সৈয়দপুরে দিনে দুপুরে বাসার ভেতরে এক নারীকে হত্যা

Sanchoy Biswas
হীরা শর্মা, সৈয়দপুর (নীলফামারী)
প্রকাশিত: ৯:৪০ অপরাহ্ন, ০১ জুলাই ২০২৫ | আপডেট: ১২:১৭ পূর্বাহ্ন, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরে থানা থেকে ৩০০ গজ দুরে দিনেদুপুরে একটি বাসার ভেতরে সামসুন নাহার (৬৭) নামের এক নারীকে মাথায় সজোরে আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে শহরের চাঁদনগর এলাকায় তুলশীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রহিলা পারভীনের বাসায় ওই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই বাসা থেকে নগদ ৪৫ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি এলইডি টিভি সেট খোয়া গেছে বলে দাবি করা হয়। ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বাসাটিতে ওই নারীকে একা পেয়ে তাকে হত্যা করে ওই মালামালগুলো নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৈয়দপুর তুলশীরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রহিলা পারভীন। তাঁর স্বামী ঠিকাদার মোকছেদুল হক গত ৬/৭ বছর আগেই মারা গেছেন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলে চিকিৎসক বিয়ে করে বউ নিয়ে ঢাকায় থাকেন। স্কুল শিক্ষিকা রহিলা পারভীন শহরের চাঁদনগরস্থ বিদ্যালয়ের সামনে এলাকায় নিজ বাসায় তাঁর দূর সম্পর্কের বোন সামসুন নাহারকে নিয়ে বসবাস করেন। আর বোন সামসুন নাহারের বাড়ি দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার তিন নম্বর ফতেজংপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গারহাট ফকিরপাড়ায়। তিনি ওই এলাকার মৃত. আজহার আলীর স্ত্রী। তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন গতকাল মঙ্গলবারও শিক্ষিকা রহিলা পারভীন  সামসুন নাহারকে একা বাসায় রেখে স্কুলে যান। ঠিক বেলা সোয়া একটার দিকে তিনি বিদ্যালয়ের টিফিনকালীন দুপুরের খাবার খেতে বাসায় আসেন। বাসা এসে দরজা বন্ধ পেয়ে বাসায় থাকা দূর সম্পর্কের বোন সামসুন নাহারকে ডাকাডাকি করতে থাকেন। কিন্তু এতে তাঁর কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীর বাসায় যান। পরে প্রতিবেশী এক মহিলাকে নিয়ে এসে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ অবস্থায় দেখতে পান। পরে তারা দুইজনে বাসার দরজা খুলে দেখেন বাসার ঘরের মেঝেতে সামসুন নাহার রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। পরবর্তীতে তাঁর ডাকচিৎকারে আশেপাশের লোকজন দ্রুত ছুটে আসেন। পরে খবর পেয়ে সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার একেএম ওহিদুন্নবী, থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফউম উদ্দিনসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন। পরে পুলিশের সিআইডি টিমের সদস্যরা এসে হত্যাকাণ্ডের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন।

আরও পড়ুন: নাসিরনগরে আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস পালিত

নিহতের ছেলে সামসুল হক (৪৫) জানান, তাঁর মায়ের সঙ্গে বেলা ১১ টা থেকে সাড়ে ১১টা মধ্যে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। এসময় সামসুন নাহার ছেলেকে বলেছিলেন তাঁর শরীরটা ভাল যাচ্ছে না। এ সময় তিনি ছেলেকে জানান আগামী রোববার কিংবা সোমবার তিনি বাড়ি যাবেন। আর আজ তাঁর মাকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হলো বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

মামলার আলামদ সংগ্রহ ও সুরতাহলের পর সন্ধ্যা ৬.৩০মিনিটে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ফইম উদ্দিন জানান, এ হত্যার ঘটনাটি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। আশা করি দ্রুততম সময়ে ঘটনার মূল রহস্য ও এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তে সক্ষম হবো।

আরও পড়ুন: শরীয়তপুরে নির্যাতিত শিশুর পাশে তারেক রহমান