শ্যামনগরে মুন্সিগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য, নিয়োগ স্থগিতের দাবি

Sadek Ali
আব্দুল আহাদ, শ্যামনগর সাতক্ষীরা
প্রকাশিত: ২:১২ অপরাহ্ন, ০৭ অক্টোবর ২০২৫ | আপডেট: ৫:৪৩ অপরাহ্ন, ১৩ অক্টোবর ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত
ছবিঃ সংগৃহীত
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে পরিপত্র অমান্য করে অবৈধভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সাতক্ষীরা সদরের মুনজিতপুর এলাকার নাসির উদ্দীন গাজী সহ এলাকাবাসীর অভিযোগে জানান, মুন্সিগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের জিবি কমিটি গঠনটি মুলত বিধি বহির্ভূত কারন স্বশরীরে মিটিং না করা, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ম বহির্ভূত, সই জালিয়াতি, প্রবেশ পত্র অনিয়ম। প্রকাশ্যে  কলেজের সভাপতিকে আবু তালেব  (সহঃঅধ্যাপক, আই সি টি)-র নিয়োগ প্রদানের হমকি প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

এছাড়াও সরকারী পরিপত্র ইং২৯/০৯/২০২৫ তাং জারিকৃত নিয়ম অনুযায়ী নিরাপত্তা রক্ষীপদে জিবি কমিটি নিয়োগ পুরাপরি স্থগিত এবং উপধাক্ষ্য নিয়োগ আপাতত স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত অমান্য করে আগামী ইং ১০/১০/২০২৫ তারিখে নিয়োগ পরিক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তটি অটল রেখেছে কলেজ কতৃপক্ষ, যা আইন বা পরিপত্র বিরোধী। কলেজটিতে জি,বি কমিটি গঠন সঠিক না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। 

৫ই আগষ্ট ২০২৪ আগে যে অভিভাবক প্রতিনিধিই  পরে সেই অভিভাবক প্রতিনিধি, ৩ জন অভিভাবক প্রতিনিধি সদস্যের ২জনই ২য় বর্ষের ছাত্র/ছাত্রী মোঃ মুকুল হোসেন (পিতা-গফুর সরদার) কন্যা ইরানী ২য় বর্ষ বিজ্ঞান, ফনিন্দ্র মন্ডল ছেলে-সৌরভ ২য় বর্ষ বিজ্ঞান ২ জনই  ২০২৫ ইংরেজি সালে এইচ,এস,সি পরিক্ষা দিয়েছে। যা বিধি বর্হিভূত। 
এছাড়া এ্যাডহক কমিটির মেয়াদ পূর্ণাঙ্গ হতে না হতেই সভাপতির মারা যাওয়ার ৫/৭ দিনের পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের চিঠির জন্য অপেক্ষা না করেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন। যা বিধি বর্হিভূত। এছাড়া জিবির ২জন সদস্য টী, আর শিক্ষক প্রতিনিধি পদত্যাগ না করেই উপধাক্ষ্য পদে আবেদন কারী এবং পদেই থেকেই জিবি-র সকল সিদ্ধান্ত গ্রহন করছে। যা বিধি বর্হিভূত। 
২০২২ সালে শূন্য হওয়া উপধাক্ষ্য পদটিতে নিয়গের জন্য পুরাতন নিয়মে বিজ্ঞাপন দেন, পদের নাম, পদবী, বেতন স্কেল, শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ না করেই গত ২৪/৫/২০১৫ ইংরেজি তারিখে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় উপধাক্ষ্যর পাশাপাশি নিরাপত্তা রক্ষী পদের জন্যও  ১ম বিজ্ঞাপন দেন। কিন্তু সরকারী নিয়ম অনুযায়ী ৩ ধরনের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন না দেওয়ার কারনে বিজ্ঞপ্তি বাতিল হয়। পরে ১ম বিজ্ঞপ্তি বাতিলের রেজুলেশন না করেই আবার ২য় বিজ্ঞপ্তি  ৮/৭/২০২৫ ইংরেজি তারিখে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় দেন। আবার ঐ দিনই আরেকটিতে না দিয়ে ১৩/৭/২০২৫ ইংরেজি তারিখে একটি অনলাইন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেন, যা বিধি বর্হিভূত। স্বশরীরে কোন মিটিং (যাচাই-বাছই, নিয়োগ কমিটি) না করেই ২৪/৭/২৫ ইংরেজি তারিখে ডিজি প্রতিনিধি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও জেলা প্রতিনিধি পাওয়ার জন্য তাং২৪/৭/২৫ইং ও ২৩/৯/২৫ইং তারিখে সভাপতি কে ডেকে রেজুলেশন সহি/সই করে নেন, যা বিধি বর্হিভূত। জিবি-র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোঃ আব্দুল কাদের সরদারের রেজুলেশনে সহি তার আপন ছোট ভাই অফিস স্টাফ মোঃ আব্দুর রাজ্জাক সরদারের করার অভিযোগও পাওয়া গেছে। বিষয় টি অধ্যক্ষ জানা স্বত্তেও কোন প্রতিকার/ব্যাবস্থা নেননি।

