‘নাবিকদের ফেরত আনার লক্ষ্যে আমরা অবিচল’

Abid Rayhan Jaki
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৭:৪৩ অপরাহ্ন, ১৪ মার্চ ২০২৪ | আপডেট: ৬:১২ পূর্বাহ্ন, ১৫ মার্চ ২০২৪
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মারিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম বলেছেন, ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ বাংলাদেশি নাবিক সুস্থ আছেন। তাদেরকে জাহাজসহ নিরাপদে ফেরত আনাই সরকারের প্রথম লক্ষ্য। এ লক্ষ্য থেকে আমরা বিচ্যুত হবো না।

বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জিম্মি বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় পূর্বে অপহৃত দেশি জাহাজ ‘জাহান মনি’ এবং মালয়েশিয়ার জাহাজ ‘আল-বেদো’তে কর্মরত সব বাংলাদেশি নাবিকদের অক্ষত উদ্ধারের কথাও সংক্ষেপে জানান সচিব। বর্তমানে জিম্মি এমভি আব্দুল্লাহ গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ার জলদস্যুর কবলে পড়ে।

আরও পড়ুন: ১৫ আগস্ট ঘিরে আ. লীগ-ছাত্রলীগকে সড়কে নামতে দেওয়া হবে না: ডিএমপি কমিশনার

জলদস্যুরা মুক্তিপণ চাওয়া নিয়ে বলেন, গণমাধ্যমে মুক্তিপণের কথা প্রকাশিত হয়ে থাকলে তা কল্পিত। আমাদের কাছে এখনো কোনো মুক্তিপণ তারা চায়নি, মুক্তিপণের ব্যাপারে কোনো যোগাযোগও দস্যুরা করেনি। আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টায় আছি। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী, নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, জাহাজের মালিকসহ সব পক্ষের সঙ্গে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

সমুদ্রে জাহাজ চলাচলের নানা ঝুঁকির রুট রয়েছে। তবে আমাদের এমভি আব্দুল্লাহর উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রুট দিয়ে যায়নি দাবি করে খুরশেদ আলম জানান, তারপরও জলদস্যুরা অপেক্ষায়ই ছিল বা এ নিয়ে ভিন্নমত আছে। জলদস্যুরা জাহাজটির দখল নিয়ে সোমালিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে আজকে (বৃহস্পতিবার) ভোর নাগাদ সোমালিয়ার কাছাকাছি তারা নোঙর করেছে। বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা খবর রাখছি, জলদস্যুদের প্রায় ৬০ জন জাহাজে অবস্থান নিয়েছে এবং বাংলাদেশি ২৩ নাবিক সুস্থ আছেন।

আরও পড়ুন: সরকারি প্রশিক্ষণে বাড়লো ভাতা ও সম্মানী

সচিব নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, জাহান মনি নামের একটি জাহাজ ২০১০ সালে এমন ঘটনার মুখে পড়েছিল। ১০০ দিনের মাথায় সকল নাবিকসহ জাহাজটি আমরা ফেরত আনতে পেরেছিলাম। অপর এক মালয়েশিয়ান জাহাজ ‘আল-বেদো’ যখন জলদস্যুদের কবলে পড়ে তখন সাতজন বাংলাদেশি, দুইজন ইরানি, তিনজন ভারতীয়, দুইজন পাকিস্তানি ও পাঁচজন শ্রীলঙ্কান নাবিক ছিল। ঐ জাহাজের মালয়েশিয়ার মালিক কোনো দায়িত্ব না নেয়ায় জাহাজটি আটকে থাকে আড়াই বছর। পরে তা ডুবে যায়, কিছু প্রাণহানিও ঘটে উল্লেখ করে এডমিরাল বলেন, আমরা পুরো সময় জুড়েই কাজ করেছি এবং প্রায় তিন বছর চার মাস পরে আমরা নেগোসিয়েশন করে কেনিয়ার সেনাবাহিনী দিয়ে বাংলাদেশি নাবিকদের অক্ষত উদ্ধার করে এনেছি।

এসব ঘটনায় সময় একটা ব্যাপার দাবি করে ইউনিট সচিব বলেন, আমরা এখনও জানি না জলদস্যুদের কি দাবি-দাওয়া। আমরা যদি জানতে পারি, তখন হয়তো কৌশলগত ভাবেই গণমাধ্যমকে পুরোপুরি জানাতে পারব না। তবে যেভাবে ‘জাহান মনি’কে আনা হয়েছে, যেভাবে ‘আল-বেদো’ থেকে নাবিকদের অক্ষত আনা হয়েছে সেই অভিজ্ঞতার আলোকে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। ‘জাহান মনি’ আনতে ১০০ দিন লেগেছে, আর মালয়েশিয়ান জাহাজ থেকে সাতজন ক্রু ফেরত আনতে লেগেছে তিন বছর চারমাস বলে উল্লেখ করেন তিনি।