রংপুরে জৈষ্ঠ মাসে ষষ্ঠী উৎসব পালিত

বুধবার (১২ জুন) রংপুর নগরির ২০ নং ওয়ার্ডের পালপাড়া মদনমোহন ঠাকুরবাড়ি (আখরায়) ষষ্ঠী উৎসব পালিত। বাঙালির বারো মাসের তেরো পার্বণ তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব হল জামাইষষ্ঠী, জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীর রীতিতে এই আচার পালন করা হয়। সনাতন ধর্ম অবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিক লৌকিক আচার জামাইষষ্ঠী এদিন বিবাহিত মেয়ে ও জামাইকে নিমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করা হয়। হাজার বছর ধরে চলে আসা রীতি সনাতন ধর্মাবলম্বী হিন্দুদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসবে পরিণত হয়। উৎসবে পরিবার পরিজন নিয়ে খুশিতে মেতে ওঠে সকলেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে এই অনুষ্ঠান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আনন্দের। একটি উৎসবের আমেজ তৈরি হয় জামাই ষষ্ঠীকে কেন্দ্র করে। সনাতন বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিক লৌকিক আচার। জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে এই আচার পালন করা হয়। এই মাস ফলের রসনা তৃপ্তির মাস। আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু সহ আরও অনেক ধরনের দেশি ফল। এদিন জামাই ফল আর দুধ নিয়ে শশুড় বাড়িতে উপস্থিত হন, জামাই ষষ্ঠী নিতে ঠিক সেভাবেই জামাইকে বরণ করতেও প্রস্তুত থাকে শশুড় বাড়িও।
বাড়িতে জামাইয়ের আগমনের পর থেকে পুরো বাড়িতে যেন আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। এই উপলক্ষ্যে দেবী ষষ্ঠীর কাছে জামাই-মেয়ের সুখ শান্তির জন্য জন্য প্রার্থনা করাই মূল উদ্দেশ্য। এই দিনে বিবাহিত মেয়ে ও জামাইকে নিমন্ত্রণ করে আপ্যায়ন করা হয়। প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের ষষ্ঠী তিথিতে প্রথম প্রহরে ষষ্ঠীদেবীর পুজোর আয়োজন করা হত। ষষ্ঠীদেবী মাতৃত্বের প্রতীক। তাই মেয়ের মুখ দেখতে এবং মেয়ের দ্রুত সন্তান লাভের কামনায় জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা তিথিতে পালিত হয়ে আসছে জামাইষষ্ঠী উৎসব। জামাইষষ্ঠীর দিন জামাইয়ের হাতে হলুদ মাখানো সুতো বেঁধে দেওয়া হয় মা ষষ্ঠীর আর্শীবাদ রূপে। এরপর দীর্ঘায়ু কামনায় তেল-হলুদের ফোঁটা কপালে দিয়ে তালপাতার পাখা দিয়ে বাতাস করা হয়। ধান-দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করা হয়।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে একই পরিবারের ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার
অনেক দূর-দুরান্তে মেয়েদের বিবাহ দেওয়ার রীতি ছিল তখন বছরে একবার-দুইবার মেয়ের বাপের বাড়িতে আসা হতো কি হতো না তার ঠিক নেই। সে কারণে বছরের এই দিনে অর্থাৎ জ্যৈষ্ঠ মাসকে বেছে নেয়া হয় জামাইকে আমন্ত্রণ জানাতে। কারণ আর কিছুই না, বাজারের ফলের বৈচিত্র্য। আর এসব ফল চিরকালই বাঙালির প্রিয় খাবার। আর মা ষষ্ঠীর পূজা যোগ হওয়ার কারণ হলো সনাতন ধর্মে ষষ্ঠীদেবী হলেন মাতৃত্বের প্রতীক। পরিবারের সুখ সমৃদ্ধি ও সন্তানের কল্যাণের জন্য এই পুজোর উদ্দেশ্য। ফলে কন্যা ও কন্যার স্বামী-সন্তানের মঙ্গল কামনায় এই দিনটিকে বেছে নেওয়া হয়। জামাই দীর্ঘ জীবন লাভ করলে কন্যাকেও আর কষ্ট পেতে হয় না। ফলে এটি এখন সনাতনী দের কাছে অন্যতম ষষ্ঠী পূজা বা জামাই ষষ্ঠী উৎসব।*****