চীন সফর দেশের জন্য ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে: নাছির উদ্দীন নাছির

চীনে গণতন্ত্র নেই, এটি আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু নয়। চীনের এই নেতিবাচক দিক বাংলাদেশের গণতন্ত্রের উন্নয়নে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে আমরা মনে করি। চীন সফর শেষে বাংলাবাজার পত্রিকা-কে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন আসিফ শওকত কল্লোল এবং মঞ্জুর মোর্সেদ রিকি।
তিনি নতুন দল এবং শিবিরের ইফতারের খরচ নিয়েও আলোচনা করেন। তিনি বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি একটি গতানুগতিক দল, যার কোনো স্পষ্ট পরিকল্পনা বা নীতি প্রকাশ করা হয়নি। শিবির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতারের জন্য এত টাকা কোথা থেকে খরচ করছে, তা জানার অধিকার সাধারণ ছাত্রদের আছে। এছাড়াও, তিনি চীন সফর নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
প্রশ্ন: চীন সফর কেমন হলো ?
উত্তর: দীর্ঘ ছাত্র রাজনৈতিক জীবনে চীন সফর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা চায়না কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে গিয়েছিলাম। বিএনপি নেতৃত্বাধীন একটি দল সফরে গিয়েছিল, যার মধ্যে বিএনপির চারজন সাধারণ সম্পাদক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মইন খান ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বেই আমরা চীন গিয়েছিলাম। গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে বিএনপি নেতৃত্বে অনেক রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলনে অংশ নিয়েছিল। সেই যুগপৎ আন্দোলনের অনেক অংশীদার, বৈষম্য বিরোধী নাগরিক কমিটির চারজন নেতাও এই সফরে ছিলেন। ৩২ সদস্যের টিমে ছয়জন ছিলেন বিএনপির এবং ১৬ জন ছিলেন অন্যান্য অংশীদার, যারা যুগপৎ আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। এটি একটি মাল্টি-ডাইমেনশনাল টিম ছিল।
চীনের চারটি শহর ও তিনটি প্রদেশে আমরা গিয়েছিলাম। চীনের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছিলাম, যার মধ্যে চারজন গুরুত্বপূর্ণ নেতার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। চীনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আইটি সেক্টরের অগ্রগতি এবং কৃষিক্ষেত্রে তাদের সাফল্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তারা অত্যন্ত স্বল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বের বুকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই সফরে তারা তাদের উন্নয়নের বিভিন্ন দিক আমাদের কাছে উপস্থাপন করেছেন।
এই সফর আমাদের দেশের জন্য একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। চীনের তরুণরা অত্যন্ত সময়ানুবর্তী, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং আইন মান্যকারী। তারা ঘড়ির কাঁটা ধরে এগিয়ে যায় এবং দেশের প্রতি তাদের অগাধ বিশ্বাস রয়েছে। আমরা চীনের চারটি শহর পরিদর্শন করেছি এবং দেখেছি যে তারা নিয়ম মেনে চলে, দেশের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা অত্যন্ত উচ্চ। বাংলাদেশের জনসাধারণও দেশের প্রতি বিশ্বাস রাখে, কিন্তু আইন মানার ক্ষেত্রে অনেক অনীহা দেখা যায়। চীনে ঠিক তার বিপরীত চিত্র দেখা গেছে। তাদের আইন মানার সংস্কৃতি দেশের উন্নয়নে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
চীনের আইটি সেক্টরের অগ্রগতি এবং উন্নয়ন আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। চীনে যেতে খুব কম সময় লাগে। কুয়ামিন বিমানবন্দর নামার মধ্যে দিয়ে মাত্র বিমানের আড়াই ঘণ্টায় চীন পৌঁছানো যায়। চীন আমাদের এত কাছে থাকা সত্বেও এত বড় উন্নয়ন সাধন করেছে, যা বাংলাদেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সফর চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন আগ্রহ ও সংশ্লিষ্টতা তৈরি করবে।
প্রশ্ন: চীনের সফরটি ছাত্রদলকে কীভাবে সমৃদ্ধ করতে পারে?
