ট্রাম্পের গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলল হিজবুল্লাহ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবিত গাজা যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনাকে ‘ঝুঁকিতে ভরা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান নাঈম কাসেম।
তিনি অভিযোগ করেন, ইসরায়েল যুদ্ধের মাধ্যমে যা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে, সেই লক্ষ্য এবার এই রাজনৈতিক পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন যে তিন জন
শনিবার (৪ অক্টোবর) দুই হিজবুল্লাহ কমান্ডারের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে কাসেম বলেন,
আসলে এই পরিকল্পনাটি বিপদে পূর্ণ। এটি ইসরায়েলের প্রকল্প, যা যুদ্ধ, আগ্রাসন, গণহত্যা ও দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে যা তারা করতে পারেনি—তা এখন রাজনৈতিক পথে অর্জনের চেষ্টা করছে।”
আরও পড়ুন: গাজায় আটক আরও ১৩ জিম্মিকে রেডক্রসের হাতে তুলে দিল হামাস
তবে তিনি বলেন, ট্রাম্পের প্রস্তাব গ্রহণ বা প্রত্যাখ্যানের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে হামাসের ওপর নির্ভর করছে। তার ভাষায়,আমরা এই পরিকল্পনার বিস্তারিত আলোচনায় হস্তক্ষেপ করব না। শেষ পর্যন্ত ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ, হামাস ও সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলোই তাদের সিদ্ধান্ত নেবে।
এর আগের দিন শুক্রবার হামাস ট্রাম্পের প্রস্তাবে ইতিবাচক সাড়া দেয়। গাজায় জিম্মিদের মুক্তি ও প্রায় দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধের অবসান ঘটাতে এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেও কিছু শর্ত নিয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়েছে তারা।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে হামাসকে নিরস্ত্র করা এবং গাজার ভবিষ্যৎ প্রশাসন থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ও রয়েছে—যা নিয়ে হামাস আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। এদিকে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইতোমধ্যেই পরিকল্পনাটিকে সমর্থন জানিয়েছেন।
নাঈম কাসেম তার বক্তব্যে আরও বলেন, আমাদের অবশ্যই ‘গ্রেটার ইসরায়েল প্রকল্প’-এর বিরোধিতা করতে হবে।
এই ধারণাটি ইসরায়েলের বাইবেলীয় বা ঐতিহাসিক সীমা সম্প্রসারণের লক্ষ্যের সঙ্গে যুক্ত,*যা জর্ডান, লেবানন, সিরিয়া, মিসর, ইরাক ও সৌদি আরবের কিছু অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত বলে ধারণা করা হয়। ১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের পর থেকে এই শব্দগুচ্ছ রাজনৈতিকভাবে আলোচিত হয়ে ওঠে, যখন ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম, পশ্চিম তীর, গাজা উপত্যকা, সিনাই উপদ্বীপ ও গোলান মালভূমি দখল করে।
গত আগস্টে এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু গ্রেটার ইসরায়েল’-এর ধারণার প্রতি সমর্থনসূচক মন্তব্য করলে আরব দেশগুলো তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায়।
শেষে কাসেম বলেন, এই প্রকল্পের মোকাবিলা করা প্রত্যেকের দায়িত্ব, কারণ ইসরায়েলের পরিকল্পনা অনুযায়ী এটি একসময় সবার কাছেই পৌঁছাবে—দেরিতে হোক বা আগে।