বাউফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স চালকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ

Sanchoy Biswas
মো. জসীম উদ্দিন, বাউফল (পটুয়াখালী)
প্রকাশিত: ৫:৫৪ অপরাহ্ন, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | আপডেট: ৯:৫৭ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালকের অবহেলায় এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ২১ সেপ্টেম্বর (রবিবার) এ ঘটনা ঘটেছে।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, অ্যাম্বুলেন্স চালককে ফোন করা হয় সকাল ৭:৩০ মিনিটে। কিন্তু ৯:৩৫ মিনিটে চালক এসেছে। তার এই অবহেলার কারণেই বাউফল ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মৃত আবদুর রশিদের ছেলে মো. সানু (৫০) মারা গেছেন।

আরও পড়ুন: রায়পুরায় কাউকেই গ্রীন সিগন্যাল দেওয়া হয়নি বলে দাবি মনোনয়ন প্রত্যাশীদের

এ বিষয়ে সানুর চাচাতো ভাই মো. জাকির হোসেন (৩৪) বলেন, “বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স ছিল। আমরা ড্রাইভারকে একাধিকবার কল করেছি। কিন্তু তিনি তা আমলে নেননি। হাসপাতালে মুমূর্ষ রোগী নিয়ে আমরা ২ ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্সের জন্য অপেক্ষা করেছি। ড্রাইভারের অবহেলায় ক্রিটিকাল রোগী নিয়ে সময়ক্ষেপণের কারণে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। আমরা এই ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করছি।”

মৃত সানুর বড় ভাই ফজলুর রহমান (৫৫) বলেন, “সঠিক সময়ে অ্যাম্বুলেন্সের চালক আসলে আমার ভাইকে বাঁচানো সম্ভব হত। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার অবহেলা করেছে। সে আমাদের অনেকক্ষণ অযথা বসিয়ে রেখেছে। তার অবহেলার কারণে আজ আমার ভাই দুনিয়ায় নেই। আমি বিচার চাই।”

আরও পড়ুন: কুলাউড়ায় গ্রাম পুলিশদের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন করলেন জেলা প্রশাসক

মৃত সানুর স্ত্রী আমেনা বেগম (৪৫) বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক বাসায়ই ছিলেন। কিন্তু আমাদের ৫ মিনিট বলে বলেই সময়ক্ষেপণ করে দুই ঘণ্টা বসিয়ে রাখেন। আমি মনে করি আমার স্বামীকে সঠিক সময়ে বরিশাল হাসপাতালে নিতে পারলে বাঁচানো যেত। আমি এই ঘটনার কঠোর বিচার চাই।”

অভিযোগ অস্বীকার করে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. শহিদুল ইসলাম (৪৫) বলেন, “আমি অসুস্থ ছিলাম। আমি তাদেরকে বলেছি আমি ১ ঘণ্টার মধ্যে আসছি। আমি ১ ঘণ্টার মধ্যেই এসেছি। রাত নাই দিন নাই আমি সব সময় ডিউটি করি। দায়িত্বে অবহেলার প্রমাণ দিলে আমি শাস্তি মেনে নিব।”

এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রউফ বলেন, “রোগীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

উল্লেখ্য, সরকারি অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে একাধিক রোগীর অভিযোগ আছে। তিনি কারো কথা শুনেন না, নিজের খেয়াল খুশি মতো ডিউটি করেন। এমনকি ডাক্তারদের কথাও আমলে নেন না। অ্যাম্বুলেন্স চালক মো. শহিদুলের এই অপেশাদার আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করছে রোগী ও স্বজনরা।