 নিয়োগের প্রবেশ পত্রে ১৫ কার্যদিবস আগে প্রার্থীর হাতে পৌছনোর কথা থাকলেও চিঠি ডাকে দেন ইংরেজি ২৩/৯/২৫ তারিখ এবং নিয়োগ পত্র ২৫/৯/২৫ তারিখে প্রার্থীর হাতে আসে এবং তার মোবাইলেও এসএমএস আসেনি বলে প্রার্থী সুত্রে জানা যায়। আবার প্রার্থীদের ছবিসহ প্রবেশ পত্রও দেওয়া হয়নি, যাহা বিধি বর্হিভূত।
ইংরেজি ৩০/০৯/২৫ তারিখে প্রকাশিত "দৈনিক ইত্তেফাক" পত্রিকায় প্রতিবেদন এবং শিক্ষা মন্ত্রালয়ের নির্দেশনা ২৯/০৯/২০২৫ জারিকৃত পরিপত্র মোতাবেক গর্ভনিং বডি কর্তৃক নিরাপত্তা রক্ষীপদে নিয়োগ সম্পূর্ন স্থগিত এবং উপধাক্ষ্য পদে নিয়োগ আপাতত স্থগিত রাখার কথা থাকলেও মুন্সিগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে আগামী ইংরেজি ১০/১০/২৫ তারিখে নিয়োগ পরিক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত অটল রেখেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলে জানা যায়। 

এছাড়া গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বেসরকারি মাধ্যমিক-১ শাখা সম্প্রতী ৫/১০/২০২৫ তারিখে স্বারক নম্বর: ৩৭.০০.০০০০.০০০.০৭২.৪৪.০০০২.২৫.২৮  উপসচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সাইয়েদ এ,জেড মোরশেদ আলী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ জানান, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান/সহকারী প্রধান (অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সুপার ও সহকারী সুপার)-এর নিয়োগ বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর মাধ্যমে করা হবে মর্মে সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। বর্ণিত অবস্থায়, পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান না করা পর্যন্ত সকল বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান/সহকারী প্রধান (অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সুপার ও সহকারী সুপার) এর পদে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হয়। 

অথচ মুন্সিগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ এ সমস্ত পরিপত্র, সরকারি নিদ্দেশনা উপেক্ষা করে লক্ষ লক্ষ টাকার অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যে অব্যহত রাখায় নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রশ্নবিদ্ধ দেখা দিয়েছে। অবৈধ নিয়োগ কার্যক্রম বা নিয়োগ বোর্ড সম্পন্ন হলে প্রতিষ্ঠানে অপুরণীয় ক্ষতি হবে।

কলেজের অধ্যক্ষ মোস্তফা গাজী আব্দুল হামিদ অন্যান্য বিষয় অস্বীকার করে বলেন, নিয়োগ বোর্ড আগামী ১০/১০/২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে।
 
এ ব্যাপারে সরকারি বিধিমোতাবেক নিয়োগ প্রক্রিয়াটি স্থগিত করতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের আশুহস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।