চট্টগ্রাম ইপিজেডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না ভবনটির

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড) এলাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া ভবনটির অগ্নিনিরাপত্তা সনদ ছিল না বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: ধোঁয়ায় অন্ধকারাচ্ছন্ন সিইপিজেড, একের পর এক বিস্ফোরণ
তিনি বলেন, “ভবনটির পক্ষ থেকে ফায়ার সেফটি প্ল্যানের (অগ্নিনিরাপত্তা পরিকল্পনা) জন্য আবেদন করা হয়েছিল, তবে নিয়ম অনুযায়ী এখনো পরিদর্শন হয়নি। তার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে গেছে।”
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে সিইপিজেড এলাকার একটি ৮তলা ভবনের সপ্তম তলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। দীর্ঘ ১৭ ঘণ্টা চেষ্টার পর শুক্রবার সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।
আরও পড়ুন: আরও তীব্র হয়েছে চট্টগ্রামের ইপিজেডে আগুন, আশপাশের ভবন রক্ষায় হিমশিম ফায়ার সার্ভিস
তবে আগুন সম্পূর্ণ নির্বাপণে আরও সময় লাগবে বলে জানানো হয়।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক বলেন, ভবনের আশপাশে পর্যাপ্ত খোলা জায়গা না থাকায় দুই পাশ দিয়ে আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লেগেছে। নিয়ম অনুযায়ী যে ন্যূনতম জায়গা রাখার কথা, সেটি ভবনের দুই পাশে ছিল না।
আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরাও অংশ নেন। রাতভর চলা অভিযানে বৃষ্টি কিছুটা সাহায্য করলেও আগুনের তীব্রতা ছিল প্রবল।
স্থানীয়দের মতে, আগুনের তাপে কয়েকশ মিটার দূর থেকেও উত্তাপ অনুভূত হয়। ভবনের ভেতর থেকে ছোট ছোট বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। আগুন পরে পাশের তিনতলা ভবনেও ছড়িয়ে পড়ে।
জিহং মেডিকেল প্রোডাক্টস (বিডি) কোম্পানি লিমিটেডের ভবনটিতে আগুনের দ্রুত বিস্তারের কারণ ছিল ভেতরে থাকা সার্জিক্যাল গাউন ও ফেব্রিকস জাতীয় দাহ্য কাঁচামাল।
কোম্পানির জ্যেষ্ঠ নির্বাহী বোরহান উদ্দিন তামিম জানান, “ভবনের ভেতরে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত ১০ কনটেইনার সার্জিক্যাল গাউন এবং ২০ কনটেইনার ফেব্রিকস ছিল। এগুলো দাহ্য হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।”
এদিকে, ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে—আগুনের সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো জানা যায়নি, তবে ভবনের ভেতরে রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি ও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকা এ দুর্ঘটনা তীব্র করেছে।