‘লালনের আদর্শে অন্যায়-অবিচারমুক্ত জীবন ধারণ করতে হবে’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘লালন সাঁইজ্বী যে অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে মন ঠিক রাখতে বলেছেন, তা যেন আমরা নিজেদের জীবনে ধারণ করতে পারি—এই চেষ্টাই আমাদের হওয়া উচিত। যদি আমরা আমাদের মনকে সৎ পথে রাখতে পারতাম, তাহলে সমাজে এত অন্যায়-অবিচার ঘটতো না।’
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে লালন একাডেমি প্রাঙ্গণের পাশে নবপ্রাণ আখড়াবাড়িতে আয়োজিত হয় ফকির লালন সাঁইজীর ১৩৫তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে বিশেষ সংগীতানুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। ‘দোহাই তোমার মনকে আমার লও গো সুপথে’ -শীর্ষক এই আয়োজনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: পরিবারে এমএ পাশ করে বোঝা না হয়ে মেট্রিক পাশে উদ্যোক্তা হওয়া উত্তম: বাউবি উপাচার্য
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীরা অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করেছে। তাদের অনেকেই এখনো আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আমরা মনে করি আমাদের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। আমরা সেই দায়িত্ববোধ থেকেই প্রয়োজনীয় কাজগুলো করার চেষ্টা করছি।
উপদেষ্টা বলেন, ফকির লালন সাঁইজির তিরোধান দিবসকে জাতীয় পর্যায়ে ঘোষণা করার পেছনে অন্তর্বর্তী সরকারের ঐকান্তিক ইচ্ছা ছিল। তিনি বলেন, অনেকেই লালন ভক্ত হিসেবে প্রতিবছর কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায় লালন সাঁইজির ধামে আসেন। তারা কষ্ট স্বীকার করে গান শোনেন, অংশ নেন আখড়া মহোৎসবে, তারপর ফিরে যান। কিন্তু এর রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ছিল না। বরং লালনকে দলীয়ভাবে বিভক্ত করার অপচেষ্টা করা হয়েছিল। আমরা লালনকে কোনো দলের হতে দেব না। লালন ছিলেন মানুষের, সাধারণ মানুষেরই তিনি রয়ে গেছেন। তাই আমাদের দায়িত্ব—লালনের দর্শন ও আদর্শকে রক্ষায় কাজ করে যাওয়া।
আরও পড়ুন: ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে গাছ ফেলে ডাকাতির চেষ্টা ব্যর্থ করলো বিজিবি
তিনি আরও বলেন, “আমরা যেন লালনের গান যথাযথভাবে পরিবেশন করতে পারি, সে চেষ্টায় থাকতে হবে। গান গাওয়ার সময় শিল্পীরা যেন লালনের কথা ও সুরে ভুল না করেন—এ বিষয়ে সচেতন থাকা জরুরি। নবপ্রাণ আখড়াবাড়িতে শিল্পীদের সঠিক তাল ও লয়ে গান শেখানো হয়, যেন লালনের ভক্তি ও দর্শনে কোনো বিকৃতি না ঘটে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিশিষ্ট কবি, লেখক, চিন্তক এবং লালন গবেষক ফরহাদ মজহারসহ অন্যান্যরা। এসময় নবপ্রাণ আখড়াবাড়িতে লালনের রেখে যাওয়া মানবমুক্তির আধ্যাত্মিক বাণী সম্বলিত গান গাওয়া হয়।