উত্তর: জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সাধারণ ছাত্রদের একটি সংগঠন। আমাদের ছাত্রদল কীভাবে কাজ করে, কী ভিত্তিতে আমাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম চলমান থাকে, তা এই সফর থেকে শেখা যেতে পারে। চীন সফর থেকে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল যে বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে শিখতে চেয়েছে বা অনুধাবন করেছে, তা হলো কাজের প্রতি নিষ্ঠা ও সময়ানুবর্তিতা। চীনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পেশাগত দক্ষতা এবং যুবসমাজের মনোযোগ আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। চীনের যুবসমাজ তাদের পেশাগত দক্ষতা ও সময়ানুবর্তিতার মাধ্যমে বিশ্বের বড় বড় দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল এই সফর থেকে সময়ানুবর্তিতা, নিয়মানুবর্তিতা এবং পড়াশোনায় বাড়তি মনোযোগ দেওয়ার শিক্ষা নিতে পারে। এই সফরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ছাত্রদল আরও গ্রহণযোগ্য ও কার্যকরী কর্মপরিকল্পনা তৈরি করতে পারে।
প্রশ্ন: চীনে গণতন্ত্র নেই। এমন গণতন্ত্রহীন দেশে এই সফর কীভাবে আপনারা লাভবান হবেন?
উত্তর: চীনের সফরে ভালো ও খারাপ দুটো দিকই রয়েছে। চীনের ভালো দিকগুলো থেকে আমরা শিখতে চাই। চীনে গণতন্ত্র নেই, এটি আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু নয়। চীনের এই নেতিবাচক দিক বাংলাদেশের গণতন্ত্রের উন্নয়নে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে আমরা মনে করি। চীনের ইতিবাচক দিকগুলো, যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নিয়মানুবর্তিতা, সততা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, আমাদের জন্য শিক্ষণীয়। চীন মাত্র পঞ্চাশ-ষাট বছরের মধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকার অগ্রযাত্রাকে পিছনে ফেলে বিশাল উন্নতি করেছে। আমরা চীনের ইতিবাচক দিকগুলো থেকে শিক্ষা নিতে চাই, নেতিবাচক দিকগুলো থেকে নয়।
প্রশ্ন: বিগত সরকারের আমলে বিএনপির সঙ্গে চীনের নেতিবাচক সম্পর্ক ছিল। এই সফর কি বিএনপি ও চীনের সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করবে?
উত্তর: এই সফরে আমি সবচেয়ে তরুণ সদস্য ছিলাম। আমাদের সঙ্গে আরও দুজন বয়স্ক নেতা ছিলেন। আপনি জানেন, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আমল থেকে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দলের একটি পরীক্ষিত ও বিশ্বাসভিত্তিক সম্পর্ক ছিল। তবে এ নিয়ে কিছু সংকটও ছিল। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির নেতারা, বিশেষ করে আমরা যে তিনটি প্রদেশ ভ্রমণ করেছি, সেখানে চীনের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে চীনের মানুষের সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। চীন কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায় না। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো ছিল, কিন্তু এখন তারা বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ যে সরকারকে প্রতিনিধিত্ব করবে, চীন তাদের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। আমি মনে করি, চীনের মানুষের দর্শন, আদর্শ, নিয়ম-কানুন, পারস্পরিক বোঝাপড়া, সামাজিক সম্পর্ক, সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি সরকার ক্ষমতায় এলে এই সফর আস্থার জায়গা তৈরি করবে এবং সম্পর্ক আরও গভীর হবে।
প্রশ্ন: চীনের করিডোরের প্রস্তাবটি কী?
