৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু কোনো কাজে আসছে না, দুর্ভোগ স্থায়ীদের

Sadek Ali
এবি সিদ্দিক খসরু,নান্দাইল
প্রকাশিত: ২:৫০ অপরাহ্ন, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৫:৪৫ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় রাজগাতী ইউনিয়নে দাসপাড়া গ্রামে সুখাইজুড়ি নদী উপর প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতু কোনো আসছে না বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা। সেতুটির দুইপাশে সংযোগ সড়ক কাঁচা রাস্তায় থাকায় সেতু ব্যবহারে দুর্ভোগে পড়তে হয় স্থানীয়দের। এদিকে সেতুর উভয় পাশের কিছু অংশ ইট বসিয়ে সংযোগ সড়ক করা হলেও তা বৃষ্টির পানিতেই দেবে যাচ্ছে। এতে সেতুটিই ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানায়, নান্দাইল-তাড়াইল পাকা সড়কের দরিল্লা গ্রাম থেকে একটি কাঁচা রাস্তা রাজগাতী ইউপির দাসপাড়া গ্রামের ভেতর দিয়ে দাসপাড়া মোড়ে আমলীতলা-কালীগঞ্জ বাজার পাকা সড়কের সাথে মিলেছে। সাড়ে তিন কি.মি দৈর্ঘ্যের উঁচু-নিচু দরিল্লা-দাসপাড়া সরু মাটির রাস্তাটির মাঝখানে রয়েছে সুখাইজুড়ি নদী।

প্রায় দুই বছর আগে এ নদীর ওপর স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ৭ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মাণ করে, যা দাসপাড়া সেতু নামে পরিচিত। কিন্তু ব্যবহারে অনুপযোগী কাঁচা রাস্তা পার হয়ে ওই সেতুটি পর্যন্ত হেঁটেও যাওয়া যাচ্ছে না। এ সেতু নির্মিত হলেও এ অঞ্চলের চারটি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দাদের সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেনি। মঙ্গলবার দুপুরে ওই এলাকায় সরজমিনে দেখা যায়, উভয় পাশের পুরো সড়কই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় পুরো সড়কে বড় বড় গর্তে হাঁটু পানি জমেছে। সেতু পর্যন্ত গিয়ে দেখা যায় ৯৬ মিটার সেতুটির দুই পাশে ২০০ মিটার করে সংযোগ সড়ক দেওয়া হলেও সেতুতে যুক্ত স্থানে দেবে গেছে অনেক অংশ।

আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গায় মদপানে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও ১

স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আলীম উদ্দিন জানান, চোখের সামনে এত টাকার কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার কারণে সব জায়গাতেই দৃশ্যমান ফাটল বা মাটি দেবে গেছে। স্থানীয় দরিল্লা গ্রামের উসমান গনি মাস্টার (৭০) জানান, আশপাশের ১০টি গ্রামের মানুষ শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো আবার বর্ষায় নৌকা দিয়ে নদীটি পাড় হতো। দুই বছর পূর্বে এখানে সেতু নির্মাণ হলেও এখনো পুরো সড়ক হয়নি। এখন কিছু সামান্য অংশে ইট বিছিয়ে সংযোগ সড়ক করা হবে কিন্তু বাকি সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। এতে ওই দামি সেতু মানুষের কোনো উপকারে আসছে না।

ইজিবাইক চালক রাজু মিয়া জানান, আগে কাঁচা রাস্তাটি পাকা করে তারপর সেতু তৈরী করা উচিত ছিল। সেতুটি নির্মাণের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্নধার আব্দুল গনি বলেন, ‘দেবে যাওয়া অংশ মেরামত করে দেব। বৃষ্টি চলে গেলে আর ভাঙতো না।’

আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে উৎপাদনশীল করতে হলে দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে: ড. মঈন খান

এ বিষয়ে নান্দাইল উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মালেক বিশ্বাস জানান, কাঁচা সড়ক পাকা করার জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেতুর সংযোগস্থল দেবে গেছে জানতে পেরে পরিদর্শন করেছি এবং ঠিকাদারকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বলেছি।