থানার আঙিনায় সবুজের ছোঁয়া গাছে গাছে ঝুলছে পেপে

Sadek Ali
মোশাহিদুল ইসলাম নয়ন, বাহুবল
প্রকাশিত: ১২:৩৫ অপরাহ্ন, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৫:০৮ পূর্বাহ্ন, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

 প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী থানায় গেলে চোখে পড়ে টহল গাড়ি, আসামি ধরার কড়া পরিবেশ আর প্রশাসনিক ব্যস্ততা। কিন্তু হবিগঞ্জের বাহুবল মডেল থানায় ঢুকলেই বদলে যায় সে চিত্র। সারি সারি পেপে গাছে ঝুলছে সবুজ পাকা ফল, পরিচ্ছন্ন প্রাঙ্গণে ভরপুর সবুজের ছোঁয়া। এক ভিন্ন পরিবেশের কারণে থানায় আগত মানুষও বিস্মিত ও মুগ্ধ হচ্ছেন।

থানা সূত্রে জানা গেছে, শুধু সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য নয়, বরং ফাঁকা জায়গার যথাযথ ব্যবহার ও সবুজায়ন কর্মসূচির অংশ হিসেবেই এসব ফলজ গাছ লাগানো হয়েছে। থানার বিভিন্ন প্রান্তে রোপণ করা হয়েছে পেপে, পেয়ারা ও অন্যান্য ফলজ গাছ। বর্তমানে বেশিরভাগ গাছে প্রচুর পেপে ধরেছে। থানার আঙিনা জুড়ে এসব ফলের সমাহার এখন নিয়মিত দৃশ্য। প্রতিদিন থানায় আসা সেবাপ্রার্থীরা এক নজর ফলভরা গাছ দেখে মুগ্ধ হন। থানায় সেবা নিতে আসা সাহাব উদ্দিন বলেন, আগে থানায় এসে শুধু প্রশাসনিক পরিবেশই দেখা যেত। এখন থানায় প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে ফলগাছের সারি। এতে মনে হয়, যেন আমরা কোনো সেবাকেন্দ্রে নয়, বরং পরিবেশবান্ধব স্থানে এসেছি। এতে আমাদের মনও ভরে যায়। আরেক সেবাপ্রার্থী দিলরুবা  জানান, সবুজের এমন ছোঁয়া মানুষের মানসিক চাপও কমিয়ে দেয়। থানার মতো জায়গাতেও যে এভাবে গাছ লাগানো যায়, এটা আমাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।

আরও পড়ুন: আগাম সবজি চাষে চরাঞ্চলে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা

বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা চেয়েছি থানার পরিবেশকে সবুজ ও পরিচ্ছন্ন রাখতে। সেই লক্ষ্যেই পেপে, পেয়ারা ও অন্যান্য ফলজ গাছ লাগানো হয়েছে। এতে থানার নিজস্ব চাহিদা মিটছে, পাশাপাশি পরিবেশও সুন্দর হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, থানার কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম নিয়মিত এসব গাছের পরিচর্যা করেন। ওসি বলেন, যদি প্রতিটি সরকারি প্রতিষ্ঠান তাদের সামান্য জায়গাটুকুও সবুজায়নের আওতায় আনে, তাহলে দেশব্যাপী পরিবেশ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।

আরও পড়ুন: জীবননগরে আমন ও রবি মৌসুমে সারের তীব্র সংকট, বিপাকে কৃষক

স্থানীয়রা বলছেন, বাহুবল থানার এ উদ্যোগ সত্যিই অনুকরণীয়। এতে শুধু পরিবেশ সুরক্ষাই নয়, প্রশাসনের ভাবমূর্তিও ইতিবাচকভাবে বদলে যাচ্ছে। একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী  আবিদ মিয়া বলেন,  যখন দেখি থানার আঙিনায় ফল ধরেছে, তখন আমাদেরও উৎসাহ জাগে নিজেদের বাসা-বাড়িতেও গাছ লাগানোর। পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, পরিবেশ রক্ষাতেও ভূমিকা রাখছে- এটা আমাদের জন্য গর্বের।

জানা গেছে, ২ একর ৮৭ শতক জমির ওপর ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত বাহুবল থানা ২০১১ সালে মডেল থানায় রূপান্তরিত হয়। শতবর্ষ পেরিয়ে আসা এ থানায় আজকের সবুজায়ন কর্মসূচি এলাকাজুড়ে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ উদ্যোগ শুধু থানার পরিবেশ বদলেই নয়, সমাজেও এক ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। স্থানীয়রা বলছেন, বাহুবল মডেল থানা এখন সত্যিকার অর্থেই এক অনুকরণীয় প্রতিষ্ঠান।