আজ ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস

Sanchoy Biswas
মোস্তাফিজুর রহমান বিপ্লব
প্রকাশিত: ৪:২৯ অপরাহ্ন, ০৬ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১২:০৯ পূর্বাহ্ন, ০৭ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

“আমি যুগে যুগে আসি, আসিয়াছি পুনঃ মহা বিপ্লব হেতু” বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার এই পঙক্তির  মতই আমাদের জাতীয় জীবনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের আবির্ভাব। জাতির প্রতিটি ক্রান্তিকালে ধুমকেতুর মতোই তার নেতৃত্বের আগমন জাতিকে চরম অস্থিরতা থেকে  আশা জাগানিয়া বার্তা দিয়েছিল। ২৫ মার্চ ১৯৭১ কাল রাত্রিতে পাক হানাদার বাহিনী যখন দেশের নিরস্ত্র মানুষের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেপ্তার ও অন্যান্য নেতারা আত্মগোপনে, কেউ সীমান্ত পার হচ্ছিল কিংকর্তব্যবিমূঢ়  জাতির সামনে কালুরঘাট কেন্দ্র থেকে ‘’’আমি ‘মেজর জিয়া বলছি ‘’ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে জাতিকে দিয়েছিলেন মুক্তির সংগ্রামের ডাক। পাকিস্তানি বাহিনীকে বিদ্রোহ করে নেমে যান  সশস্ত্র যুদ্ধের নেতৃত্বে। যুদ্ধ শেষে বিজয়ী বেশে আবার ফেরেন নিজ বাহিনীতে।

১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি ভারতীয় আধিপত্যের নাগপাশ ছিন্ন করে বাণিজ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে সরকার ক্ষমতা দখল করে। মাত্র আড়াই মাসের মাথায় ৩ নভেম্বর জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে একটি প্রতিবিপ্লব সংঘটিত হয়। ১৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ও জনপ্রত্যাশা পূরণের যে সুযোগ তৈরি হয়েছিল প্রতিবিপ্লবের তা নস্যাৎ কর হয়। এরপর জাসদ সমর্থিত বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার অতি উৎসাহী সেনা সদস্যরা কর্নেল আবু তাহেরের নেতৃত্বে আরেক অভ্যুত্থানে জেনারেল খালেদ মোশাররফকে হত্যা এবং খোন্দকার মোশতাককে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করলেও দেশের জনগণ এবং সেনাবাহিনীর সাধারণ সৈনিকরা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা সেনাবাহনী প্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে দেশের নেতৃত্ব অর্পিত করেন। আজকের আলোচিত ৩২ নম্বরে খালেদ মোশাররফের মায়ের নেতৃত্বে বিক্ষোভ ও দেশের আকাশে ভারতীয় বিমানের টহলে মানুষের মাঝে তিনদিন এক ভীতিকার পরিবেশ তৈরি করেছিল। বঙ্গভবন সেনাভবনে যুদ্ধাবস্থা সারা দেশেই একটি বিশৃঙ্খল, অরাজক ও দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশকে, জাতিকে অস্থির করে তুলেছিল। এ পরিস্থিতি থেকে সাম্য, সম্প্রীতি ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নিতে একাত্তরের বীর সেনানী জিয়াউর রহমান ধ্রুব তারকার মত আবির্ভূত হন এইদিনে। আজ সেই ৭ নভেম্বর আমাদের জাতীয় জীবনে ঐতিহাসিক বিপ্লব ও সংহতি দিবস। জাতির কঠিন সময়ে শক্তহাতে রাষ্ট্রের হাল ধরে জাতীয় ঐক্য ও সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন প্রোজ্জ্বল করে তুলতে সক্ষম হন।  ভারতীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অগণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা দখল করে রাখা ফ্যাসিবাদী শক্তি বিগত প্রায় ১৬ বছর ধরে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অত্যাচার নিপীড়নের স্টিমরোলার চালিয়েও দলটির অন্তর্গত ঐক্য জনসমর্থনে চির ধরাতে পারেনি। রাষ্ট্রশক্তির অন্যায্য ব্যবহারের মধ্য দিয়ে জনসমর্থন পুষ্ট কোনো রাজনৈতিক আদর্শকে নির্মূল করা যায় না। 

আরও পড়ুন: যে ফোর্স রয়েছে তাতে সবার নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়’: এসএমপি কমিশনার

স্বাধীনতা ও বিপ্লবকে ব্যর্থ করে দিতে ভারতীয় আধিপত্যবাদী শক্তি ৫ দশক আগে যেমন সক্রিয় ছিল, এখনো তেমনই আছে। শেখ হাসিনার পৈশাচিক দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠা ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে তাঁর ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে বিরতিহীনভাবে ভারত সমর্থিত অভ্যুত্থান বিরোধী ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতা চলছেই। দেশ আজ আরেকটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার বিপ্লবের চেতনা এবং ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবের চেতনা আজ এক অভিন্ন পথরেখায় মিলিত হয়েছে। 

ঐতিহাসিক এই দিনটি পালনে বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে। বিএনপি ১০দিনের কর্মসূচি পালন করছে। বিএনপির ভারপ্র্প্তা চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ উপলক্ষ্যে বাণী প্রদান করেছেন।

আরও পড়ুন: এ যাত্রায় আপনি যুক্ত হলে আমরা সফল হতে পারব: তাসনিম জারা