লক্ষ্মীপুরে ধর্ষণ চেষ্টার অপবাদে বৃদ্ধের মাথা ন্যাড়া করলেন বিএনপি নেতারা

লক্ষ্মীপুরে ধর্ষণ চেষ্টার অপবাদে আওলাদ হোসেন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের মাথা ন্যাড়া করার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের মেঘনা বাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগী আওলাদ হোসেন সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড মেঘনা বাজার এলাকার বাসিন্দা। পেশায় তিনি একজন রিকশাচালক। অভিযুক্তরা হলেন স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. আজাদ হোসেন ও সেক্রেটারি ফারুক হোসেন।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মদপানে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও ১
স্থানীয়রা জানান, শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে আওলাদকে মারধর ও মাথার চুল ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। শালিসি বৈঠকের নামে ঘটনাটি করে স্থানীয় বিএনপি নেতারা। অনেকেই নিষেধ থাকা সত্ত্বেও কাজটি করে তারা।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আওলাদ হোসেন অভিযোগ করে প্রতিবেদককে বলেন, শিশুটির বাড়িতে পানি খেতে গিয়েছিলেন। পরে ধর্ষণের অপবাদ দিয়ে প্রকাশ্যে তাঁর মাথা ন্যাড়া করে দেয়। ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আজাদ ও সেক্রেটারি ফারুকের নেতৃত্বে ঘটনাটি ঘটে। অপবাদ দেওয়া ঘটনাটির সঙ্গে তিনি জড়িত নন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে উৎপাদনশীল করতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে: ড. মঈন খান
বিএনপি নেতা আজাদ হোসেন বলেন, শিশুটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শালিস করা হয়। বৈঠকে আওলাদ হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে। তখন উপস্থিত গ্রামবাসীর সিদ্ধান্তে মারধর কিংবা থানায় হস্তান্তর নয়, তাঁর মাথা ন্যাড়া করা হয়েছে। এটি যদি অপরাধ হয়, তাহলে যে শাস্তি প্রশাসন দিবে সেটি মাথা পেতে নেব।
আরও বলেন, ঘটনার কিছুক্ষণ পূর্বে শিশুটির মা রোজিনা বেগমকে রিকশায় করে অন্যত্র নিয়ে যায় (ভাড়া)। পরে খালি ঘরে একা পেয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষ স্বীকার করায় ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়নি। এছাড়া বিএনপির প্রভাব দিয়ে নয়, অপরাধ করেছে তাই গ্রামবাসী শাস্তি দিয়েছে। বরং আমরা থাকায় আওলাদ প্রাণে বেঁচে যায়। কারণ, মানুষ খুবই ক্ষিপ্ত ছিল।
অভিযুক্ত ফারুক হোসেন বলেন, ধর্ষণের ঘটনাটি শালিসি বৈঠকে প্রমাণিত হয়। তাই উপস্থিত লোকজন অভিযুক্তের মাথা ন্যাড়া করে দেয়। পরবর্তীতে তাঁর স্বজনদের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। এটি দোষের কিছু নয়। আর কারো একক সিদ্ধান্তে মাথা ন্যাড়া করা হয়নি। তাছাড়া বৃদ্ধ ও অসহায় হওয়ায় পুলিশে দেওয়া হয়নি আওলাদ হোসেনকে।
ঘটনার বিষয়ে শিশুটির পরিবারের কোনো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মোন্নাফ বলেন, ঘটনাটি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।