হাসিনাকে খুঁজতে ট্রাইব্যুনাল এলাকায় মাইকিং
রাজধানীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সোমবার সকাল থেকে অস্বাভাবিক এক মাইকিং শোনা যায়। সাধারণত কোনো মানুষ বা শিশু হারিয়ে গেলে যেমনভাবে প্রচার করা হয়, ঠিক সেই ভঙ্গিতে মাইকিংয়ে বলা হচ্ছিল— “একটি হারানো বিজ্ঞপ্তি… আমাদের হাসিনা খালা গত ৫ আগস্ট সপরিবারে হারিয়ে গেছেন। যদি কোনো সৎ-হৃদয়বান ব্যক্তি তার সন্ধান পান, তবে তাকে হাইকোর্টের ফাঁসির মঞ্চে পৌঁছে দেবেন।”
এই ঘটনাটি ঘিরে সকালে আদালত এলাকায় উপস্থিত সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল দেখা যায়।
আরও পড়ুন: দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ আগামী সপ্তাহে
সোমবার সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায় ঘোষণার দিন হওয়ায় সকাল থেকেই ট্রাইব্যুনাল চত্বর জনসমাগমে ভরে ওঠে। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রায়ের অপেক্ষায় অবস্থান নেন।
রায়কে ঘিরে নগরজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হলেও রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিকই ছিল। ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি গণপরিবহনও নিয়মিত চলাচল করে।
আরও পড়ুন: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিশ্বনেতাদের উত্থান, পতন ও পরিণতি
এদিকে মামলার রায়কে কেন্দ্র করে পতিত আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন কর্মসূচি’র কোনো প্রভাব সকাল থেকে রাজধানীতে দেখা যায়নি। অপরদিকে বিএনপি, জামায়াত এবং আরও কয়েকটি ইসলামী দল পূর্বঘোষণার ভিত্তিতে মাঠে থাকার কথা জানিয়েছিল।
এই মামলায় অভিযোগ রয়েছে, ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভের সময় প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষের প্রাণহানি এবং ২৫ হাজারের মতো মানুষ মারাত্মকভাবে আহত হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) এ মামলার রায়ের দিন ধার্য করেন।
শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট পাঁচটি অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছে। মামলায় ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। দেশি–বিদেশি গণমাধ্যমে প্রকাশিত অডিও, ভিডিও এবং বিভিন্ন প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে প্রসিকিউশন জানায়।
মামলার আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন রাজসাক্ষী হয়ে নিজের দায় স্বীকার করেন এবং অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে বিস্তারিত সাক্ষ্য দেন।
রায়কে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গত কয়েকদিনে সারা দেশে অর্ধশতাধিক গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় উত্তাপ ছড়ায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে তারা সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।





