চাঞ্চল্যকর আলম হত্যাকাণ্ড: নিজ ছেলের হাতেই বৃদ্ধ পিতা খুন

Sanchoy Biswas
চন্দন কুমার দেব, নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশিত: ১০:১৪ অপরাহ্ন, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ১২:২৪ পূর্বাহ্ন, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

জট খুলেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বহুল আলোচিত আলম হত্যাকাণ্ডের। ১০ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) মো: আলম মিয়াকে হত্যার দায়ে আটক করেছে তারই একমাত্র ছেলে ফাহাদ আহমেদ মাহমুদুল (২২) কে। মাহমুদুল দায় স্বীকার করেছে পিতা হত্যার। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যায় ব্যবহৃত এস এস পাইপ।

৩ সেপ্টেম্বর সকালে নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক গ্রামের মুন্সীপাড়া এলাকায় নিজ বসত ঘর থেকে মো: আলম মিয়া (৫৮) নামে এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করেছে তার প্রতিবেশীরা। ধারণা করা হয়, ২ সেপ্টেম্বর রাতের কোন এক সময় দুষ্কৃতিকারীরা টিনের চাল কেটে ঘরে ঢুকে আলম মিয়াকে খুন করে ঘরেই ফেলে চলে গেছে।

আরও পড়ুন: টানা চার দিন অন্ধকারে নবীনগর, বিদ্যুৎ অফিস ঘেরাও করে জনতার বিক্ষোভ

১ম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ২য় বিয়ে করেছিলেন আলম মিয়া। বনিবনা না হওয়ায় কিছুদিনের মধ্যে ২য় স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। আলমের ২ মেয়ে ও ১ ছেলে রয়েছে। মেয়েরা তাদের শ্বশুরবাড়িতে থাকে, ছেলের বউ থাকে সিলেটে, ছেলে মাঝে মাঝে সিলেটে যাওয়া-আসা করে। খুন হওয়ার দিন বাড়িতে আলম একাই ছিলেন। একাকী ঘরে খুন হওয়া ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ীর মৃত্যুকে ঘিরে এলাকাজুড়ে ছিল নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা ও কাদা ছোড়াছোড়ি। গ্রাম্য রাজনীতি ক্রমেই ডালপালা মেলছিল সম্ভ্রান্ত পরিবারের এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে।

এরই মধ্যে ১০ সেপ্টেম্বর (বুধবার) সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর একটি টিম হাজী আলমের একমাত্র ছেলে ফাহাদ আহমেদ মাহমুদুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে তার দোকান থেকে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই মাহমুদুল তার পিতার হত্যার দায় স্বীকার করেছে। তার দেওয়া তথ্য মোতাবেক বৃহস্পতিবার সকালে ফান্দাউক তাদের বাড়ির পাশের মিলাদ মিয়ার পুকুর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত আনুমানিক ৩ ফুট লম্বা একটি এস এস পাইপ উদ্ধার করে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন।

আরও পড়ুন: ফেনীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ ও লাইসেন্স না থাকায় ২ ফার্মেসিকে জরিমানা

আলম হত্যার রহস্য উন্মোচনে স্বস্তি ফিরে এসেছে এলাকা জুড়ে। ফান্দাউক ইউনিয়ন পরিষদের (সংযুক্ত ওয়ার্ডের) সদস্য মো: ফরহাদ আহমেদ বলেন, “ঘটনার পর এলাকাবাসী আতংকে ছিল, আলহামদুলিল্লাহ অবশেষে স্বস্তি ফিরে এসেছে। আমরা ঘটনার আরও তদন্ত করে এই খুনি এবং এর সাথে যদি আরও কেউ জড়িত থাকে তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করি।”