চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসছে শীত, কষ্টে খেটে-খাওয়া মানুষ
দেশের দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্ত জেলা চুয়াডাঙ্গায় শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। ভোরের ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে পুরো জেলাজুড়ে নেমে এসেছে শীতের প্রকট আমেজ। কয়েক দিন ধরে সকাল ও সন্ধ্যায় তাপমাত্রার ওঠানামা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এলাকায় বিভিন্ন মোড়, বাজার ও চায়ের দোকানে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে দিনমজুর, রিকশাচালকসহ সব শ্রেণি–পেশার মানুষকে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় চুয়াডাঙ্গার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছে চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার।
আরও পড়ুন: অমানবিক পুশইনের শিকার অন্তঃসত্ত্বা ভারতীয় নারী সোনালী খাতুনকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করলো বিজিবি
অবজারভেটরির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জামিনুর রহমান জানান—শনিবার থেকেই তাপমাত্রা আরও হ্রাস পেতে পারে। ১০ থেকে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং শৈত্যপ্রবাহেরও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষজন। বিশেষ করে রিকশাচালক, ভ্যানচালক ও দিনমজুরদের মুখে শীতের কষ্টের কথা বেশি শোনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: জামালপুরের আলোচিত মনিরুল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার
৬০–উর্ধ্ব রিকশাচালক শামসুল হক বলেন, এই বয়সে রিকশা চালানোই কষ্টের, তার ওপর শীত বাড়লে শরীর আর সাড়া দেয় না। তবুও পেটের দায়ে বের হতে হয়। মানুষ কম বের হয়, তাই ভাড়াও কমছে।
ভ্যানচালক আলম হোসেন বলেন, ঠান্ডা সহ্য হয় না, কিন্তু ঘরে বসে থাকলে সংসার চলে না।
দিনমজুর ছালাম মিয়া জানান, শীতে মাঠের কাজ দেরিতে শুরু হয়, ফলে সকালবেলায় ডাক পড়ে না। আয় কমে যাচ্ছে।
এদিকে শীতের শুরুতেই হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে—শিশুদের সর্দি–কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার রোগী বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায়।
অন্যদিকে, শীতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়তি ব্যস্ততা দেখা গেছে মৌসুমি খেজুরগাছিদের। গ্রামাঞ্চলে চলছে নল বসানোর কাজ।
গাছি সাদ্দাম হোসেন জানান, “গাছে নল বসানো শুরু করেছি। রস ওঠা শুরু করেছে। খেজুর গুড় আর পাটালি তৈরি করে ভালোই বিক্রি হচ্ছে।”





