আবুল কালামের দাফন সম্পন্ন, স্ত্রীর আহাজারিতে ভারী পরিবেশ

Any Akter
বাংলাবাজার ডেস্ক
প্রকাশিত: ১:১১ অপরাহ্ন, ২৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ১:১২ অপরাহ্ন, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

রাজধানীর ফার্মগেটে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড পড়ে নিহত আবুল কালাম আজাদের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে শরীয়তপুরের নড়িয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। জানাজা ও দাফনের সময় স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে আশপাশের পরিবেশ। রোববার (২৬ অক্টোবর) গভীর রাতে নিহতের মরদেহ নিজ গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মোক্তারচর ইউনিয়নের ঈশ্বরকাঠি গ্রামে পৌঁছায়। সোমবার সকাল ১০টার দিকে জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

নিহত আবুল কালাম আজাদ স্থানীয় মৃত আব্দুল জলিল চৌকিদারের ছেলে। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়া ও দুই শিশু সন্তান— আব্দুল্লাহ (৫) এবং সুরাইয়া আক্তার (৩) নিয়ে তিনি নারায়ণগঞ্জের পাঠানতলি এলাকায় বসবাস করতেন।

আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড দুর্ঘটনা, কারণ অনুসন্ধানে কমিটি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে তিনি ঢাকায় একটি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করতেন। পারিবারিকভাবে তিনি ছিলেন অত্যন্ত শান্ত ও পরিশ্রমী স্বভাবের মানুষ।

নিহতের স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়া বলেন, আমার সন্তানরা এখনও বুঝতে পারেনি, তাদের বাবা আর ফিরবে না। ওরা বলে, ‘বাবা ঘুমাচ্ছে মা, তুমি কান্না করো না।’ আমি কীভাবে ওদের বোঝাই যে, ওদের বাবা আর কখনও জাগবে না! আবুল কালামই ছিল আমাদের একমাত্র ভরসা। এখন আমি সন্তানদের নিয়ে একেবারে দিশেহারা।

আরও পড়ুন: সাড়ে ২৬ ঘণ্টা পর কার্গো ভিলেজের আগুন পুরোপুরি নির্বাপণ

নিহতের চাচাতো ভাই আব্দুল গণি চৌকিদার বলেন, সরকারের অবহেলার কারণেই আমার ভাই মারা গেল। এখন এর দায় কে নেবে?

এ বিষয়ে নড়িয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) লাকী দাস বলেন, আবুল কালামের মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানাজা ও দাফনে অংশ নিয়েছি। পরিবারটি যেকোনো প্রয়োজনে প্রশাসনের সহযোগিতা পাবে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে ব্যক্তিগত কাজে ফার্মগেট এলাকায় যাওয়ার সময় মেট্রোরেলের একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হন আবুল কালাম।

সেদিন রাত ১০টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন আইলপাড়া এলাকার বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

দুর্ঘটনার পরপরই সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ, এবং ডিএমটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী ফারুক আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, এ ঘটনাটি নাশকতা না নির্মাণ ত্রুটির কারণে ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখতে সেতু বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহত আবুল কালামের দাফনের সমস্ত ব্যবস্থা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ করেছে। পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এছাড়া তার পরিবারের কর্মক্ষম কাউকে মেট্রোরেলে চাকরির সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।