দুই সন্তানসহ মাকে পিটিয়ে হত্যা

মুরাদনগরে আতঙ্ক, কডইবাড়ী জনশূন্য

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:১২ অপরাহ্ন, ০৪ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ২:৩৪ পূর্বাহ্ন, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়ী গ্রামে এক নির্মম গণপিটুনিতে মা, ছেলে ও মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে পুরো গ্রামে। গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষ সদস্যরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় কড়ইবাড়ী এখন প্রায় জনশূন্য।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সকালে উপজেলার আকবপুর ইউনিয়নের কড়ইবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন—জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), ছেলে রাসেল মিয়া (২৮) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (২৩)। আহত অবস্থায় উদ্ধার হওয়া আরেক মেয়ে রুমা (২৮) বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন: সিএমপির সাংবাদিক নির্যাতন: ঘুসি আকবরের পর ডিসি আমিরুল

নিহত রাসেলের স্ত্রী মীম আক্তার জানান, “৮০-৯০ জন লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। রুবিকে পিটিয়ে উঠানে ফেলে রাখে। মেয়েরা বের হলে তাদেরও মারধর করা হয়।”

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, হামলার সময় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ ও মেম্বার বাচ্চু现场 উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেননি। বরং লোকজনকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল— “চেয়ারম্যান সাহেব আছেন, কিছু হবে না।”

আরও পড়ুন: ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা

চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহ দাবি করেন, “আমরাও হামলার শিকার হয়েছিলাম। পরে উত্তেজিত গ্রামবাসী এমন ঘটনা ঘটায়।”

এলাকাবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, নিহত পরিবারটি দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারে জড়িত থাকলেও, ঘটনার সূত্রপাত হয় একটি মোবাইল চুরি নিয়ে। তবে এমন বর্বর হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার নজির আহমেদ খান বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তদন্ত চলছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তবে আমরা নিহতদের পরিবারকে মামলা দায়েরে সময় দিচ্ছি, যাতে তারা কোনো চাপ অনুভব না করেন।”

বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, এখনও কোনো মামলা হয়নি, তবে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই পুলিশি অভিযান চলছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

শুক্রবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কড়ইবাড়ী গ্রামে অধিকাংশ বাড়িঘর ফাঁকা, তালা ঝুলছে দরজায়। গ্রামজুড়ে ছড়িয়ে আছে আতঙ্ক, নীরবতা ও শোকের ছায়া।