উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর এসডিএস'সহ এনজিও গুলোর দুর্নীতির মহোৎসব
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর পরিচালিত এনজিওগুলো প্রকল্পের না করেই শত শত কোটি টাকা করে লুট করে নিয়ে গেছে। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রী সচিব ও দুর্নীতিবাজ ডিজি আবুল কালাম আজাদের প্রত্যক্ষ সহায়তায় এনজিওরা ভাগ বাটোয়ারা করেছে। প্রকল্পের কাজ পাওয়াএকটি সংস্থা সোশাল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস (এসডিএস) দুর্নীতির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের কিছু কর্মকর্তা লাগামহীন দুর্নীতি চালায় এসব প্রকল্পে। শিক্ষক ও সুপারভাইজার নিয়োগে অনিয়ম, তাদের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ সহ নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, সংস্থার ২০২০ সালে শিক্ষক ও সুপারভাইজার নিয়োগের আশ্বাসে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করলেও তাদের জরিপ বাবদ অর্থ পরিশোধ করা হয়নি।
অপরদিকে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রতি শিক্ষকের নিকট থেকে ২৫ হাজার টাকা করে, আর সুপারভাইজারের নিকট থেকে এক লাখ করে উৎকোচ গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী সকল শিক্ষক ও সুপারভাইজারের বেতন ব্যাংব হিসাবে দেওয়ার কথা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা না করে নগদ পরিশোধ দেখিয়ে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। এখনও তিন মাসে বেতন বকেয়া আছে বলে জানা যায়। অভিযোগে আরও জানা যায়, প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী সকল শিক্ষক ও সুপারভাইজারের দুই মাসের সমপরিমাণ বেতন ব্যাংক হিসাবে দেওয়ার বিধান থাকলেও কোনো টাকা পরিশোধ না করে পুরো অর্থই আত্মসাৎ করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। এ বিষয়ে উপপরিচালক রিপন লসকরের সাথে কথা হলে জানান, আমি আগেই অবসর নিয়েছি। তবে একতা প্রজেক্ট ছিল আউট অব স্কুল চিলড্রেন। সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা ব্যাংকের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: ফর্টিফাইড রাইস উৎপাদনে মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রশিক্ষণ সম্পন্ন
তারা কী করছে তা আমি জানিনা। আর নিয়োগসংক্রান্ত অনিয়মের কথাও আমার জানা নাই। এসব বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সাবেক মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদের মোবাইলে ফোন করতে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। দুর্নীতি দমন কমিশন আবুল কালাম আজাদ এর বিরুদ্ধে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ে মামলা করার কারণে পলাতক। আবুল কালাম আজাদ একইভাবে দুর্নীতি করেছে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা গুরুর মহাপরিচালক হিসাবে। এছাড়াও সাবেক ডিজি আব্দুল মান্নানকে ফোন করলেন তিনি জানান আমি মাত্র তিন মাস ছিলাম সে সময় এনজিওর কাজ কম হয়েছে। পরবর্তী রা বলতে পারবে। তবে জানা যায় তার সময়ও এনজিও নিয়োগের কার্যক্রমের বেশিরভাগ অগ্রগতি হয়েছে। ফোন করলে তিনিও কথা বলতে রাজি হননি। তবে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর দায়িত্ব পালনকারী পরিচালক নুরুজ্জামান জানান আমার জানামতে প্রকল্পটি ২০২৩ সালে শেষ হয়েছে। সেখানে একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র পরবর্তীতে দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকতে পারে। আমার সময় কোন দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ততা আমার ছিল না।
এদিকে বাংলাবাজার পত্রিকার অনুসন্ধানে জানা যায় সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতায় উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা অধিদপ্তরে out of school children education নামে প্রকল্প তৈরি করে এনজিওদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হয়। কয়েক দফায় প্রকল্পটিতে মেয়াদ বাড়িয়ে শত শত কোটি টাকা হরি লুট করে নিয়ে যায় তৎকালীন সরকারি কর্মকর্তা ও এনজিও মিলে। অনুসন্ধানে জানা যায় প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন সচিব ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ডিজি আবুল কালাম আজাদ মিলে এনজিও নিয়োগে আগাম প্রকল্পের টাকা বাগ বাটোরা করে নেয়। জানা যায় আবুল কালাম আজাদ ও তার সহযোগি উপ পরিচালক রিপন লস্কর, ফাহমিদা আক্তার, সিস্টেম এনালিস্ট মোরশেদা বেগম সহ অফিসের কতিপয় কর্মচারী আর্থিক লেনদেনের সরাসরি জড়িত থাকার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে এনজিও নিয়োগ ও সহকারী এনজিও নিয়োগ প্রকল্পের মূল্যবান মাল কেনাকাটা সহ শত শত কোটি টাকা সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে হাতিয়ে নে। সূত্র জানায় মাসিক ও প্রকল্পের বিল উত্তোলনের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সত্যায়ন পত্র টাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এনজিওরা ভুয়া সত্যায়ন পত্র তৈরি করে এনে বিল উঠিয়ে নিয়ে যায়। অধিকাংশ প্রকল্প এলাকা কাজের চিহ্ন নেই অফিস তো দূরের কথা। তবে সিস্টেম এনালিস্ট মুর্শিদা বেগম বাংলাবাজার পত্রিকাকে বলেন আমি এখন অবসর নিয়েছি। আমি আইটি বিভাগে কাজ করেছি সেখানে টাকার কোন বিষয় নেই। আমার উপরে আরো অনেক কর্মকর্তা ছিল টাকার লেনদেন তারা করেছে।
আরও পড়ুন: দুটি বুলডোজার সামনে ৩২ নম্বর আতঙ্ক উৎসুক নিরাপত্তা জোরদার





