শনিবার উপদেষ্টা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক

নির্বাচন ঘিরে এসপি ডিআইজি নিয়োগ লটারিতে

Sanchoy Biswas
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ৮:১২ অপরাহ্ন, ২১ নভেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১১:৫৩ অপরাহ্ন, ২২ নভেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

অবশেষে পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বদলি ও পদোন্নতি সংক্রান্ত জট খুলতে শুরু করেছে। দীর্ঘদিন ধরে ফাইলবন্দি থাকা অর্ধশতাধিক ডিআইজির পদে পদোন্নতির এসএসবি’র মিটিং বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার, ডিআইজি ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ে নিয়োগ–বদলি ও শৃঙ্খলা বিষয়ে সবাইকে ডাকা হয়েছে শনিবার সকালে।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অতি নিকটে হলেও প্রশাসনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির প্রস্তুতি অনেক দিনের। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক ৬৪ জেলায় নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও বিভাগীয় কমিশনার পর্যায়েও বাছাই করে নতুন কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: অবসরে যাচ্ছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ

এর আগে নির্বাচন সংক্রান্ত প্রস্তুতি সভায় প্রধান উপদেষ্টা লটারির মাধ্যমে মাঠ প্রশাসনে নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। জেলা প্রশাসনের পর্যায়ে সেই নিয়োগ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ৬৪ জেলা প্রশাসককে বৈঠক নিয়ে বিশেষ বার্তা দিয়েছেন।

তবে পুলিশের মাঠ পর্যায়ে ও শীর্ষ পর্যায়ে পরিবর্তন এখনো দৃশ্যমান নয়। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি পদ শূন্য থাকলেও পদোন্নতির কোনো উদ্যোগ ছিল না। অনেক জেলার পুলিশ সুপার ও রেঞ্জ ডিআইজির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলেও তাদের বদলির পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পুলিশ প্রশাসনের স্থবিরতা, হতাশা, আগের মতই দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপপ্রয়োগের অভিযোগ বিদ্যমান।

আরও পড়ুন: পরপর তিন দফা ভূমিকম্পে আবারো কেঁপে উঠলো ঢাকা

আমি যদি একটু পর আবার ফোন করি, কোনো অসুবিধা আছে?

গত ১৯ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব ফরিদা খানম এক নোটিশে ২২ নভেম্বর শনিবার বেলা ১১টায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কক্ষে (কক্ষ নং-৩০৮, চতুর্থ তলা, ভবন নং-৮) জেলার এসপি, ডিআইজি ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের নিয়োগ–বদলি ও শৃঙ্খলা বিষয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান। সংশ্লিষ্ট সকল সদস্যকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন উপলক্ষে মাঠ পর্যায়ে পুলিশের বদলির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা মোতাবেক জেলা পুলিশ সুপারের জন্য যোগ্যদের তালিকা তৈরি করে কমিটিতে দেওয়া হবে। কমিটি যাচাই–বাছাই করে প্রধান উপদেষ্টার উপস্থিতিতে লটারির মাধ্যমে তাদের পদায়ন করবে।

গত সপ্তাহে ছয় জেলায় নতুন পুলিশ সুপার পোস্টিং দেওয়া হলেও আপাতত তাদের যোগদান করতে বারণ করা হয়েছে। তাদের জেলা পোস্টিংও হবে লটারির মাধ্যমে। লটারির মাধ্যমে ডিআইজি ও কমিশনারের পদায়নও হতে পারে। জানা যায়, এরপরই প্রধান উপদেষ্টা পুলিশ কর্মকর্তাদের কর্মস্থলে বিশেষ বার্তা পাঠাবেন।

এরপর লটারির মাধ্যমে থানার ওসি নিয়োগ করা হবে। ওসি নিয়োগের জন্য পুলিশ পরিদর্শকদের বাছাই করে একটি ফিট-লিস্ট তৈরি করা হয়েছে।

পুলিশে পদায়ন–পদোন্নতি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ চলে আসছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা রেঞ্জের পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আব্দুল মাবুদ বলেন, পুলিশের বদলি–পদোন্নতির জট খুলতে শুরু করেছে। ডিআইজি পদোন্নতির সিলেকশন বোর্ডের বৈঠক হয়েছে।

মাঠ পর্যায় থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত ফ্যাসিস্ট দোসর-মুক্ত একটি পেশাদার দক্ষ বাহিনী গড়ে তোলা সকলের দাবি। বিগত তিন বিতর্কিত নির্বাচনে যারা দায়িত্ব পালন করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নিতে হবে। পুলিশের বঞ্চিত পেশাদার কর্মকর্তাদের দ্রুত পদোন্নতি দিয়ে পদায়ন করলে আগামী নির্বাচনে তারা নিরপেক্ষভাবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারবে।

সাংবাদিক ও অপরাধ বিশ্লেষক এনামুল কবীর রূপম এ বিষয়ে বাংলা বাজার পত্রিকা কে বলেন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সর্বাগ্রে প্রয়োজন লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড। দলকানা পুলিশ সুপারদের বাদ দিয়ে নিরপেক্ষ দের নিয়োগ দিলে তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেতে সক্রম হবে। তবে নিয়োগ লটারীতে তাদেরকেই রাখতে হবে যারা পেশাদার। পেশাদারীত্বের বাইরে থাকা দলকানাদের কোনোভাবেই লটারিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না। এছাড়া সরকারেরও উচিত হবে পুলিশ প্রশাসনকে নিজেদের মতো করে পেশাদারিত্ব প্রদর্শনী এখানে কোন প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করলে সব আয়োজন ব্যর্থ হবে।