হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণে নৌবাহিনীর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চট্টগ্রাম বন্দর

দেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথে পণ্য পরিবহনে গতি আনতে এবং বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে গত বুধবার একটি সমঝোতা স্মারক ও একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। ঢাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত পৃথক দুই অনুষ্ঠানে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একক পরিচালনায় বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে ও লালদিয়া–২ অঞ্চলে বিশেষায়িত হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণের কাজ বাস্তবায়নে নৌবাহিনীর সাথে চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে যৌথভাবে পরিচালনাধীন পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল ও এর ৪৮.২৪ একর জায়গা প্রচলিত পদ্ধতিতে লিজ নিয়ে পুরোপুরি এককভাবে পরিচালনা করবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর ২০৩৫ পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ে ১০ বছরের জন্য বন্দরকে লাইসেন্স প্রদান করা হবে, যা বার্ষিক নবায়নের ভিত্তিতে চলবে। তবে সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী মোট ৩০ বছর কার্যকর থাকবে চুক্তির মেয়াদ। এ সময়কালে বন্দর কর্তৃপক্ষ পানগাঁও কনটেইনার টার্মিনাল এককভাবে পরিচালনা করবে।
আরও পড়ুন: ফেনীতে মেয়াদোত্তীর্ণ ঔষধ ও লাইসেন্স না থাকায় ২ ফার্মেসিকে জরিমানা
পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল (আইসিটি) চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একক পরিচালনায় বিআইডব্লিউটিএ’র সাথে সমঝোতা স্মারক
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ৯৫ শতাংশ মালামাল বর্তমানে সড়ক পথে পরিবাহিত হয়, ফলে সড়কের উপর অতিরিক্ত চাপ এবং পরিবহন ব্যয় বাড়ছে। পানগাঁও আইসিটিকে চট্টগ্রাম বন্দরের ব্যবস্থাপনায় এককভাবে চালনার মাধ্যমে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী নদীপথ পরিবহন জনপ্রিয় হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি এখানে একটি ফ্রি কটন জোন গড়ে তোলা হবে, যা ব্যবসা–বাণিজ্যের সমপ্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফেনীর দাগনভূঞায় ১শ কেজি পলিথিন জব্দ, ৩ ব্যবসায়ীকে জরিমানা
পৃথক অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সাথে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হেভি লিফট কার্গো জেটি নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রকল্পটি “অর্পিত ক্রয়কার্য হিসেবে” বাংলাদেশ নৌবাহিনীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। জেটিটি লালদিয়া-২ অঞ্চলে নির্মিত হবে এবং এর দৈর্ঘ্য হবে ২৪০ মিটার।
চট্টগ্রাম বন্দরে এতদিন ভারী শিল্পজাত কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের জন্য বিশেষায়িত কোনো জেটি ছিল না। এনসিটি বার্থ নং–৫ সাময়িকভাবে ব্যবহার করা হলেও সেটি মূলত কনটেই্নার হ্যান্ডলিংয়ের জন্য নির্মিত হয়েছিল। নতুন জেটিটি প্রতি বর্গমিটারে ৫ টন ভার বহন করতে সক্ষম হবে, যেখানে এনসিটি বার্থ নং–৫ এ এই সক্ষমতা ছিল মাত্র ৩ টন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বন্দর ব্যবহারকারীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে এবং শিল্পোন্নয়নেও গতি আসবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠিত দুটি অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পক্ষে রিয়ার এডমিরাল (অব.) আনোয়ার হোসেন, বিআইডব্লিউটিএ চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা এবং বন্দরের সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশীদসহ সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক, উপ–প্রকল্প পরিচালক ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।