নির্বাচিত সরকার ছাড়া ঋণের অর্থ ছাড়বে না আইএমএফ

Sadek Ali
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৮:২৭ পূর্বাহ্ন, ২১ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৮:২৭ পূর্বাহ্ন, ২১ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশের জন্য ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে নতুন অবস্থান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সংস্থাটি জানিয়েছে, নির্বাচিত সরকার না আসা পর্যন্ত ঋণের অর্থ ছাড় দেওয়া হবে না। নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর সংস্কার কর্মসূচির ধারাবাহিকতা বজায় রাখার বিষয়ে আলোচনা করেই ঋণের অর্থ ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

আইএমএফ-এর এই অবস্থান উঠে এসেছে সম্প্রতি ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক–আইএমএফ বার্ষিক সভার সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে। বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ও আইএমএফ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই আইএমএফ জানায়, আগামী নির্বাচনের পর নতুন সরকার গঠনের পরই তারা আলোচনায় বসবে।

আরও পড়ুন: পরিসংখ্যানবিদরা স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজিটাল সৈনিক, অথচ পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত

গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানান, ডিসেম্বরের মধ্যে ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের আশা ছিল, তবে আইএমএফ বলেছে নির্বাচনের আগে কোনো অর্থ ছাড় করবে না। তারা নতুন সরকারের কাছ থেকে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পেতে চায়।

আইএমএফ-এর এই কিস্তির পরিমাণ ৮০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে গভর্নর জানিয়েছেন, বর্তমানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও ডলারের সরবরাহ ভালো অবস্থায় রয়েছে। ফলে এই অর্থ ছাড় না হলেও বড় ধরনের প্রভাব পড়বে না।

আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষায় হাওড়ে এক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প স্থগিত করল একনেক

তিনি বলেন, আইএমএফ-এর ঋণ না এলেও সমস্যা নেই, তবে তাদের নীতিসহায়তা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আইএমএফ যদি কঠোর শর্ত আরোপ করে, বাংলাদেশ তা মেনে নেবে না। এখন আমাদের অর্থনীতি অনেকটা স্থিতিশীল অবস্থায় এসেছে।

অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইএমএফ তাদের অবস্থানকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করছে। নির্বাচনের আগে কিস্তি স্থগিত রাখলে বর্তমান সরকার চাপের মুখে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে।

সূত্র জানায়, ২৯ অক্টোবর আইএমএফ-এর একটি মিশন ঢাকায় আসছে। তারা দুই সপ্তাহ অবস্থান করে চলমান সংস্কার অগ্রগতি মূল্যায়ন করবে। তাদের প্রতিবেদনেই নির্ভর করবে ঋণের অর্থ ছাড়ের সিদ্ধান্ত।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ বর্তমানে ৩ হাজার ২১৪ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। রেমিট্যান্সে ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি, রপ্তানিতে গড়ে ৫.৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এবং আমদানি নিয়ন্ত্রণে থাকায় অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরেছে।

২০২২ সালের শেষ দিকে বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ আইএমএফ-এর কাছ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা চায়। পরে তা বাড়িয়ে ৫৫০ কোটি ডলার করা হয়। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ পাঁচ কিস্তিতে ৩৬০ কোটি ডলার পেয়েছে।