চাঁদাবাজি মামলায় সহযোগী সমীর পাঁচ দিনের রিমান্ডে

মেঘলা আলম চক্র বিদেশী রাষ্ট্রদূতদের সুন্দরী নারীর ফাঁদে ফেলে আদায় করত মোটা অংকের টাকা

AK Azad
বাংলাবাজার রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৮:৩২ অপরাহ্ন, ১২ এপ্রিল ২০২৫ | আপডেট: ৩:০৮ অপরাহ্ন, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
ছবিঃ সংগৃহীত

চাঁদাবাজির মামলায় মডেল মেঘনা আলমের সহযোগী দেওয়ান সমিরকে (৫৮) পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। তিনি সানজানা ম্যান পাওয়ার প্রতিষ্ঠানের মালিক।

শনিবার (১২ এপ্রিল) পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ্ ফারজানা হকের আদালত দেওয়ান সমিরকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন। এর আগে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আরিফুল ইসলাম।  

আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, দেওয়ান সমিরকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষে তাকে রিমান্ডে নেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন পিপি ওমর ফারুক ফারুকী। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত দেওয়ান সমিরকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, সুন্দরী মেয়েদের দিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রতারণার মামলায় মেঘনা আলমের সহযোগী কাওয়াই প্রতিষ্ঠানের সিইও দেওয়ান সমিরকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

তিনি আরও বলেন, নারীদের ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করে আসছেন আসামি দেওয়ান সমির। তার বিরুদ্ধে সৌদি রাষ্ট্রদূতের কাছে ৫ মিলিয়ন ডলার চাঁদা দাবির অভিযোগ আনা হয়েছে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।

পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে আদালতকে বলা হয়, আসামি গত জানুয়ারি থেকে সৌদি রাষ্ট্রদূত ইসা বিন ইউসেফ আল দুহাইলানের কাছ থেকে টাকা আদায়ে বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ সৃষ্টি করেন। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি হুমকির সম্মুখীন হয়।

এরআগে, মিস আর্থ বাংলাদেশ-২০২০ বিজয়ী মডেল মেঘনা আলমকে গত বৃহস্পতিবার রাতে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আগের দিন রাতে তাকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে আটক করে ঢাকা মহানগরের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

এক সংবাদ সম্মেলনে আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ডঃ আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্পষ্টভাবেই বলেছেন মডেল মেঘলা আলমের গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া সঠিক হয়নি। মেঘলা আলম একেবারে নির্দোষ না। তার গ্রেফতার ও আটকের প্রক্রিয়া যথাযথভাবে অনুসরণ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি অনুসন্ধান করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অবহিত করা হয়েছে। তারা এজন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।  এদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও পুলিশের সদর দপ্তর সূত্রের একই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।   

আইন উপদেষ্টা বলেন, মেঘলা আলমের ব্যাপারে কিছু তদন্ত পুলিশ করছে উনার বিরুদ্ধে কিছু সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে তাকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে যে প্রক্রিয়ায় গ্রেফতার করা হয়েছে সেটি সঠিক নয় উনার যদি কোন অপরাধ তাকে সেই অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথভাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তিনি আরো বলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিটেনশন নিয়ে প্রচুর বিতর্ক তৈরি হয়েছে এটা নিয়ে আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে মিটিং করেছি এ ব্যাপারে বিভিন্ন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠান ও অন্যদের বক্তব্যের বিষয়ে আমরা সচেতন আছি।  উল্লেখ্য বাংলাদেশের আলোচিত মডেল মিস  আথ বাংলাদেশ বিজয়ী মেঘলা আলমকে গত ৭ এপ্রিল তার বসুন্ধরার আবাসিক এলাকার বাসা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করে। আটকের দুইদিন পর গত ১০ এপ্রিল ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার বিরুদ্ধে ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিনের আটকাদেশ দেয়।