সালথায় দেশীয় প্রজাতির মাছের তীব্র সংকট
ফরিদপুরের মৎস্য ভান্ডার খ্যাত নগরকান্দা ও সালথায় ভরা মৌসুমে দেশীয় প্রজাতির মাছের তীব্র অভাব দেখা দিয়েছে। অথচ কয়েক বছর আগেও বর্ষা শেষে আশ্বিন কার্তিক মাসে ঘোড়ামারা বিল, মাউড়ার বিল, কাজলডাঙ্গা বিল, কাইচাইল বিলে, কুমার নদে ও খাল বিল এলাকায় প্রচুর দেশীয় জাতের মাছের দেখা মিলতো। কিন্তু কালের বিবর্তনে ভরা মৌসুমেও নগরকান্দা ও সালথার খাল-বিলে সে সব মাছ তেমন একটা দেখা মিলছে না। এতে এলাকার জেলেরা পড়ছে বিপাকে। আর নিম্ন মধ্যবিত্তরা ভুলতে বসেছে দেশীয় প্রজাতির মাছের স্বাদ।
পাঙ্গাশ কাপজাতীয় মাছই এখন তাদের ভরসার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। নগরকান্দা ও সালথায় রয়েছে অনেক নদ-নদী, খাল-বিল, ডোবা, পুকুর, জলাশয়। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য খোঁয়াড় বিল, কাজল ডাঙ্গা বিল, মাউড়ার বিল,কাইচাইল বিল, ঘোড়ামারা বিল, কুমার নদ, ধলেশ্বরী নদী,কাটাখাল, মজলিশপুর বিল,কাকদি বাউড় অন্যতম। এসব নদী, খাল- বিলে, ডুবায়, নালায়, জলাশয়ে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে প্রচুর পরিমাণে টেংরা, পুটি, জিউল,কই,মাগুর টাকি, বোয়াল,চিংড়ি, চাঁদা,চাপিলা,রায়েক কালিবাউশ, খলিশা, রুই, কাতলা, বাইম, আইড়, রিঠা, পাবদা,কাকিলা,বাঘাইড়সহ দেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ধরা পড়তো।
আরও পড়ুন: ‘আমি বিএনপি করি, তবে শেখ হাসিনার আদর্শে বিশ্বাসী’ মন্তব্য করা সেই ইউপি সদস্য গ্রেপ্তার
বর্তমানে নগরকান্দা ও সালথার খাল-বিলে, জলাশয়ের নাব্যতা সংকট দেখা দিয়েছে, অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার, কারেন্ট জালে মাছ ও পোনা নিধন, অভয়াশ্রমের মা মাছ নিধন করাসহ নানা কারণে নগরকান্দা ও সালথার খাল-বিলে, নদী-নালা, জলাশয়ে হারাতে বসেছে তার ঐতিহ্য। এখন এসব বিল এলাকায় বর্ষা মৌসুমেই মাছের তীব্র আকাল দেখা যায়।
মৎস্য ভান্ডার খ্যাত নগরকান্দা-সালথার খাল, বিল, জলাশয় এ কথা এখন কেবলই ইতিহাস।
আরও পড়ুন: যাত্রীবাহী বাসের নিচে অটোরিকশা, ৩ জনের মৃত্যু
উপজেলার পুড়াপাড়া হাটের ব্যবসায়ী বিমল মাঝি জানান, "দেশি প্রজাতির মাছের সরবরাহ কমে যাওয়ায় তা চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে নিম্ন মধ্যবিত্তদের পক্ষে মাছ কিনে খাওয়ার কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। "
এ ব্যাপারে নগরকান্দা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল আবরার জানান, দেশি মাছ বাড়াতে অভয়াশ্রম নির্মাণ, দেশীয় মাছের পোনা অমুক্তকরণ, দেশীয় মাছের প্রদর্শনী কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কিন্তু অভয়াশ্রমগুলোর অবকাঠামো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সহজে স্থানীয়রা মাছ মেরে নেওয়ায় বর্তমান মাছের পরিমাণ অনেকটা কমেছে। তবে এ ব্যাপারে উদ্বোতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভয়াশ্রমগুলো সংস্কারসহ বিলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।





