খাগড়াছড়ির গুইমারায় মধ্যরাতে আগুনে পুড়লো ১৩ দোকান, রামসু বাজারে এখনও থমথমে পরিবেশ

Sanchoy Biswas
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ৪:৫১ অপরাহ্ন, ০৫ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৪:৫১ অপরাহ্ন, ০৫ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া এলাকার হাজী ইসমাইল মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১৩টি দোকান পুড়ে গেছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) রাত দেড়টার দিকে এ আগুনের সূত্রপাত হয় বলে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে।

গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন লাগা বাজারটি মূলত বাঙালি অধ্যুষিত এলাকা।

আরও পড়ুন: রায়পুরায় কাউকেই গ্রীন সিগন্যাল দেওয়া হয়নি বলে দাবি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের

স্থানীয়রা জানান, আগুন লাগার মুহূর্তেই তা আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। গভীর রাত হওয়ায় ব্যবসায়ীরা কেউ দোকানের মালামাল সরানোর সুযোগ পাননি।

গুইমারায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন না থাকায় মাটিরাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আরও পড়ুন: কুলাউড়ায় গ্রাম পুলিশদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক

মাটিরাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর মধ্যে একটি ওয়ার্কশপও ছিল। সেখান থেকে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট কিংবা সিগারেটের আগুন থেকে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনাস্থলের পাশে পুলিশ ক্যাম্প, বিজিবি ক্যাম্প ও সেনা ক্যাম্প থাকলেও আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় প্রাথমিক পর্যায়ে কেউ আগুন নেভাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর গুইমারার রামসু বাজারে ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’র ডাকা অবরোধ চলাকালে সহিংসতায় তিন পাহাড়ি নিহত হয়। ওই ঘটনায় সেনা, বিজিবি ও পুলিশ সদস্যসহ একাধিক ব্যক্তি আহত হন।

স্থানীয়রা জানান, ওই ঘটনার পর থেকে পুরো রামসু বাজার এলাকা এখনো থমথমে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করায় অধিকাংশ পুরুষ গ্রাম ছাড়ায় এলাকাটি কার্যত পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

মারমা সম্প্রদায়ের একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, আতঙ্কের মধ্যেই সেখানে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা (ওয়াগ্যে লাব্রে)।

তারা জানান, এবার খাগড়াছড়িতে চেঙ্গী নদীতে রথ ভাসানোর ঐতিহ্যবাহী কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে। একজন স্থানীয় মারমা বাসিন্দা বলেন, “এই উৎসব একদম ম্লান। কোন গ্রামেই আনন্দ নেই, সবাই আতঙ্কে।”

অন্যদিকে বান্দরবানে মারমা সম্প্রদায়ের প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপনের প্রস্তুতি স্বাভাবিকভাবে চলছে।

প্রশাসনের আশ্বাসে শনিবার (৪ অক্টোবর) ‘জুম্ম ছাত্র জনতা’ অবরোধ প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।

এর আগে ২৩ সেপ্টেম্বর এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগকে কেন্দ্র করে অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়, যা পরে সহিংসতায় রূপ নেয়।

সহিংসতার পর প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করলেও শনিবার রাতে তা প্রত্যাহার করা হয়। তবে পরিস্থিতি এখনও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।