশের ঐতিহ্য। ইউনেস্কোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যর আন্তঃসরকারি কমিটির ১৮তম অধিবেশন শেষ হবে আগামী শনিবার।

এ সভায় ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি খন্দকার এম তালহা এবং ফ্রান্সে বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি (রাজনীতি) মো. ওয়ালিদ বিন কাশেম উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন: সিএমপির সাংবাদিক নির্যাতন: ঘুসি আকবরের পর ডিসি আমিরুল

এর আগে ২০০৮ সালে দেশের বাউল গান, ২০১৩ সালে জামদানি বুনন শিল্প, ২০১৬ সালে মঙ্গল শোভাযাত্রা এবং ২০১৭ সালে শীতল পাটি বুনন শিল্প সংস্থাটির ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এবার এই তালিকায় নতুন যুক্ত হল রিকশা ও রিকশাচিত্র।

এই অধিবেশন সরাসরি ইউনেস্কোর ফেসবুক পাতায় সম্প্রচার করা হয়। বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় শুরু হয় আজকের অধিবেশন। এতে বাংলাদেশের রিকশা ও রিকশা শিল্প নিয়ে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।

আরও পড়ুন: ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা

তাতে বলা হয়, ঢাকা শহরের তিন চাকার এই বাহনটিতে থাকে নানা রঙের বৈচিত্র্য। বাহন হিসেবে শহরের মানুষের প্রথম পছন্দের তালিকায় রয়েছে রিকশা। একই সঙ্গে উল্লেখ করা হয়, রিকশাচিত্র শুধু একটি শিল্প নয়, এটি মানুষে সমকালীন জীবনের গল্প বলার চলমান ক্যানভাস। রিকশাচিত্রের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের প্রকৃতি থেকে শুরু করে নানা বিষয়ের মধ্যে চলচ্চিত্রের অভিনেতাদের মুখচ্ছবিও উঠে আসে।

‘বিমূর্ত ঐতিহ্যের সুরক্ষা’ স্লোগান নিয়ে শুরু হওয়া ইউনেস্কোর এ অধিবেশনে এবার আরও স্বীকৃতি পেয়েছে ভারতের গরবা, মধ্যপ্রাচ্যের হারিসসহ সাতটি ঐতিহ্য এবং কিউবা, মেক্সিকোর বলেরোসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আরও বেশ কিছু বিমূর্ত ঐতিহ্য।

উল্লেখ্য, গত ৬ বছর ধরে এ চিত্রকর্মের নিবন্ধন ও স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও প্রথম চেষ্টায় তা ব্যর্থ হয়। তবে ২০২২ সালে পুনরায় নথিটি জমাদানের সুযোগ প্রদান করা হলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ও প্যারিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় সম্পূর্ণ নথিটি নতুনভাবে প্রস্তুত করা হয়।

এ অর্জনের মাধ্যমে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সাফল্যের মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত হলো। এর আগে, গত ১৫ নভেম্বর ৪২তম সাধারণ পরিষদের সভায় বাংলাদেশ ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়। ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের এ ধারাবাহিক সাফল্যকে সংশ্লিষ্ট মহল বাংলাদেশের কূটনৈতিক অগ্রযাত্রা হিসেবে অভিহিত করেন।