আশুলিয়ায় পুলিশের সামনেই প্রবাসীর এগ্রো খামারের মালামাল লুটে নিল সন্ত্রাসীরা
ধামসোনা ইউনিয়নের বিএনপি পরিচয়ধারী কুখ্যাত সন্ত্রাসী আসাদুল হক দুলাল এবং তার সহযোগী আলম, সাইদুজ্জামান সাইদ, জুয়েল, কাদের, বড় নূরা, ছোট নূরা, বাবু, রাকিবুল, জামিল, সাগর, ইব্রাহিম, আশিক ও আজিজুল ফরিদসহ প্রায় ৩৫-৪০ জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দলগতভাবে পরপর দুই দিন (২৫ ও ২৬ অক্টোবর ২০২৫) কানাডা প্রবাসী মিসেস মরিয়ম ইয়াসমিনের মালিকানাধীন একটি এগ্রো ফার্মে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
হামলাকারীরা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক, পিস্তল, রামদা, চেইন ও লোহার রড ব্যবহার করে প্রথমে প্রকল্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে। এরপর সীমানা প্রাচীর ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে নির্বিচারে বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো ও গুলি ছোড়া শুরু করে। এসময় তারা চাঁদা আদায় ও হত্যার উদ্দেশ্যে কমপক্ষে পাঁচজন কর্মচারীকে গুরুতর আহত করে, ব্যাপক অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়।
আরও পড়ুন: যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নেতাকর্মীদের সংগ্রামী শুভেচ্ছা জানালেন মাসুম
ভুক্তভোগীরা ঘটনাস্থল থেকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সাহায্য চান। কিন্তু পুলিশ পৌঁছানোর আগেই সন্ত্রাসীরা প্রায় ৫৫ লাখ টাকার সম্পদ লুটপাট করে নিয়ে যায় এবং সম্পত্তি ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। মাত্র তিনজন পুলিশ সদস্য পরিদর্শন করে চলে যায়। সন্ত্রাসীরা এ সময় সামনে ছিল বলে জানা গেছে
ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ
আরও পড়ুন: জাতির উন্নয়নে শিক্ষার বিকল্প নেই: ড. এম.এ কাইয়ূম
• ফ্রিজ, টিভি, ল্যাপটপ, ২০টির বেশি মোবাইল ফোন
• ৩০টিরও বেশি সিসি ক্যামেরা, লাইট, ফ্যান, জেনারেটর
• সোফা, খাট, স্টিল আলমারি, গৃহস্থালি সরঞ্জাম
• ৩৬১টি পোলট্রি মুরগি এবং তাদের খাবার
• নগদ ৪,২১,৭৫০ টাকা
• ব্যক্তিগত ও ব্যবসায়িক নথিপত্র
মোট ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫৫,০০,০০০ টাকা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ অনুযায়ী আসাদুল হক দুলাল দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির নাম ব্যবহার করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন। তিনি একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্রের নেতা, যার প্রধান সহযোগী আলমের বিরুদ্ধে রয়েছে:
• অস্ত্র ব্যবসা ও ভাড়া দেওয়া
• চাঁদাবাজি ও দখলবাজি
• মাদক পাচার
• হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক মামলার একাধিক রেকর্ড
আইনের নীরবতা এবং জনমনে ক্ষোভ
দুলাল বাহিনীর বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মামলা নং ৯৮/৪৫৮-২০২৫ এবং ৫১/৫১৫-২০২৫-সহ মোট ৭টি মামলা চলমান থাকলেও, এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি। বরং তারা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং ভুক্তভোগীদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন— “আমি বিএনপির নেতা, কেউ আমার কিছু করতে পারবে না।”
ভুক্তভোগীদের আর্তনাদ
আমরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। টাকা না দিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এটা কি রাজনীতি, না সন্ত্রাসের প্রকাশ্য প্রদর্শন?
আইনজীবীরা বলছেন, চাঁদাবাজি, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাচেষ্টা রাষ্ট্রবিরোধী গুরুতর সন্ত্রাসী অপরাধ। কোনো রাজনৈতিক পরিচয় এখানে বিবেচ্য হতে পারে না। অবিলম্বে র্যাব বা যৌথবাহিনী মোতায়েন করে আসামিদের গ্রেফতার করা প্রয়োজন।
অপরাধীর দলীয় পরিচয় নয়, তার অপরাধই বিবেচ্য হোক। আশুলিয়ার মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন।
একের পর এক সন্ত্রাসী হামলা লুটপাটে জনমনে প্রশ্ন
• আশুলিয়া থানা কি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে?
• না কি সন্ত্রাসীরা দলীয় ছত্রছায়ায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠ।





