ঘুষ গ্রহণ ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদকের দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত

ঘুষ নেয়ার অভিযোগে সহকারী পরিচালক ও উপ-সহকারী পরিচালক পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকেলে দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা আদেশের বিষয়টি জানা যায়।সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন, সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান ও উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী। ঘুষ গ্রহণ এবং দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় গত ১২ জুলাই দুই কর্মকর্তাকে নিজ কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছিল।
সাময়িক বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, পাবনায় উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে অফিস কক্ষে মো. সামছুল হক নামে এক ব্যক্তির কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। পরে তিনি ৭৬ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। গত ২৬ জুন এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ফুটেজ দেশের দু’টি বেসরকারি টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ আকারে প্রচারিত হয়।
আরও পড়ুন: ভোলাগঞ্জে লুট হওয়া সাদা পাথর ফেরত ও লুটকারীদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ হাইকোর্টের
প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মেসার্স হক টাইল লিমিটেডের মালিক মো. শামসুল হকের কাছ থেকে ঘুষ গ্রহণ করছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এ বিষয়ে গত ২৮ জুন ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছিল।
মোস্তাফিজুর রহমান ঘুষ গ্রহণ করে চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থি কাজ করেছেন। এ ধরনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুদকের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে। সে কারণে দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ) ও ৩৯(ঙ) বিধি মোতাবেক যথাক্রমে অসদাচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা (নম্বর ০৮/২-২৩) দায়ের করায় এবং ওই বিধিমালার ৪৩(১) বিধি অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা যুক্তিযুক্ত ও অপরিহার্য মনে করেছে কমিশন।
আরও পড়ুন: ভোলাগঞ্জে সাদা পাথর লুট: দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চেয়ে হাইকোর্টে রিট
অন্যদিকে সুদীপ কুমার চৌধুরীর বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, তিনি বগুড়ায় উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে জেলা পুলিশে গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেনের সম্পদ বিবরণী যাচাই করেন। সেসময় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস দেন সুদীপ কুমার। তখন আলমগীর হোসেনের কাছে ঘুষ দাবি করেন তিনি। এছাড়া ঘুষ গ্রহণের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড দুদকের ফরেনসিক ল্যাব বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তা সুদীপ কুমারের বলে জানিয়েছেন। ফলে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সাক্ষীদের সঙ্গে টেলিফোনে/মোবাইলে যোগাযোগ না করার জন্য দুদকের যে নির্দেশনা রয়েছে তা অমান্য করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে।
সে কারণে তার বিরুদ্ধে দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ), ৩৯(ঙ) ও ৩৯(চ) বিধি অনুযায়ী যথাক্রমে অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় মামলা দায়ের করার কারণে বিধিমালার ৪৩(১) অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে দুদক।
এদিকে গত ৯ এপ্রিল বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন ওই পুলিশ কর্মকর্তার বোন রুমাইয়া শিরিন।