কত সম্পদের মালিক তারেক রহমান, জানা গেল হলফনামায়
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৬ (সদর) ও ঢাকা-১৭ (গুলশান–বনানী–বারিধারা–ক্যান্টনমেন্ট) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে যাচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় তিনি নিজের ও পরিবারের আর্থিক অবস্থার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরেছেন।
হলফনামা অনুযায়ী, তারেক রহমান দ্বৈত নাগরিক নন। তার বর্তমান ঠিকানা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের গুলশান এভিনিউয়ের এন ই-ডি-৩/বি নম্বর বাসা। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা উচ্চ মাধ্যমিক এবং বয়স ৫৭ বছরের বেশি। পেশা হিসেবে তিনি রাজনীতিকে উল্লেখ করেছেন। তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান পেশায় চিকিৎসক এবং কন্যা জাইমা জারনাজ রহমান ছাত্রী।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়াকে সশস্ত্র বাহিনীর গার্ড অব অনার
হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি মামলা নেই। ২০০৭ সাল থেকে তার বিরুদ্ধে মোট ৭৭টি মামলা দায়ের হলেও সেগুলোর কোনোটি থেকে খালাস, কোনোটি প্রত্যাহার, কোনোটি খারিজ এবং কোনোটি থেকে তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন।
সম্পদের হিসাবে তারেক রহমানের নামে কোনো বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট বা বাণিজ্যিক স্থাপনা নেই। তার শেয়ার, বন্ড ও সঞ্চয়পত্রসহ ব্যাংক আমানতের পরিমাণ ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫৩ টাকা। ব্যাংক ও নগদ মিলিয়ে তার কাছে রয়েছে ৩১ লাখ ৫৮ হাজার ৪২৮ টাকা। তার স্ত্রীর কাছে রয়েছে ৬৬ লাখ ৫৪ হাজার ৭৪৭ টাকা।
আরও পড়ুন: নাহিদ পরামর্শক, নিজের ও স্ত্রীর সম্পদের হিসাব জানালেন
হলফনামা অনুযায়ী, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়—এমন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে মোট ৫ লাখ টাকার। কোম্পানি শেয়ারের মূল্য দেখানো হয়েছে ৪৫ লাখ টাকা এবং কোম্পানির অংশীদারত্বমূল্য ১৮ লাখ টাকা।
তারেক রহমানের নিজ নামে ব্যাংকে এফডিআর ও অন্যান্য আমানত রয়েছে ৯০ লাখ ২৪ হাজার ৩০৭ টাকা এবং অতিরিক্ত আমানত রয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে ৩৫ লাখ টাকার এফডিআর ও ১৫ হাজার ২৬০ টাকার সঞ্চয়ী আমানত রয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, তার নামে মাত্র ২ হাজার ৯৫০ টাকা মূল্যের গহনা ও ১ লাখ ৭৯ হাজার ৫০০ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নেই এবং বিদেশে তার কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পদও নেই।
কৃষিজমি বা গাড়ি তার নেই। তবে তার নামে ১ দশমিক ৪ শতাংশ অকৃষি জমি রয়েছে, যার মূল্য ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ১১১ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি। এছাড়া যৌথ মালিকানায় ৮০০ বর্গফুটের একটি দোতলা ভবন এবং ২ দশমিক ৯ শতাংশ জমির ওপর একটি ভবন রয়েছে, যা উপহার হিসেবে পাওয়া। নিজের নামে কোনো বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট নেই। তারেক রহমান, তার স্ত্রী ও কন্যার নামে কোনো সরকারি ঋণও নেই।
আয়কর রিটার্ন অনুযায়ী, তারেক রহমানের মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৯৬ লাখ ৮০ হাজার ১৮৫ টাকা। তার বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৭৬ হাজার ৩৫৩ টাকা এবং আয়কর পরিশোধ করেছেন ১ লাখ ১ হাজার ৪৫৩ টাকা।
অন্যদিকে, তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের মোট সম্পদ রয়েছে ১ কোটি ৫ লাখ ৩০ হাজার ১৯১ টাকা। তার বার্ষিক আয় ৩৫ লাখ ৬০ হাজার ৯২৫ টাকা এবং আয়কর দিয়েছেন ৫ লাখ ৫৭ হাজার ৭১৩ টাকা।
উল্লেখ্য, নির্বাচনি তফশিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র বাছাই চলবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা যাবে ৫ থেকে ৯ জানুয়ারি। আপিল নিষ্পত্তি হবে ১০ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। ২১ জানুয়ারি চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হবে ২২ জানুয়ারি এবং চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১২ ফেব্রুয়ারি।





