নরসিংদীতে তীব্র শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশা দু'য়ে মিলে তীব্র কনকনে শীতে নরসিংদীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। বেশি বিপাকে পড়েছেন শিশু, বয়ষ্ক ও নিম্ন আয়ের মানুষ। হাড়কাঁপানো কনকনে এই শীতের কারণে বাইরে কাজ করতে পারছেনা কর্মজীবী মানুষ। নরসিংদী ও এর আশেপাশের উপজেলা গুলোতে গত ২/৩ দিন ধরে শীতের তীব্রতা বেড়েছে অনেক। সকাল থেকে দিনভর সূর্যের দেখা মিলছে না। কুয়াশার সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। এতে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। রাতের পাশাপাশি দিনের বেলায়ও কনকনে ঠাণ্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন মানুষ। রাস্তার পাশে ফুটপাত থেকে শুরু করে রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড ও ভবনের কার্ণিশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে ছিন্নমূল মানুষ। শীতবস্ত্র, নিরাপদ আশ্রয় ও পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে তাদের জীবনযাপন হয়ে উঠেছে চরম অনিশ্চিত ও কষ্টকর। ফুটপাত ও স্টেশনের প্লাটফর্মে থাকা পথশিশুরা পলিথিন কিংবা বস্তা গায়ে জড়িয়ে ঠাণ্ডা ঠেকানোর চেষ্টা করছেন। তবে ব্যর্থ চেষ্টায় শীতে কষ্ট পাচ্ছেন তারা।
শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, ব্যস্ততম সড়কগুলোতে অটোরিকশা, সিএনজি ও বিভাটেক চলাচল তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। স্বল্প দূরত্বের যানবাহন না পেয়ে অনেককে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে পৌচ্ছাতে দেখা যাচ্ছে। রাস্তার পাশে ভাসমান দোকান নিয়ে আজ দোকানীরা বসতে দেখা যায়নি। অন্যান্য দিনের তুলনায় রাস্তাঘাটের পাশাপাশি অফিস-আদালত অনেকটা ছিল ফাঁকা। জরুরি প্রয়োজনে যারা ঘর থেকে বাইরে বের হয়েছেন তারা আবার দ্রুত কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে গেছেন। রাস্তার পাশে বা খোলা জায়গায় দিনমজুর ও ছিন্নমূল মানুষজন দলবেঁধে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: শিবপুর প্রেসক্লাবের আসাদ সভাপতি, মাহবুব খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত
রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে ভাসমান এক নারী বলেন, গরমের সময় যেখানে সেখানে পড়ে থাকা যায়। কিন্ত ঠাণ্ডায় ছোট বাচ্চা নিয়ে সমস্যার মধ্যে পড়েছি। নিজেরা কষ্ট সহ্য করে হলেও থাকছি। কিন্ত ছোট বাচ্চার কষ্ট সহ্য করতে পারছি না। এখন আমার বাচ্চার গরম কাপড় দরকার।
বিভাটেক চালক বলেন, আমি পেটের দায়ে এই শীতে গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। ঠাণ্ডার কারণে গাড়ি চালাতে পারছি না। তারপর রাস্তায় আবার যাত্রীও কম। বিপাকে আছি একদিকে প্রচন্ড ঠান্ডা আর অন্যদিকে যাত্রী কম।
আরও পড়ুন: ঘন কুয়াশায় দৌলতদিয়া–পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ
ওসমান নামের এক দিনমজুর বলেন, অন্য সময়ে সকাল হলেই কাজে চলে যেতাম। কিন্ত শীত বেশি পড়ার কারণে বের হতে পারছি না। কোনোমতে বের হলেও কাজ পাচ্ছি না। শীতের কারণে খুব সমস্যার মধ্যে পড়েছি। কাজ না হলে ছেলেমেয়ের মুখে খাবার তুলে দিতে পারবো না।
এদিকে আবহাওয়া পূর্বাভাস অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঢাকাসহ সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। শীতের এই দাপট আরও তিন থেকে চার দিন অব্যাহত থাকতে পারে। তারপর সূর্যের দেখা মিলতে পারে।





