ফেনীতে রেকর্ড বৃষ্টিপাত, মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত ১৫ গ্রাম

ফেনীতে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে মুহুরী, সিলোনিয়া ও কহুয়া নদীর বেড়িবাঁধের অন্তত ১০টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে পরশুরাম উপজেলার অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেল থেকে মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার অনেক উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, বিকেল ৪টার পর নদীর পানি ১২ দশমিক ৯৬ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে, যা বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার ওপরে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার ৮০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নেত্রকোণায় যুবদলের মিলাদ মাহফিল
বন্যার পানিতে নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ফসলি জমি, মাছের ঘের, রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
পরিস্থিতি মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে একজন করে নৈশপ্রহরীকে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: জৈন্তাপুরে জাফলং থেকে লুট হওয়া ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে মির্জানগর ইউনিয়নের মেলাঘর, গদানগর ও মনিপুর এলাকায় সিলোনিয়া নদীর তিনটি স্থানে বাঁধ ভেঙে ছয়টি গ্রাম প্লাবিত হয়। চিথলিয়া ইউনিয়নের ধনীকুন্ডা, জঙ্গলঘোনা, উত্তর শালধর ও অলকা গ্রামেও মুহুরী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ছয়টি গ্রাম পানিতে তলিয়ে যায়।
এছাড়াও বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের চারিগ্রাম এলাকায় এবং সন্ধ্যার পর ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের দেড়পাড়া এলাকায় মুহুরী নদীর আরও দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি বেশ কিছু এলাকায় নদীর পানি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার দুপুর ১২টা থেকে মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত) ফেনীতে ৪০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর সঙ্গে ভারতের ত্রিপুরা থেকেও উজানের পানি প্রবাহিত হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে।
ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গ্রেজ রিডার নেপাল সাহা বলেন, “মঙ্গলবার বিকেল ৪টার পর মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৯৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির উচ্চতা দ্রুত বাড়ছে।”
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, “মুহুরী ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছে একটি বিশেষ টিম।”