উত্তর: আপনি জানার জন্য বলছি, চিনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে যে করিডোরের প্রস্তাব করা হয়েছে, তা নিয়ে চীন ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে। এই করিডোরটি চীন থেকে শুরু হয়ে কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ হয়ে পরবর্তীতে ভারতের দিকে অগ্রসর হবে। চীন সরকার এই প্রকল্পে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে। আমাদের সফররত দলকে তারা জানিয়েছেন যে, তারা এই বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী। আমাদের দলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এছাড়াও, আমাদের দলের পক্ষ থেকে তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে ভারত সরকারের তৈরি করা সমস্যা এবং এ সংক্রান্ত বিষয়ে একটি আন্তঃসম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য আলোচনা হয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে একটি ইন্টার-ডায়ালগ পলিসি তৈরি করার তাগিদ দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়টি চীন সরকারকে জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূতও এ বিষয়ে কাজ করছেন। তিস্তার পানি সংকট সমাধানে চীন সরকার কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে এবং সেই সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো কী হতে পারে, তা নিয়েও আলাপ-আলোচনা হয়েছে। চীন সরকারকে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে।
প্রশ্ন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবিরের ইফতারির জন্য টাকা খরচের পরিমাণ বেশি। এই টাকা কোথা থেকে আসে, এ বিষয়ে তারা কী বলেছেন?
উত্তর: তারা সব সময় নেতিবাচক আচরণ করে। এই বিষয়টির একটি ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে। কেন তারা এত টাকা পয়সা যোগাড় করেছে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য ইফতারে তারা প্রতিদিন তিন লাখ টাকা ব্যয় করছে। মানলাম, তারা এই টাকা ব্যয় করতে পারে। কিন্তু একটি ছাত্র সংগঠন হিসেবে অন্য শিক্ষার্থীদের জানার আগ্রহ রয়েছে। শুধু একটি ছাত্র সংগঠন প্রতিদিন তিন লাখ টাকা খরচ করলে, মাহে রমজানের ৩০ দিনে তারা ৯০ লাখ টাকা খরচ করে। তাহলে বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিবির কত কোটি টাকা ব্যয় করছে? সুতরাং, এত টাকা কোথা থেকে আসছে, এগুলো জানার অধিকার সাধারণ ছাত্রদের আছে। আমি শিবিরকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। কিন্তু তারা সরাসরি উত্তর না দিয়ে ফেসবুকে আক্রমণ করে, কমেন্টে গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে লেখে। তারা আমাদের গালাগালি করে, এমনকি আমাদের সিনিয়র নেতৃবৃন্দদেরও গালিগালাজ করে। তারা কী বলেছেন, আমরা সে বিষয়ে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছি না। বিষয়টি সাধারণ শিক্ষার্থীদের জানার প্রশ্ন, তাই আমরা এটা প্রশ্ন করেছি।
প্রশ্ন: জাতীয় নাগরিক পার্টি কেমন দল হলো?
উত্তর: আপনি জানেন, সম্প্রতি জাতীয় নাগরিক পার্টি নামে একটি নতুন দল গঠিত হয়েছে। তারা নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের কথা বলে এই দল গঠন করেছে, কিন্তু আমরা তাদের মধ্যে নতুনত্ব কিছুই দেখছি না। তারা অত্যন্ত গতানুগতিক বিষয় নিয়ে একটি দল গঠন করেছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক যারা হয়েছেন, তারাই সবাইকে পদ দিয়েছেন। সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি। তারা যদি রাষ্ট্রক্ষমতায় যায়, তাদের পররাষ্ট্রনীতি কী হবে? গত সাড়ে ১৫ বছর ধরে যারা অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে এবং দেশ ও ব্যাংকের টাকা লুট করে নিয়ে গেছে, তাদের বিষয়ে এবং তাদের নতুন দলের অর্থনৈতিক নীতি কেমন হবে? এ বিষয়ে তারা কিছু বলেনি। বরং তারা যে নীতি দিয়েছে, তা পাঁচ দশক আগে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানও দিয়েছিলেন। তাদের নতুন বন্দোবস্ত করার কোনো পরিকল্পনাই নেই। আপনি দেখেছেন, কেউ তাদের সমালোচনা করলে, তাদের নেতারা পুরো রাজনৈতিক দলের সমালোচনা করে নিজেদের ভুলগুলো জাস্টিফাই করার চেষ্টা করে।
জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রধান নাহিদ রয়টার্সকে বলেছেন, পার্টির প্রথম কনভেনশন আয়োজনে ধনী ব্যক্তিরা তাদের সহযোগিতা করেছেন। আমরা জানতে চাই, সেই ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে কি স্বৈরাচারের দোসর নেই? এই বিষয়ে নাহিদ কি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে নিশ্চয়তা দেবেন? যারা ধনী ব্যক্তি, তারা তো গত ১৫ বছরে ধনী হয়েছে। তারাই আওয়ামী লীগের দোসর। তারা কি জাতীয় নাগরিক পার্টিকে টাকা দেয়নি? এ বিষয়ে জনগণ জানতে চায়।
সুতরাং, আমরা মনে করছি, তাদের নেতৃত্ব প্রক্রিয়া গতানুগতিক এবং কোনো গণতান্ত্রিক ধারা অনুসরণ করেনি। তাদের আর্থিক, পররাষ্ট্র ও অভ্যন্তরীণ নীতি গতানুগতিক। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নিয়ে তারা যে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে, তার কোনো সমাধান তারা দেননি। তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলে তারা অন্যভাবে জাস্টিফাই করার চেষ্টা করে। তারা আসলে আদিম রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করতে চায়, এটা কোনোভাবেই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত নয়। নাহিদকে বলছি, আপনি নতুন কিছু দেখাতে পারেননি। যে রাজনৈতিক দল গঠন করা হয়েছে, তার একটি অংশ এখন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আছেন, আরেকটি অংশ রাজনীতির মাঠে আছেন। তারা সরকারে থেকে সেই রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতা করছেন, নতুন রাজনৈতিক দলের জন্য বাসের ব্যবস্থা করছেন। তাহলে এটা কি কিংস পার্টি? এটি আমাদের কাছে নতুন কিছু নয়। এটি আরও পাঁচশ বছরের পুরনো রাজনৈতিক বন্দোবস্ত।
প্রশ্ন: চীনের রেলে শিবিরের নেতাদের সঙ্গে দেশাত্মবোধক গান "মুক্তির মন্দির সোপানো তলে কত প্রাণ"... কেন আপনারা গাইছিলেন?
উত্তর: গানটি গাওয়া নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। বিএনপির সংগ্রামী মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীর আমাদের চীনে যাওয়ার আগে আমাদের নিয়ে বসেছিলেন। এমনকি চীনের দূতাবাস থেকে বলা হয়েছিল, যারা দেশের ২২ জন রাজনৈতিক নেতা চীন সফরে যাচ্ছেন, তারা কোনো নির্দিষ্ট দলের প্রতিনিধিত্ব করেন না, তারা দেশের প্রতিনিধি। সুতরাং, এই সফরে যারা গিয়েছিলেন, তারা নাগরিক কমিটির সদস্য হিসেবে গিয়েছিলেন। শিবিরের অনেকেই ছিলেন, তবে তারা শিবিরের কর্মী হিসেবে নয়, নাগরিক কমিটির সদস্য হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও তাদের নাম নাগরিক কমিটির সদস্য হিসেবে প্রচারিত হয়েছিল। তাদের রাজনৈতিক দলের পদবিও ছিল। আমরা শিশুয়াংবান্না থেকে কুনমিং যাচ্ছিলাম। সেই দীর্ঘ যাত্রায় আমরা সবাই মিলে বিএনপির নেতা ড. মইন আহমেদের নেতৃত্বে এই দেশাত্মবোধক গান গেয়েছিলাম। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিবিরের সমালোচনা করেন, আবার শিবিরের সাথে গান গাইছি, এটা নিয়ে কথা বলেন। তবে সেই সফরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা ছিলেন, শিবিরের প্রতিনিধি হিসেবে কেউ যাননি। এ বিষয়ে আমি আপনাকে নিশ্চিত করছি।