ইন্টেরিমে সন্দেহের নেপথ্যে টক্সিক সার্কেল কারা

শেখ হাসিনার স্বৈরাচারীর শাসন উৎখাতে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নোবেল বিজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনুস সর্ব স্তরের জনতার শ্রদ্ধা ভালোবাসায় অভিষিক্ত হয়ে প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। ছাত্র-জনতার পাশাপাশি সকল রাজনৈতিক দল তাকে অকুণ্ঠ সমর্থন করেছিল। বিধ্বস্ত ভঙ্গুর প্রশাসন পুনর্গঠনে সেনাবাহিনীও সর্বাত্মক সহায়তা করে আসছিল।
রাজনৈতিক সংস্কার, স্বৈরাচারীর বিচার ও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছিল। ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছিল। কিন্তু এতে আশপাশীল ছিল না রাজনৈতিক দলগুলো। কারণ সরকারের ভিতরেই বিভিন্ন বিষয়ের কানাঘোষা চলছিল।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজে একযোগে ২৯ কর্মকর্তার বদলি
এরই মধ্যে মানবিক করিডোর, চট্টগ্রাম বন্দরসহ বিচার ও সংস্কার নিয়ে একের পর মতবিরোধ হচ্ছিল সরকারের সাথে অংশী জন দের। পাশাপাশি বিভিন্ন দাবির দাওয়া আদায়ের নামে গত ৯ মাসই অস্থির ছিল ইউনুস সরকার। ব্যক্তিগতভাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কোনো সমালোচনা কোন রাজনৈতিক দল বা মহল করেনি।সব সময় তার প্রতি ও সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু এরপরেও ছায়া যুদ্ধ চলছে সমালোচনা হয়েছে সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের দাবি আদায় নিয়ে।৷ দৈনিক মানবজমিন সহ কয়েকটি পোর্টাল ও পেজে ডক্টর ইউনুস কে রাজনৈতিক দল ও সর্বমহল থেকে বিচ্ছিন্ন করতে সন্দেহ তৈরিতে কয়েকজন ব্যক্তির ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন।
সরকারের ভিতরে চারজন ও সরকারের বাইরে তিনজন লোককে চিহ্নিত করেছেন। তাদের সুদূরপ্রসারী অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়েই গণঅভ্যুত্থানকারী শক্তি বিরক্ত হয়েছে। অনিশ্চিত হয়েছে নির্বাচনী প্রক্রিয়া। ধীরে ধীরে সর্বত্রই সন্দেহ সংশয় বেড়েছে।৷ তবে অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সামী এটিকে টক্সিক চিহ্নিত করেছেন। ফেসবুক পেজে তিনি ছবিসহ ডজন খানেক ব্যক্তির চিহ্নিত করেছেন। আর বক্তব্যটি তুলে ধরা হলো বাংলাবাজারের পাঠকদের জন্য প্রফেসর ইউনূস একজন ৮৪ বছর বয়সী সম্মানিত ও সমাদৃত ব্যক্তিত্ব। তাঁর অর্জনের সিংহভাগই নিজ যোগ্যতা ও পরিশ্রমের ফসল। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগে স্বৈরাচার হাসিনা সৃষ্ট আইনি ঝামেলা ব্যতীত তেমন কোন সমস্যার সম্মুখীন তিনি হননি। এর অন্যতম কারণ হতে পারে তাঁর আশেপাশে সব সময়ই বিশ্বস্ত, শিক্ষিত, সৎ মানুষেরা ছিলেন।
আরও পড়ুন: ১৫ আগস্ট ঘিরে আ. লীগ-ছাত্রলীগকে সড়কে নামতে দেওয়া হবে না: ডিএমপি কমিশনার
কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বভার গ্রহণের পর, তাঁর পাশে চিহ্নিত কিছু ব্যক্তি (৩-৪) জন, একটা বিষ বলয় বা টক্সিক সার্কেল তৈরি করেছে। এদের পরিচয় আমি আগেও আপনাদের জানিয়েছি, নতুন করে জানানোর কিছু নেই। নূরুল ইসলাম ভূঁইয়া ছোটন ও আরো কয়েকজন কুচক্রীর পরামর্শে এরা প্রতিনিয়ত প্রফেসর ইউনূসের কাছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব, বিএনপি ও জামায়াতের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করে একটা কুৎসিত রকমের চক্রান্ত করছে। এরা এতটাই উচ্চাভিলাষী যে, দেশের মূলধারার কোন রাজনৈতিক দলের অস্তিত্বই তারা রাখতে চায়না এবং সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে দেশকে একটা গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে চায়। লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন কারা প্রতিনিয়ত সেনা নেতৃত্ব, বিএনপির নেতৃত্ব, জামায়াত নেতৃত্ব — প্রত্যেককে ভিলিফাই করেছে, করে চলেছে। এরা সকলেই একসূত্রে গাঁথা।
হাসিনা কাল্ট যেভাবে গুম-খুন-নির্যাতনের মাধ্যমে দেশে একটা ভয়ের চক্র গড়ে তুলেছিলো, এই ছোটন চক্র দেশে তেমনি একটা সার্কেল তৈরি করেছে, যা জনমনে ঘৃণা ও অজানা আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
আশা করছি সকল রাজনৈতিক দল ও দেশের সিভিল সোসাইটির সদস্যরা সমন্বিতভাবে এদের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করবেন, প্রফেসর ইউনূস যেন সম্মানের সাথে তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব সফলতার সাথে সম্পন্ন করে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারের কাছে রাষ্ট্রভার হস্তান্তর করতে পারেন এমন ক্ষেত্র তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবেন।
আপনার দেশের নিরাপত্তা বাহিনী ও এর নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখুন, তাঁরা আপনাদের নিরাপত্তা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।